টাকার অভাবে চিকিৎসা বন্ধ অগ্নিদগ্ধ কল্পনার
মৃত্যুর প্রহর গুনছেন লালমনিরহাটে আগুন পোহাতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা কল্পনা আক্তার (২০)। টাকার অভাবে হাসপাতাল থেকে বাবার বাড়িতে মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন তিনি।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের কোদালখাতা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তিনি ওই গ্রামের রুবেল মিয়ার স্ত্রী।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্র জানায়, দেড় বছর আগে কল্পনার সঙ্গে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। পাঁচ মাস আগে কল্পনার গর্ভে সন্তান আসে। চলমান শৈত্যপ্রবাহে শীত নিবারণের জন্য বৃহস্পতিবার দুপুরে চুলার পাশে আগুন পোহাতে বসেন কল্পনা। এ সময় অসাবধানতাবশত তার পরনের কাপড়ে আগুন লেগে যায়। এতে তার শরীরের ৭০ শতাংশ পুড়ে যায়।
তাৎক্ষণিক তাকে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রংপুরে নিয়ে যেতে বলেন। ওইদিন বিকেলে কল্পনাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করান।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বার্ন ইউনিটের চিকিৎসকরা জানান, কল্পনার শরীরের ৭০ শতাংশ পুড়ে গেছে। লম্বা সময় ধরে নিবিড় পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে কল্পনার চিকিৎসা করা না গেলে তাকে ও তার গর্ভের সন্তানকে বাঁচানো সম্ভব হবে না।
রুবেল মিয়া স্ত্রীর ব্যয়বহুল এ চিকিৎসা করাতে না পেরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে নিয়ে আসেন বাড়িতে। বর্তমানে কল্পনা তার বাবার বাড়ি সদর উপজেলার মোঘলহাট ইউনিয়নের ফুলগাছ গ্রামে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন।
কল্পনার স্বামী রুবেল বলেন, ‘আমি দিনে এনে দিনে খাওয়া মানুষ। সামান্য যে টাকা জমানো ছিল সেটি রংপুর যাওয়া-আসায় শেষ হয়ে গেছে। নিকটাত্মীয়দের কাছে ধার চেয়েও পাচ্ছি না।’
ভুক্তভোগী কল্পনা আক্তার বলেন, ‘আমি বাঁচতে চাই। আমার সন্তানকে পৃথিবীর আলো-বাতাস দেখাতে চাই। এ সময় কল্পনা সমাজের বিত্তশালীদের কাছে আর্থিক সাহায্যের জন্য আকুতি জানান।
লালমনিরহাটের সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু রায় বলেন, এরকম অবস্থায় মা-সন্তান দুজনই মৃত্যুঝুঁকিতে রয়েছেন। বিশেষায়িত হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে তার চিকিৎসা হওয়া দরকার।
রবিউল হাসান/আরএইচ/এমএস