হবিগঞ্জে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ৪
হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশার স্ট্যান্ড দখল নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আরও একজন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। সিলেটে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। এ নিয়ে নিহতের সংখ্যা দাঁড়ালো চারজনে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অর্ধশত।
নিহতরা হলেন অটোরিকশাচালক আব্দুল কাদির (২৫), সিএনজি স্ট্যান্ডের ম্যানেজার সিরাজ মিয়া (৫০), লিলু মিয়া (৫০) ও তার ভাই আনু মিয়া (৫২)।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বানিয়াচং সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ রঞ্জন দে জানান, উপজেলার আগুয়া গ্রামটি সম্পূর্ণ হাওরাঞ্চল। যাতায়াত ব্যবস্থা খুবই নাজুক। এখানে সিএনজি স্ট্যান্ডে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করেছে। তবে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

তিনি আরও বলেন, হাঙ্গামাকারীদের ধরতে অভিযান শুরু হয়েছে। ঘটনাস্থলে বিপুল পরিমাণ পুলিশ মোতায়েন আছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার আগুয়া গ্রামের বাসিন্দা সিএনজি স্ট্যান্ড ম্যানেজার বদির মিয়া ও অটোরিকশাচালক আব্দুল কাদিরের মধ্যে স্ট্যান্ডে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। বৃহস্পতিবার ওই গ্রামের বাজারে সিএনজি অটোরিকশার স্ট্যান্ড দখলকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এসময় ম্যানেজার বদির মিয়া অটোরিকশাচালক আব্দুল কাদিরকে মারধর করেন। বিষয়টি কাদিরের গোষ্ঠীর লোকদের মধ্যে জানাজানি হলে তারা তাৎক্ষণিক জড়ো হতে থাকেন।

অন্যদিকে, খবর পেয়ে বদির মিয়ার গোষ্ঠীর লোকজনও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জড়ো হন। একপর্যায়ে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উভয়পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। মুহূর্তের মধ্যে সংঘর্ষ পুরো গ্রামে ছড়িয়ে পড়লে এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। যোগ দেন নারীরাও। সংঘর্ষে কাদির ও তার পক্ষের সিরাজ মিয়া ঘটনাস্থলেই মারা যান। হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান তাদের পক্ষের লিলু মিয়া। সিলেট নেওয়ার পথে মারা যান নিহত লিলু মিয়ার ভাই আনু মিয়া।
সংঘর্ষে ঘটনাস্থলে দুজন নিহতের পর পরিস্থিতি আরও ভয়ানক আকার ধারণ করে। হাঙ্গামাকারীরা বাড়িঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট চালান। প্রায় এক ঘণ্টা স্থায়ী সংঘর্ষে আহত হন অন্তত ৫০ জন। খবর পেয়ে বানিয়াচং থানা ও হবিগঞ্জ থেকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সৈয়দ এখলাছুর রহমান খোকন/এসআর/এমএস