ডাকাতিকালে প্রবাসীর স্ত্রীকে গলাকেটে হত্যা, পুত্রবধূ ছুরিকাহত

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ঝিনাইদহ
প্রকাশিত: ১২:২৫ পিএম, ২৪ মে ২০২৪

ঝিনাইদহে ডাকাতির সময় ফাতেমা বেগম (৪০) নামে এক প্রবাসীর স্ত্রীর গলা কেটে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এসময় ওই প্রবাসীর পুত্রবধূ বিথি খাতুনকেও গলা কেটে হত্যার চেষ্টা করা হয়।

শুক্রবার (২৪ মে) ভোরে সদর উপজেলার খালকুলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

আহত বিথি খাতুনকে প্রথমে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে, বিথির লেখা চিরকুটের ভিত্তিতে সাগর (২৯) ও সুশান্ত (৪০) নামের দুই রাজমিস্ত্রীকে আটক করেছে পুলিশ। সাগরের বাড়ি পাশ্ববর্তি দুর্গাপুর গ্রামে এবং সুশান্তর বাড়ি পাশ্চিম ঝিনাইদহে।

ডাকাতিকালে প্রবাসীর স্ত্রীকে গলাকেটে হত্যা, পুত্রবধূ ছুরিকাহত

স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিনের মতো রাতে পুত্রবধূকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিল ফাতেমা বেগম। রাতের কোনো একসময় বেলকুনির গ্রিল কেটে ডাকাত দল অস্ত্র নিয়ে ঘরে ঢোকে। এরপর ধারালো অস্ত্রের মুখে তাদের জিম্মি করে টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুটের চেষ্টা করে।

এসময় তারা ডাকাতদের বাধা দিলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রথমে ফাতেমাকে খাটের উপরেই গলা কেটে হত্যা করে। পরে বিথির গলা কেটে মৃত ভেবে চলে যায়। ভোর হতেই ঘরের দরজা ভেঙে বিথি প্রতিবেশী ওবায়দুরের বাড়ির উঠানে গিয়ে পড়ে যায়। সেসময় বাড়ির লোকজন টের পেয়ে তাকে রক্তাক্ত দেখে কি হয়েছে জানতে চাইলে সে কাগজে (চিরকুটে) লেখে জানায় বাড়িতে কাজ করা রাজমিস্ত্রীরা ডাকাতির জন্য তার শাশুড়িকে হত্যা করেছে এবং তাকে হত্যার চেষ্টা করে।

প্রতিবেশী ওবায়দুর জানায়, আযানের পর বাড়ির পাশেই ছিলাম। বিথি হঠাৎ এসে উঠানে পড়ে যায়। সেসময় বাড়ির নারীরা তাকে রক্তাক্ত দেখে চিৎকার করে। তখন আমি কাছে গিয়ে দেখি বিথি পড়ে আছে। তাকে বলি কি হয়েছে। কিন্তু গলা কাটা থাকায় সে ঈশারা করে কাগজ দিতে বলে।

তিনি আরও জানান, কাগজে (চিরকুটে) লেখে ‘ ওরা মনে করেছে আমিও মারা গেছি। কান ফুটানো। আমি চিনি ফজলু মামার মিস্ত্রী আমার হাত পা বাদিল’।

ডাকাতিকালে প্রবাসীর স্ত্রীকে গলাকেটে হত্যা, পুত্রবধূ ছুরিকাহত

সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর আবিদুর রহমান জানায়, দস্যুতার কারণে এবং তাদের চিনে ফেলায় এ ঘটনা। বিথির লেখা চিরকুটের তথ্যের ভিত্তিতে দুইজনকে আটক করা হয়েছে, উদ্ধার করা হয়েছে হত্যায় ব্যবহৃত দা। আটকরা ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশ সুপার আজিম-উল-আহসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল মীর আবিদুর রহমান, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন উদ্দিনসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তারা।

এদিকে, সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. তাপস কুমার বিশ্বাস জানান, বিথিরও গলা অনেকটাই কেটে গেছে এবং হাতেও হালকা ক্ষত আছে। তার অবস্থাও আশংকাজনক। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে রেফার্ড করা হয়েছে।

আব্দুল্লাহ আল মাসুদ/এএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।