সৌম্য সরকারের বন্ধুদের দিন কাটছে যেভাবে
সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা মশিয়াডাংগা গ্রামের ছেলে সৌম্য সরকার এখন তারকা ক্রিকেটার। জাতীয় দলের ওপেনিং ব্যাটসম্যান।
ছোট বেলায় একসঙ্গে খেলাধূলা করে বড় হয়ে উঠা বন্ধুদের মধ্যে একমাত্র সৌম্য সরকারই সফল। পৌঁছাতে পেরেছে তার স্বপ্নের ঠিকানায়। বাকিরা এখনও খেলাধূলার মধ্যেই রয়েছেন। তবে জেলা ভিত্তিক বিভিন্ন টিমের হয়ে ফাইভ স্টার বলে খেলেন তারা।
কেউবা খেলাধূলার পাশাপাশি করছেন ব্যাবসা। তবে বন্ধু সৌম্য সরকারের সাফল্যে তারা খুশি এবং উজ্জীবিত। আন্তর্জাতিক ম্যাচে সৌম্যের খেলাগুলো বাকি বন্ধুরা একসঙ্গেই বসে দেখেন। বন্ধু, দেশের মুখ আরও উজ্জ্বল করবে এভাবেই জাগো নিউজের কাছে নিজের অভিব্যক্তি ব্যক্ত করেন সৌম্য সরকারের সব থেকে কাছের বন্ধু সাতক্ষীরা শহরের লস্কর পাড়া এলাকার মাহবুব সরদার।
তার কাছ থেকেই জানা যায়, সৌম্য সরকারের বেড়ে উঠার গল্প। সদা হাস্যোউজ্বল সৌম্য সরকারের বন্ধুদের মধ্যে হাফিজুল ইসলাম, ইয়াকুব ও ফরহাদ অন্যতম। এক সঙ্গেই বেড়ে উঠা তাদের। তবে খুব বেশি দিন সৌম্য সরকারকে কাছে পায়নি তারা। বাবা কিশোরী মোহন সরকার ছিলেন সাতক্ষীরা সরকারি বালক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। এই বিদ্যালয় থেকেই ৬ষ্ঠ শ্রেণি পাশ করার পর সৌম্য সরকার চলে যায় ঢাকায়। সেখানে গিয়ে ভর্তি হয় বিকেএসপি ক্লাবে। নতুনভাবে খেলাধূলা শুরু করে সেখানে। তবে সাতক্ষীরা ত্যাগের পূর্বে গণমূখী ক্লাবের হয়ে খেলতেন সৌম্য সরকার।
সৌম্যের বন্ধু হাফিজুল ইসলাম এখনও খেলাধূলা ছাড়েননি। সাতক্ষীরার বিভিন্ন ক্লাবের হয়ে খেলছেন ফাইভ স্টার বলে। পাশাপাশি শহরের অদূরে বিনেরপোতা বাজারে বরফের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে তার। ইয়াকুব ও ফরহাদও খেলছেন ফাইভ স্টার বলে।
সাতক্ষীরায় থাকাকালে সৌম্য সরকার যে ক্লাবের হয়ে খেলেছেন সে ক্লাবে এখন প্রশিক্ষণ নিচ্ছে চার শতাধিক প্রশিক্ষণার্থী। তাদের কাছ থেকে মাসিক চারশত টাকা করে নেয় কোচ আলতাফ হোসেন।
তবে জাগো নিউজকে সৌম্য সরকারের বন্ধুদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তথ্য দিতে রাজি হননি। তিনি বলেন, খুব বেশিদিন সৌম্য এখানে খেলা করেনি। বন্ধুদের খোঁজ নিয়ে কি করবেন।
শহরের মেঠো পাড়ায় সৌম্য সরকারের বাড়িতে গিয়ে দেখা হয় সৌম্য সরকারের মেঝো ভাই পুষ্পেন সরকারের। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, পরিবারের সঙ্গে প্রতিদিনই কথা হয় সৌম্যের। অনেক দিন পর সৌম্য ম্যাচে রান করতে পেরেছে। তার জন্য দোয়া করবেন।
সৌম্যের বাবা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কিশোরী মোহন সরকার জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে জানান, ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ার চেয়ে খেলাধূলার প্রতি বেশি আগ্রহ ছিল সৌম্যের। এজন্য তাকে ঢাকার বিকেএসপি ক্লাবে ভর্তি করি। সেখানেই খেলাধূলার অনুশীলন চালাতো। আমাদের পরিবারের সর্বাত্মক সহায়তা ছিল তার খেলাধূলার প্রতি। এখন সে দেশের হয়ে খেলছে, খুব ভালো লাগে। যখন টিভির পর্দায় বসে খেলা দেখি। রাস্তায় বের হলে সবাই বলে ওই যে সৌম্য সরকারের বাবা। তখন গর্বে বুকটা ভরে যায়। সন্তান ভালো কিছু করলে প্রত্যেক মা-বাবারই গর্বে বুক ভরে যায়।
তিনি আরও বলেন, যখন ভালো খেলে তখন খুব ভালো লাগে আর যখন খারাপ খেলে তখন বিমর্ষ হয়ে পড়ি।
বাবা হিসেবে তার চাওয়া কি জাগো নিউজের প্রতিউত্তরে তিনি বলেন, ভালো খেলে দেশের জন্য গৌরব বয়ে আনুক এটাই আমি চাই।
এমএএস/এবিএস