ব্যাংকের ভল্ট থেকে ৭৫ লাখ টাকা নিয়ে উধাও ক্যাশিয়ার, দুদকের মামলা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি চাঁদপুর
প্রকাশিত: ০৯:৪০ এএম, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

চাঁদপুরে অগ্রণী ব্যাংকের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যাংকের ভল্ট থেকে ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেছে দুদক। অভিযুক্ত ওই কর্মকর্তার নাম দীপঙ্কর ঘোষ। তিনি ব্যাংকের মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর বাজার শাখার ক্যাশ কর্মকর্তা।

সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুদক চাঁদপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আজগর হোসেন বাদী হয়ে এ মামলা করেন। ঘটনার পর থেকে তার খোঁজ মেলেনি।

মামলার বিবরণে বলা হয়, অগ্রণী ব্যাংকের ছেংগারচর বাজার শাখার ব্যবস্থাপক মো. ইউসুফ মিয়া টাকা আত্মসাতের ঘটনায় মতলব উত্তর থানায় অভিযোগ করেন। অভিযোগের রেকর্ডপত্র থানা থেকে পাঠানো হয় দুদক কার্যালয়ে। অভিযোগের প্রেরিত রেকর্ডপত্র তথ্যাদির আলোকে দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে মামলার অনুমোদন দেওয়া হয়।

মামলার বাদি বলেন, মামলার রেকর্ডপত্র ও তথ্যাদির পর্যালোচনা করে অগ্রণী ব্যাংক ছেংগারচর বাজার শাখার অফিসার (ক্যাশ) দীপঙ্কর ঘোষ কর্তৃক ব্যাংকের ভল্টে রক্ষিত ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করে দণ্ডবিধির ৪০৯ ও ৪২০ ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

এর আগে গত বছর ১ সেপ্টেম্বর ওই ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মতলব উত্তর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, অগ্রণী ব্যাংক ছেংগারচর বাজার শাখার অফিসার (ক্যাশ) হিসেবে কর্মরত ছিলেন দীপংকর ঘোষ। গত ২৯ আগস্ট দীপংকর ঘোষ ব্যাংকে না এলে তার মুঠোফোনে কল করলে তিনি জানান, তার বাবা অসুস্থ, তাই আসতে দেরি হবে। কিন্তু পরে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ব্যাংকে তিনি না এলে পুনরায় দীপংকরকে ফোন করলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

ওইদিন তার স্ত্রী আঁখি সাহাকে ফোন করলে তিনি জানান, দীপংকর অফিসের উদ্দেশে ঢাকার বাসা থেকে বের হয়ে গেছেন।

সেদিন বিকেলেও দীপংকর ব্যাংকে উপস্থিত হননি। ফলে ব্যাংকের ভল্ট খোলা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে তার আচরণ সন্দেহজনক হলে ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।

চাঁদপুরে অগ্রণী ব্যাংকের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যাংকের ভল্ট থেকে ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেছে দুদক

শাখা ব্যবস্থাপক মো. ইউসুফ মিয়া বলেন, দীপংকর ঘোষের সঙ্গে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হই। পরে ব্যাংকের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা এবং ব্যাংকের ভল্টের থাকায় নগদ টাকা পরিমাণ যথাযথ আছে কি না তা যাচাইয়ের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরামর্শে গত ৩০ আগস্ট মতলব উত্তর থানার একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। ১ সেপ্টেম্বর থানায় অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও পুলিশের উপস্থিতিতে মিস্ত্রি দ্বারা ভল্টের গ্রিল কাটা হয়। এসময় চাঁদপুরের প্রধান শাখায় রক্ষিত ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে ভল্ট খোলা হয়। পরে গণনা করে ভল্টে ২৭ লাখ ৭৯ হাজার ৬৮ টাকা ৭১ পয়সা পাওয়া যায়।

ব্যাংকের ক্যাশ পজিশন অনুযায়ী এক কোটি দুই লাখ ৯৯ হাজার ৬৮ টাকা ৭১ পয়সা ছিল। হিসেব অনুযায়ী গণনাকালে ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা কম পাওয়া যায়।

মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, দীপংকর ঘোষ গত কিছুদিন কাঁধে একটি ব্যাগ নিয়ে আসা-যাওয়া করেছেন। ক্যাশ অফিসার হওয়ায় ভল্টের একটি চাবি তার কাছে রক্ষিত ছিল। কৌশলে তিনি টাকা আত্মসাৎ করেন।

শরীফুল ইসলাম/এফএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।