শেয়ারবাজার এবার টেনে নামালো মিউচুয়াল ফান্ড

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:০১ পিএম, ০৭ এপ্রিল ২০২৫

ঈদের পর প্রথম কর্যদিবস রোববার (৬ এপ্রিল) শেয়ারবাজারে ঢালাও দরপতন হলেও প্রায় সবকটি মিউচুয়াল ফান্ডের দাম বাড়ে। এতে বড় পতনের হাত থেকে রক্ষা পায় শেয়ারবাজার। তবে একদিন পরই সোমবার (৭ এপ্রিল) সেই মিউচুয়াল ফান্ডই শেয়ারবাজার টেনে নামিয়েছে। মিউচুয়াল ফান্ডের ভূমিকার কারণেই আবারও শেয়ারবাজারে দরপতন হয়েছে।

ঈদ উপলক্ষে টানা ৯ দিনের ছুটি শেষে রোববার (৬ এপ্রিল) থেকে দেশের শেয়ারবাজারে আবার লেনদেন শুরু হয়েছে। ঈদের পর প্রথম কার্যদিবসে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ে, তার আড়াই গুণ বেশি প্রতিষ্ঠানের দাম কমে।

এই দরপতনের মধ্যেও ৩৭টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৩৩টির দাম বাড়ে, বিপরীতে দাম কমে মাত্র দুটির। পতনের বাজারে মিউচুয়াল ফান্ড দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখানোর ফলে বড় পতনের হাত থেকে রক্ষা পায় শেয়ারবাজার।

এ পরিস্থিতিতে সোমবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুর দিকে সূচকের মোটামুটি বড় উত্থান হয়। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টা সূচকের ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত থাকে।

কিন্তু দুপুর ১২টার পর বাজারের চিত্র বদলে যেতে থাকে। বিশেষ করে দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক মিউচুয়াল ফান্ড পতনের তালিকায় চলে আসে। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে এই ধারা। মিউচুয়াল ফান্ডের এই দরপতনের প্রভাব অন্য খাতেও পড়ে। ফলে সার্বিক বাজারে দাম কমার তালিকা বড় হয়।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সবখাত মিলে ১৫০টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেরেছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৯১টির। আর ৫৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অন্যদিকে ৩৭টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে মাত্র ৬টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৩টির। বাকি ৮টির মধ্যে একটি লেনদেন হয়নি, অন্য ৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এদিকে, ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৮৬টির শেয়ার দাম বেড়েছে এবং ১০৬টির দাম কমেছে। আর ২৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ৩৪টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ৪১টির দাম কমেছে এবং ৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

অন্যদিকে, বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে পঁচা ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৩০টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৪টির এবং ২১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

ভালো-মন্দা সব খাতের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৮ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ১৯৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৬৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। তবে বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়েগঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯৩০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

প্রধান মূল্যসূচক কমলেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৬৯ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪১৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ৫৪ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।

এ লেনদেনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ৩৩ কোটি ২৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেক্সিমকো ফার্মার শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকার। ১৬ কোটি ৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে শাইনপুকুর সিরামিক।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- এসিআই লিমিটেড, স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যালস, ওরিয়ন ইনফিউশন, ইস্টার্ন হাউজিং, ইন্ট্রাকো রি-ফুয়েলিং, আরডি ফুড এবং অগ্নি সিস্টেম।

অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে দশমিক ৭৯ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২১০ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮৭টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৯৭টির এবং ২৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১০ কোটি ১৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১০ কোটি ৬২ লাখ টাকা।

এমএএস/এমকেআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।