বেক্সিমকো সুকুক অনিয়ম

শিবলী রুবাইয়াতকে পুঁজিবাজারে আজীবন অবাঞ্ছিত ঘোষণা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:৫০ পিএম, ৩০ জুলাই ২০২৫

বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি লিমিটেডের (বেক্সিমকো) তিন হাজার কোটি টাকার পাঁচ বছর মেয়াদি ‘বেক্সিমকো গ্রিন সুকুক আল-ইস্তানা’ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে আজীবনের জন্য পুঁজিবাজারে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে।

বুধবার (৩০ জুলাই) বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কমিশন সভা শেষে বিএসইসি পরিচালক ও মুখপাত্র মো. আবুল কালাম এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি জানান, বেক্সিমকোর তিন হাজার কোটি টাকার গ্রীন সুকুকের প্রস্তাব ২০২১ সালের ২৩ জুন অনুষ্ঠিত কমিশনের ৭৭৯তম সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রস্তাবিত গ্রীন সুকুকটি ২ হাজার ২৫০ কোটি প্রাইভেট প্লেসমেন্টের (৭৫০ কোটি বিদ্যমান শেয়ারহোল্ডারদের কাছ থেকে এবং ১ হাজার ৫০০ কোটি বিদ্যমান শেয়ারহোল্ডার ব্যতীত অন্য বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে) মাধ্যমে এবং ৭৫০ কোটি প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে ইস্যুর জন্য অনুমোদিত হয়।

এই সুকুকের মাধ্যমে উত্তোলিত অর্থ বেক্সিমকো লিমিটেডের টেক্সটাইল ইউনিটের কার্যক্রম বর্ধিত করা এবং এর দুটি সাবসিডিয়ারি নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প তিস্তা সোলার লিমিটেড ও করতোয়া সোলার লিমিটেডে ব্যবহার করে পরিবেশ উন্নয়ন ও সংরক্ষণের কথা ছিল।

সুকুকের প্রতিটি ইউনিটের অভিহিত মূল্য ছিল ১০০ টাকা এবং ন্যূনতম সাবসক্রিপশন মূল্য ছিল ৫ হাজার টাকা। সুকুকের অরিজিনেটর হিসেবে বেক্সিমকো, ইস্যুয়ার বা ট্রাস্টবা এসপিভি হিসেবে বেক্সিমকো গ্রীন সুকক আল-ইস্তানা, ট্রাস্ট্রি হিসেবে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ, ইস্যু ম্যানেজার হিসেবে সিটি ব্যাংক ক্যাপিটাল রিসোর্ট লিমিটেড ও অগ্রণী ইক্যুইটি অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড, নিরীক্ষক হিসেবে এম.জে. আবেদিন অ্যান্ড কো. চাটার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট এবং ক্রেডিট রেটিং প্রদানকারী হিসেবে ইমার্জিং ক্রেডিট রেটিং লিমিটেড (ইসিআরএল) দায়িত্ব পালন করেছে।

আবুল কালাম জানান, সংশ্লিষ্ট বিধিমালার কতিপয় বিধি থেকে বেক্সিমকোকে কমিশন থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। কিন্তু ওই অব্যাহতি প্রজ্ঞাপন সরকারি গেজেটে প্রকাশ হওয়ার আগেই সুকুকটি ইস্যুর আবেদন ২০২১ সালের ২৩ জুন কমিশন থেকে অনুমোদিত হয় এবং কমিশন থেকে ২০২১ সালের ৮ জুলাই সম্মতি পত্র বা কনসেন্ট লেটার ইস্যু করা হয়।

পরবর্তী সময়ে বিধিবহির্ভূতভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে এই সুকুকের পাবলিক সাবসক্রিপশন পিরিয়ড ২০২১ সালের ২৩ আগস্ট (বিধিমোতাবেক সর্বশেষ সাবসক্রিপশনের পিরিয়ড) থেকে ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এ বিষয়ে ‘পুঁজিবাজার অনুসদ্ধান ও তদন্ত কমিটি’ অনুসন্ধান ও তদন্ত পরিচালিত হয়েছে এবং এর প্রতিবেদন কমিশনে জমা হয়েছে। এর ভিত্তিতে বিএসইসির কমিশন সভায় দুটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে-

>> বিএসইসির তৎকালীন চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে পুঁজিবাজারে আজীবন অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা এবং তৎকালীন কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদকে ৫ বছরের জন্য পুঁজিবাজারে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা।

>> বেক্সিমকো সিকিউরড কনভার্টেবল বা রিডিমেবল অ্যাসেট-ব্যাকড গ্রিন সুকুকের ওপর ‘পুঁজিবাজার অনুসদ্ধান ও তদন্ত কমিটি’র পরিচালিত অনুসন্ধান ও তদন্তের অতিরিক্ত কমিশন থেকে তদন্ত করে বেক্সিমকো সিকিউরড কনভার্টেবল বা রিডিমেবল অ্যাসেট-ব্যাকড গ্রিন সুকুক সংশ্লিষ্ট অনিয়ম ও বিধিবিধান ভঙ্গের সঙ্গে জড়িত সবার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ।

এমএএস/এমকেআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।