এমআইওবির দাবি

ফোনে এনইআইআর বাস্তবায়নে বাড়বে রাজস্ব, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:২৪ পিএম, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এমআইওবির সংবাদ সম্মেলন/ছবি: সংগৃহীত

মোবাইল ফোন খাতে নিরাপত্তা ও বৈধতা নিশ্চিত করতে এনইআইআর (ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার) ব্যবস্থা চালুর আহ্বান জানিয়েছে মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এমআইওবি)। সংগঠনটির দাবি, এ ব্যবস্থা চালু হলে সরকার প্রতি বছর হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব পাবে, দেশে বাড়বে বিদেশি বিনিয়োগ ও তৈরি হবে নতুন কর্মসংস্থান।

এমআইওবি সোমবার (৮ ডিসেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানায়।

সংগঠনের সভাপতি জাকারিয়া শহিদ বলেন, এনইআইআর আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নিরাপত্তাব্যবস্থা। বহু দেশেই এটি কার্যকর রয়েছে। বাংলাদেশে তা চালু হলে অবৈধ, চোরাই, কপি বা রিফারবিশড (মেরামত করা) ফোন বাজার পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসবে। একই সঙ্গে বন্ধ হবে একই আইএমইআই নাম্বার ব্যবহার করে ডজনখানেক ফোন চলার মতো নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি।

তিনি জানান, বর্তমানে লাগেজ বা ‘পার্টি’ করে আনা বিপুলসংখ্যক ফোন বাজারে ছাড়া হয়, যার ওপর কোনো ট্যাক্স দেওয়া হয় না, না থাকে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) অনুমোদন। পুরো প্রক্রিয়াটিই দেশের আইনবহির্ভূত। এসব কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বৈধ ব্যবসায়ীরা এবং বাধাগ্রস্ত হচ্ছে সরকারের রাজস্ব অর্জন।

এমআইওবি সভাপতি বলেন, এনইআইআর বাস্তবায়ন হলে অবৈধ ফোন নেটওয়ার্কে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে, চুরি বা হারানো ফোন শনাক্তে সহায়তা করবে, ব্যক্তিগত তথ্য ও ডেটার সুরক্ষা আরও শক্তিশালী হবে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজে গতি আসবে। এছাড়া সরকার প্রতি বছর প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব পাবে, যা বর্তমানে গ্রে মার্কেটে হারিয়ে যাচ্ছে।

আরও পড়ুন
এনইআইআর সংস্কারে রাজি বিটিআরসি, মোবাইল ব্যবসায়ীদের অবরোধ স্থগিত
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে এনইআইআর নীতিমালা পরিবর্তন করা হবে: আমীর খসরু

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম বিপ্লব জানান, বাংলাদেশে স্যামসাং, শাওমি, অপ্পোসহ ১৮টি মোবাইল কারখানা ফোন উৎপাদন করছে। গ্রে মার্কেট সক্রিয় থাকলে এসব কারখানা ক্ষতির মুখে পড়ে এবং বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান দুটিই কমে যায়। এনইআইআর বাস্তবায়ন হলে এসব শিল্প আরও সম্প্রসারিত হবে।

বিদেশি ফোনের ব্যবসায়ীরা ট্যাক্স কাঠামো কমানো এবং ফ্রিকোয়েন্সি লাইসেন্স ও বিটিআরসির এনওসি প্রক্রিয়া সহজ করার যে দাবি জানাচ্ছেন সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাজার উন্মুক্ত। যে কেউ নিয়ম মেনে ব্যবসায় আসতে পারে। সিন্ডিকেট নামে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা ভিত্তিহীন।

বিটিআরসির বরাত দিয়ে এমআইওবি সাধারণ সম্পাদক জানান, আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে এনইআইআর কার্যকর হবে। তার আগে নেটওয়ার্কে ব্যবহৃত সব বৈধ ও অবৈধ মোবাইল স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধিত হবে এবং সচল থাকবে। এরপর নতুনভাবে অনুমোদনহীন ফোন নেটওয়ার্কে কাজ করবে না।

তিনি বলেন, এনইআইআর কার্যকর হলে সমগ্র খাতে ইতিবাচক প্রভাব ও রাজস্ব বাড়বে। এতে দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে, বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে, নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে ও মোবাইল ইকোসিস্টেম আরও শক্তিশালী হবে। এনইআইআর শুধু নিরাপত্তার জন্য নয়, পুরো মোবাইল শিল্পকে টেকসই ও স্বচ্ছ করতে এটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এমআইওবির ইসি মেম্বার ইমাম উদ্দিন, রেজওয়ানুল হক, জিয়া উদ্দিন চৌধুরীসহ অন্যরা।

ইএআর/একিউএফ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।