ডিএসইতে চার মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন
দরপতনের সঙ্গে দেশের শেয়ারবাজারে লেনদেন খরা দেখা দিয়েছে। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। সেই সঙ্গে লেনদেন কমে প্রায় ৪ মাসের মধ্যে সব থেকে কম হয়েছে। তবে বেড়েছে প্রধান মূল্যসূচক।
ডিএসই’র মতো অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। ফলে বাজারটিতে মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।
এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুর দিকে সূচকের বড় উত্থান হয়। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ায় এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ৩২ পয়েন্ট বেড়ে যায়।
কিন্তু এরপর শেয়ারবাজারে ঢালাও দরপতন দেখা দেয়। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমে যাওয়ায় এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ১৭ পয়েন্ট কমে যায়। তবে লেনদেনের শেষ দিকে কিছু প্রতিষ্ঠান দরপতনের তালিকা থেকে বেরিয়ে আসে। এরপরও দাম কমার তালিকায় বেশি প্রতিষ্ঠান থেকেই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৫৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১৭৯টির। আর ৬৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১০৫টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৯২টির দাম কমেছে এবং ২৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ২০টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ৪৮টির দাম কমেছে এবং ১৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ২৯টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৯টির এবং ২৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর তালিকাভুক্ত ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ২০টির দাম কমেছে এবং ১২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এরপরও ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ১১৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৮৬ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯৬৭ পয়েন্টে উঠে এসেছে। তবে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৫ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
এদিকে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৪৪৪ কোটি ৫০ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪৮৭ কোটি ৬২ টাকা। এ হিসেবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৪৩ কোটি ১২ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে চলতি বছরের ২৫ জুনের পর ডিএসইতে সব থেকে কম লেনদেন হলো।
এই লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে সামিট এলায়েন্স পোর্টের শেয়ার। কোম্পানিটির ১৯ কোটি ৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৮ কোটি ২০ লাখ টাকার। ১৫ কোটি ৯১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ডমিনেজ স্টিল বিল্ডিং।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, খান ব্রদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, প্রগতি ইন্স্যুরেন্স, ওরিয়ন ইনফিউশন এবং সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ।
অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৩৬ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮২ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৩টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১০৬টির এবং ২৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৯ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১৪ কোটি ৪ লাখ টাকা।
এমএএস/এমআইএইচএস/জিকেএস