৫ জানুয়ারি ঘিরে উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় ব্যবসায়ীরা


প্রকাশিত: ০৬:০০ এএম, ০৪ জানুয়ারি ২০১৫

৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূর্তি। ক্ষমতাসীনরা দিনটি উদযাপন করবে ‘সংবিধান ও গণতন্ত্র রক্ষা দিবস’ হিসেবে। অন্যদিকে বিএনপি ৫ জানুয়ারি ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করার ঘোষণা দিয়েছে। দিনটিকে ঘিরে দেশের প্রধান দু’দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি আর মাঠ দখলের হুমকিতে হঠাৎ করে রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। যার ফলে ব্যবসায়ীদের মনে সৃষ্টি হয়েছে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা আর আতঙ্ক। গত এক বছর রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকলেও দিনটিকে ঘিরে আবারও রাজনীতি দীর্ঘ মেয়াদে অস্থিতিশীল হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি রাজনৈতিক সৃষ্ট সমস্যা সমাধানে সহিংস আন্দোলনে না গিয়ে সমঝোতা করা।

এ প্রসঙ্গে তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ গার্মেন্টস মেনুফ্যাকচার অ্যান্ড এক্সপোর্টস অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) এর সভাপতি আতিকুল ইসলাম জাগোনিউজকে বলেন, রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে তা ব্যবসা-বাণিজ্য অর্থ্যাৎ সমগ্র অর্থনৈতিক উন্নয়নের বাধার সৃষ্টি করে। রাজনৈতিক দলগুলো রাজনীতি করে দেশ ও অর্থনীতির জন্য। তাদের ভিন্ন ভিন্ন মত থাকতেই পারে। তবে এমন কোনো কর্মসূচি রাজনীতিকদের দেওয়া উচিত নয় যাতে করে অর্থনৈতিক ধারাকে ব্যাহত করে। বিশেষ করে গার্মেন্টস সেক্টরকে যেন রাজনৈতিক কর্মসূচির আওতার বাইরে রাখে। কারণ গার্মেন্টস সেক্টর যদি অস্থির হলে আমাদের অর্থনীতির জন্য খারাপ হবে।

আতিকুল ইসলাম, গত এক বছর দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় আমাদের গার্মেন্টস সেক্টর কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু নতুন করে রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠায় আমরা উদ্বেগ, উৎকণ্ঠায় রয়েছি।

বিজিএমইএ’র সভাপতি বলেন, আমরা ব্যবসায়ীরা স্বাভাবিক পরিবেশে ব্যবসা করতে চাই। তাই ব্যবসায়ী হিসেবে আমার প্রত্যাশা রাজনৈতিক সৃষ্ট সমস্যা সমাধানে দলগুলোর সহিংসতার দিকে না গিয়ে সমঝোতার ভিত্তিতে সমাধান করা।

মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এমসিসিআই) নবগঠিত পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি নাসিম মঞ্জুর বলেন, “ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে আবেদন করব- অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে রাজনীতি করুন। আমরা ২০১৩ সালের মতো কিছু চাই না। তিনি অর্থমন্ত্রীকে আন্দোলনরতদের আলোচনার টেবিলে নিয়ে আসার আহ্বান জানান।”

এ বিষয়ে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) এর সহ-সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন জাগোনিউজকে বলেন, রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হোক এটা আমরা চাই না। কারণ রাজনৈতিক অচলাবস্থা সৃষ্টি হলে তা অর্থনীতির ওপর প্রভাব পরে। আমরা আশা করছি রাজনৈতিক দলগুলো সহিংসতায় না গিয়ে সমঝোতার মাধ্যমে সমাধান করবে।

নিট অয়্যার রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিকেএমইএর সভাপতি সেলিম ওসমান বলেন, গত বছরের শুরুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি খারাপ থাকায় সার্বিক অর্থনীতির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তা কাটিয়ে উঠতে আমাদের অনেক সময় লাগছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতি যদি আবারও খারাপ হয়, তাহলে অর্থনীতির জন্য তা অশনিসংকেত হবে।

তিনি বলেন, আমাদের ব্যবসা বিদেশি ক্রেতাদের সঙ্গে। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি খারাপ হলে ক্রেতারা আমাদের পণ্য কিনতে চান না। তাই বছরের শুরুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হয়ে উঠলে সেখান থেকে বের হয়ে আসতে পারবেন না ব্যবসায়ীরা।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।