কর ফাঁকি দিলে ওপারে হিসাব দিতে হবে


প্রকাশিত: ০২:২৩ পিএম, ০৮ জানুয়ারি ২০১৭

কর না দিয়ে এনবিআরকে ঠকানো মানে বীরত্ব দেখানো না। কর ফাঁকি দিয়ে আমরা মনে করতে পারি ১৬ কোটি মানুষকে ঠকালাম। আসলে আমরা নিজেরাই ঠকে গেলাম। এ ফাঁকি দেয়ার জন্য এপারে না হলেও ওপারে আল্লাহর কাছে হিসাব দিতে হবে।

রোববার রাজধানীর কাকরাইল আইডিইবি ভবনে ভ্যাট অনলাইন প্রকল্প কার্যালয়ে ক্ষুদ্র্র ও মাঝারি পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের নিয়ে ‘মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২’ বিষয়ক এক কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম এসব কথা বলেন।

কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান। এ সময় এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সফিকুল ইসলাম বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।

মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, এনবিআরের রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় আমূল পরিবর্তন দেখে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। এনবিআরের বর্তমান নেতৃত্ব অংশীজনদের সহযোগিতা নিয়ে এগুচ্ছে। এটা অত্যন্ত ইতিবাচক। এনবিআর এবং করদাতা এখন পরস্পরের সক্রিয় পার্টনার এবং সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করে সর্বত্র নতুন উদাহরণ তৈরি করেছে।

তিনি আরো বলেন, রাজস্ব ব্যবসায়ীসহ দেশের জনগণের কাছে রাষ্ট্রের আমানত। রাষ্ট্রকে রাজস্ব না দিয়ে আমানতের খেয়ানত করলে পরপারে হিসাব দিতে হবে। জাকাত ধর্মীয় বিধান হলেও কর ধর্মীয় বিধান না। তবে ধর্মে বলা হয়েছে- যদি রাষ্ট্র কোনো আইনি দায়িত্ব দেয়া হয় তা পালন করতে হবে। আইনের একটি অংশে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রকে সঠিকভাবে কর প্রদান করতে হবে। ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মকর্তা, জনগণ সবাই আমানতদার। ব্যবসায়ীরা রাষ্ট্রকে সঠিকভাবে কর না দিলে মনে করতে পারেন ফাঁকি দিলাম।

তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়ন সূচকে ১৯৮টি রাষ্ট্রের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৭৬তম। ব্যবসার পরিবেশ সূচক উন্নয়ন করার জন্য আইন সহজীকরণ, হয়রানিমুক্ত সেবা প্রদান, জনবান্ধব অফিসে রূপান্তর ও ব্যবসায়ীদের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। এসব করতে পারলে ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়ন সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১০০ এর নিচে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে। সবাই চেষ্টা করলে আগামী ৫ বছরের মধ্যে এ সংখ্যা দুই সংখ্যায় নামিয়ে আনা সম্ভব।’

মো. নজিবুর রহমান বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তারা দেশের অগ্রগতিতে মূল ভূমিকা পালন করছেন। নতুন মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ বিষয়ে তাদের সম্যক ধারণা থাকা একান্ত অপরিহার্য। এ জন্য তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে এফবিসিসিআইয়ের সঙ্গে আমরা পার্টনারশিপ স্থাপন করেছি।

তিনি আরো বলেন, ‘নতুন মূসক আইন বাস্তবায়নে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অংশীদারিত্ব স্থাপন করা হচ্ছে। ধর্মীয় শিক্ষা গুরুরা হবে এ আইনের জনমত সৃষ্টিকারী প্রধান ব্যক্তি। মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান এ চার ধর্মের যারা শিক্ষাগুরু, ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ সবধর্মীয় প্রতিষ্ঠান যারা দেখাশুনা করেন তাদের ভ্যাটের পাশাপাশি আয়কর ও শুল্ক বিষয়েও প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। উন্নয়নের অক্সিজেন রাজস্ব। এ অক্সিজেন সরবরাহের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

নতুন মূসক আইন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এ আইনের বিষয়ে ব্যবসায়ীদের সব সুপারিশ সুবিবেচনায় এনে জাতীয় স্বার্থে যা যা করা দরকার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সবই করবে। অর্থমন্ত্রী শিগগিরই ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এ বিষয়ে বসবেন। নতুন ভ্যাট আইনের ক্ষেত্রে আমাদের স্লোগান হবে, ‘‘ভ্যাট আইন হবে পানির মতো স্বচ্ছ ও সহজ’’।’

এমএ/বিএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।