‘অযোগ্য’ ব্যক্তিকে সিইও হিসেবে চায় আলফা লাইফ


প্রকাশিত: ০৬:৫৪ এএম, ১৩ এপ্রিল ২০১৭

বীমা কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার প্রয়োজনীয় যোগ্যতা না থাকার পরও মো. আপেল মাহমুদকে এ পদে নিয়োগ দিতে আবেদন করেছে আলফা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স।

সম্প্রতি বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডআরএ) কাছে এ বিষয়ে একটি অভিযোগ জমা পড়েছে।

বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের একজন সিনিয়র কনসালটেন্ট ও একজন কর্মকর্তা আর্থিক সুবিধা পাওয়ার জন্য আপেল মাহমুদকে নিয়োগ দেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে আইডআরএ’র চেয়ারম্যান বরাবর করা ওই অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

আলফা ইসলামী লাইফের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষে করা অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালের ৯ সেপ্টেম্বর থেকে আলফা ইসলামী লাইফে নিয়মিত কোনো মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নেই। এ সময়ে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগে কোনো ব্যবস্থাও নেয়া হয়নি। সম্প্রতি আলফা ইসলামী লাইফের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা পদে মো. আপেল মাহমুদের নাম প্রস্তাব করে আইডিআরএ’র অনুমোদন চাওয়া হয়। কিন্তু বীমা কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ ও অপসারণ সংক্রান্ত প্রবিধান- ২০১২ অনুসারে আপেল মাহমুদ মুখ্য নির্বাহীর অব্যবহিত পরের পদে তিন বছর দায়িত্ব পালন করেননি।

এছাড়া আলফা ইসলামী লাইফে দায়িত্ব পালনকালে তার বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্য, অবৈধ কমিশন, আইডিআরএ’র নির্দেশনা অমান্য করে অনৈতিকভাবে প্রিমিয়াম সংগ্রহের অভিযোগ রয়েছে। ফারইষ্ট ইসলামী লাইফে চাকরিকালেও তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।

অভিযোগপত্র থেকে আরও জানা যায়, আপেল মাহমুদ আলফা ইসলামী লাইফে অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে নিয়োগ পান ২০১৫ সালের জুলাই মাসে। ওই বছরের অক্টোবর মাস থেকে তিনি কোম্পানিটির ভারপ্রাপ্ত মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

এর আগে তিনি ফারইষ্ট ইসলামী লাইফে ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও হেড অব সার্ভিসিং পদে কর্মরত ছিলেন। আপেল মাহমুদ ফারইষ্ট ইসলামী লাইফে চাকরি শুরু করেন ২০০৯ সালে সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে। ২০১৩ সালে তিনি ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবে পদোন্নতি পান। এর আগে তিনি হোমল্যান্ড লাইফে সহকারী ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে চাকরি করেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, সম্প্রতি আইডিআরএ’র কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা নানাভাবে সুবিধা নিয়ে ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে অযোগ্য ব্যক্তিদের বীমা কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে অবৈধভাবে নিয়োগ প্রদান করছে। এ ধরনের কার্মকাণ্ড বীমাখাতের উন্নয়নে অন্যতম বাধা হয়ে দাঁড়াবে।

এদিকে বীমা আইনের ৮০ (৪) ধারায় বলা হয়েছে, বীমা কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার পদ তিন মাসের বেশি শূন্য রাখা যাবে না। তবে অপরিহার্য পরিস্থিতি বিবেচনা করে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) এ সময় আরও তিন মাস বাড়াতে পারবেন। আইনের এ বিধান অমান্য করে প্রায় আড়াই বছর ধরে সিইও পদটি খালি রেখেছে আলফা ইসলামী লাইফ। তবে আইন লঙ্ঘন করলেও প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপই গ্রহণ করেনি নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ।

যোগাযোগ করা হলে আইডিআরএ’র চেয়ারম্যান পদে চলতি দায়িত্বে থাকা গকুল চাঁদ দাস জাগো নিউজকে বলেন, আমি দায়িত্ব নেয়ার পর এখনও কাউকে সিইও হিসেবে অনুমোদন দেয়নি। যদি কোনো অভিযোগ আসে তা যাচাই-বাছাই করে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া হবে। আইনের সব শর্ত পূরণ না করলে কাউকে সিইও হিসেবে অনুমোদন দেয়া হবে না।

অভিযোগের বিষয়ে জাগো নিউজের পক্ষ থেকে মো. আপেল মাহমুদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বলেন, ‘কে, কী অভিযোগ দিয়েছে তা আমি জানি না। যদি অভিযোগ পড়ে ভালো। তবে এ বিষয়ে আমি মোবাইলে কিছু বলব না, আপনি সরাসরি আমার কাছে আসেন, আমি তখন কথা বলব।’

এমএএস/এমএআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।