এআই ভিডিওতে ‘বিশ্বসেরা’, ইউটিউব চ্যানেলে বছরে আয় ৩৮ কোটি রুপি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:৫৭ পিএম, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫
এআই ভিডিওতে ‘বিশ্বসেরা’ হিসেবে উঠে এসেছে ‘বান্দর আপনা দোস্ত’ নামে ভারতীয় ইউটিউব চ্যানেল/ ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া স্ক্রিনশট

ভারতের একটি ইউটিউব চ্যানেল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে তৈরি ভিডিওর দুনিয়ায় বিশ্বজুড়ে ‘শীর্ষে’ উঠে এসেছে। ‘বান্দর আপনা দোস্ত’ নামের এই চ্যানেলটি বছরে আনুমানিক ৪ দশমিক ২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, অর্থাৎ প্রায় ৩৮ কোটি রুপি আয় করছে বলে জানিয়েছে একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিবেদন।

ভিডিও এডিটিং প্ল্যাটফর্ম ক্যাপউইংয়ের প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে ইউটিউবের এআই-নির্ভর কনটেন্ট নিয়ে বিস্তৃত বিশ্লেষণ করা হয়েছে। গবেষণায় বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ১৫ হাজার ইউটিউব চ্যানেল বিশ্লেষণ করা হয়। এতে দেখা গেছে, শত শত চ্যানেল পুরোপুরি ‘এআই স্লপ’ কনটেন্টে ভরা। এসব ভিডিও মূলত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি, যেখানে মানুষের অংশগ্রহণ খুবই সীমিত এবং গল্প বা মানসম্মত কনটেন্টের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় ভিউ বাড়ানোর দিকে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, মোট ২৭৮টি ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে, যেগুলো সম্পূর্ণভাবে এআই স্লপ কনটেন্ট তৈরি করে। এসব চ্যানেল মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ৬৩ বিলিয়ন বা ৬ হাজার ৩০০ কোটি বেশি ভিউ এবং ২২১ মিলিয়ন বা ২২ কোটি ১০ লাখ সাবস্ক্রাইবার অর্জন করেছে। অনলাইন কনটেন্ট তৈরির ক্ষেত্রে এটিকে একটি নতুন ও গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে দেখছেন গবেষকরা।

এই গবেষণায় সবচেয়ে বেশি ভিউ পাওয়া এআই স্লপ চ্যানেল হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে ভারতের ‘বান্দর আপনা দোস্ত’। চ্যানেলটিতে একটি মানবসদৃশ রিসাস প্রজাতির বানর এবং হাল্কের মতো শক্তিশালী এক পেশিবহুল চরিত্রকে নিয়ে অ্যানিমেটেড শর্ট ভিডিও তৈরি করা হয়। এসব ভিডিওতে হাস্যকর ও অদ্ভুত পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়। চ্যানেলটি ইতোমধ্যে ২.০৭ বিলিয়ন বা ২০৭ কোটিরও বেশি ভিউ এবং ২.৭৬ মিলিয়নের বেশি সাবস্ক্রাইবার অর্জন করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খুব কম খরচে তৈরি এই এআই কনটেন্ট কীভাবে বিশাল দর্শকপ্রিয়তা পেতে পারে, ‘বান্দর আপনা দোস্ত’ তার বড় উদাহরণ।

প্রযুক্তি ও ডিজিটাল অধিকারবিষয়ক গবেষক রোহিনী লক্ষ্মণ দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘বান্দর আপনা দোস্ত’-এর জনপ্রিয়তার পেছনে মূলত এর অদ্ভু গল্প, অতিরঞ্জিত পুরুষতান্ত্রিক চরিত্র এবং কোনো নির্দিষ্ট গল্প না থাকা বড় কারণ। এতে নতুন দর্শকদের জন্য কনটেন্টটি সহজে গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠে।

ক্যাপউইংয়ের বিশ্লেষণে আরও উঠে এসেছে, ইউটিউবে নতুন ব্যবহারকারীরা যেসব ভিডিওর সুপারিশ পাচ্ছেন, তার ২০ শতাংশের বেশি এআই স্লপ হিসেবে চিহ্নিত। এতে প্ল্যাটফর্মটির কনটেন্টের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

গবেষক ও শিল্প বিশ্লেষকদের মতে, এ ধরনের ব্যাপক হারে তৈরি এআই কনটেন্ট চিন্তাশীল ও সৃজনশীল নির্মাতাদের ভিডিওকে আড়ালে ঠেলে দিতে পারে। কারণ ইউটিউবের অ্যালগরিদম এখনো মৌলিকতা বা সৃজনশীলতার চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে দেখার সময় (ওয়াচ টাইম) ও এনগেজমেন্টে।

তবে এসব উদ্বেগের মাঝেও ‘বান্দর আপনা দোস্ত’-এর মতো চ্যানেলের সাফল্য দেখাচ্ছে, স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈরি এআই কনটেন্ট বিশ্বব্যাপী বিপুল দর্শক টানতে এবং উল্লেখযোগ্য রাজস্ব আয় করতে সক্ষম।

সূত্র: এনডিটিভি

এসএএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।