এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের সেবায় ১২ লাখ গ্রাহক

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:২৭ পিএম, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

দেশের সুবিধা বঞ্চিত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে ব্যাংকিং সুবিধা পৌঁছে দিতে চালু হয় এজেন্ট ব্যাংকিং। এজন্য বাড়তি চার্জও গুণতে হয় না গ্রাহককে। ফলে দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠায় এখন ব্যাংকগুলো এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে মনোযোগ দিচ্ছে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর শেষে এজেন্ট ব্যাংকিং হিসাব খুলেছেন ১২ লাখ ১৪ হাজার গ্রাহক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং বিষয়ে হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর পর্যন্ত এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেটের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংকের ১২ লাখ ১৪ হাজার ৩৬৭ জন গ্রাহক হিসাব খুলেছেন। এসব হিসাবে জমাকৃত অর্থের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৯৯ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। গত সেপ্টেম্বরে গ্রাহক ছিল ১০ লাখ ৩৮ হাজার ২৪২ জন এবং জমাকৃত অর্থের স্থিতি ছিল ৯২২ কোটি ৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ তিন মাসে হিসাব বেড়েছে এক লাখ ৭৬ হাজার এবং স্থিতি বেড়েছে ৪৭৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা।

চলতি বছরের ডিসেম্বর শেষে এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়ায় দুই হাজার ৫৭৭টি এবং আউটলেট সংখ্যা ৪ হাজার ১৫৭টি দাঁড়ায়। ডিসেম্বর পর্যন্ত চারটি ব্যাংক ঋণ বিতরণ শুরু করেছে। এ সময়ে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ঋণ বিতরণ হয়েছে ১০৮ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। আলোচিত সময়ে রেমিট্যান্স বিতরণ হয় এক হাজার ৯৮২ কোটি টাকা। এর মধ্যে গ্রামাঞ্চলে ১ হাজার ৭৮২ কোটি ৬৪ লাখ রেমিট্যান্স বিতরণ হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্টের মহাব্যবস্থাপক মো. আবুল বশর বলেন, গ্রামীণ সুবিধা বঞ্চিত পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর কাছে ব্যাংকিং সুবিধা পৌঁছে দিতে এজেন্ট ব্যাংকিং চালুর উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকগুলোর আশানুরূপ সারা পাওয়া যাচ্ছে। সঠিকভাবে পরিচালনা করলে এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রমের মাধ্যমে সারা বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রতিটি ঘরে ঘরে ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দেয়া সম্ভবপর হবে।

এদিকে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে গ্রাহক চলতি হিসাবে সর্বোচ্চ চার বার ২৪ লাখ টাকা নগদ জমা এবং সর্বোচ্চ দুইটি লেনদেনে ১০ লাখ টাকা উত্তোলন করতে পরবেন। সঞ্চয়ী হিসাবে সর্বোচ্চ ২ বার ৮ লাখ টাকা নগদ জমা এবং সর্বোচ্চ তিন লাখ টাকা করে দুইটি লেনদেনে ৬ লাখ টাকা উত্তোলন করতে পরবেন। তবে রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে উত্তোলন সীমা প্রযোজ্য হয় না। দিনে দুবার জমা ও উত্তোলন করা যায়। প্রতি এজেন্টকে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের সঙ্গে চলতি হিসাব থাকতে হয়।

এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে হিসাব খোলা, টাকা জমা ও উত্তোলন, টাকা স্থানান্তর (দেশের ভেতর), রেমিট্যান্স উত্তোলন, বিভিন্ন মেয়াদি আমানত প্রকল্প চালু, ইউটিলিটি সার্ভিসের বিল পরিশোধ, বিভিন্ন প্রকার ঋণ উত্তোলন ও পরিশোধ এবং সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় সরকারি সকল প্রকার ভর্তুকি গ্রহণ করা যায়। এজেন্টরা কোনো চেক বই বা ব্যাংক কার্ড ইস্যু করতে পারে না। এজেন্টরা বৈদেশিক বাণিজ্যসংক্রান্ত কোনো লেনদেনও করতে পারেন না। এ ছাড়া এজেন্টদের কাছ থেকে কোনো চেকও ভাঙানো যায় না। মোট লেনদেনের ওপর পাওয়া কমিশন থেকেই এজেন্টরা আয় করেন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ১৮ টি ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের লাইসেন্স নিয়েছে। এর মধ্যে কার্যক্রম চালাচ্ছে ১৪টি ব্যাংক। এজেন্ট ব্যাংকিং চালু করা ব্যাংকগুলো হলো- ডাচ-বাংলা ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, মধুমতি ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক ও প্রিমিয়ার ব্যাংক।

এছাড়া এবি ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক ও সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক শিগগিরই এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের কাজ শুরু করবে বলে জানা গেছে।

এসআই/এমবিআর/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।