ফাঁকা পল্টন এলাকার আবাসিক হোটেল

নাজমুল হুসাইন
নাজমুল হুসাইন নাজমুল হুসাইন , নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:৫৪ পিএম, ০৯ ডিসেম্বর ২০২২
পল্টন এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার/ফাইল ছবি

রাজধানীর পল্টন ও আশপাশের এলাকার আবাসিক হোটেলগুলো ফাঁকা হয়ে গেছে। শনিবার (১০ ডিসেম্বর) বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ ঘিরে সংঘর্ষ ও গ্রেফতারের জেরে এমন পরিস্থিতি হয়েছে বলে জানিয়েছে হোটেল কর্তৃপক্ষ।

হোটেলের কর্মকর্তারা বলছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে তাদের মন্দা চলছে। হোটেলের অধিকাংশ কক্ষই ফাঁকা। হয়রানির ভয়ে মানুষ এ এলাকার আবাসিক হোটেলগুলো এড়িয়ে চলছেন।

তারা বলেন, চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকেও (রবি-সোমবার) হোটেলগুলোতে বর্ডার সংখ্যা প্রায় স্বাভাবিক ছিল। অনেক নতুন নতুন বর্ডারও এসেছেন। তবে নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির সংষর্ষের পর রাস্তায় ব্যাপক তল্লাশি চলছে। এরপর থেকে বর্ডার কমতে শুরু করেছে।

jagonews24

শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) পল্টন, ফকিরাপুল, আরামবাগ, কাকরাইল, সেগুনবাগিচা ও তোপখানা রোডের বেশ কিছু হোটেল ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

তোপখানা রোডের আবাসিক হোটেল কর্ণফুলীতে গিয়ে দেখা গেছে, হোটেলটিতে ৩৫টি কক্ষ। বর্তমানে সেখানে রয়েছেন মাত্র সাতজন বর্ডার।

আরও পড়ুন: নয়াপল্টনের অলিগলিতে ব্যারিকেড, চেক হচ্ছে মোবাইলফোনও

হোটেলের ম্যানেজার সেলিম উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘কিছু বর্ডার ছিল বুধবার পর্যন্ত। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে ফাঁকা হয়ে গেছে। আমরাও ঝামেলা এড়াতে অপরিচিত কোনো বর্ডারকে কক্ষ ভাড়া দিচ্ছি না। যারা নিয়মিত থাকেন, তাদের রেখেছি।’

jagonews24

পল্টন মোড়ের কাছে অভিজাত আবাসিক এশিয়া হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টেরও একই অবস্থা। সেখানে ৫৪টি কক্ষের মধ্যে অর্ধেকই খালি। এ হোটেলের ফ্রন্ট ডেস্ক অফিসার জমশেদ হুসাইন বলেন, ‘সবাই অনাকাঙ্ক্ষিত ঝামেলা এড়িয়ে চলতে এ এলাকা অ্যাভোয়েড (এড়িয়ে চলছেন) করছেন। নিয়মিত গেস্টের বাইরে কেউ নেই। যাদের ঢাকায় আসা খুব প্রয়োজন, তারাও এসময় কম আসছেন। বিদেশি গেস্টের সংখ্যাও একেবারে কম।’

পাশের হোটেল রয়েল প্যালেস প্রাইভেট লিমিটেডেও বর্ডার কম বলে জানা গেছে। সেখানে ফ্রন্ট ডেস্ক অফিসার সিরাজুল হক বলেন, ‘আমাদের এখানে ব্যবসায়ী ও মন্ত্রণালয়কেন্দ্রিক গেস্ট বেশি থাকেন। তারপরও এখন ফাঁকা। খারাপ পরিস্থিতিতে ঢাকার বাইরে থেকে কেউ আসছেন না।’

আরও পড়ুন: নয়াপল্টনে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে নিহত এক, আহত ২০

হোটেল কর্মকর্তারা জানান, পুলিশের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো নির্দেশনা নেই। তবে ডিসেম্বরের শুরুতে কিছু হোটেলে জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া রুম ভাড়া দেওয়া থেকে বিরত থাকার কথা বলা হয়েছে। বেশকিছু হোটেলে দু-একদিন পরপর পুলিশ আসছে। নিয়মিত বর্ডারের তথ্য থানায় জমা দিতে হচ্ছে তাদের।

jagonews24

তারা আরও জানান, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে বর্ডারদের যাচাই-বাছাই করে কক্ষ ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। ভাড়া নিতে আসা ব্যক্তি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত কি না, তা খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।

জানতে চাইলে তোপখানা রোডের হোটেল নিউইয়র্কের রিসিপশনিস্ট নীলিমা আক্তার বলেন, ‘পুলিশ এখন আর আসে না। আসলে আমাদের এখানে তো কোনো গেস্ট নেই। যাদের রুম দেওয়া রয়েছে, তাদের আইডি কার্ড দেখে দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে। সেটা আমরা করছি।’

তবে বেশিরভাগ হোটেল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বর্তমানে হোটেলগুলো ফাঁকা পড়ে আছে। এতে তাদের বড় অংকের লোকসান গুনতে হচ্ছে। দেশে অর্থিক নানান সংকট চলছে। এরমধ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতা চললে মন্দা কাটিয়ে ওঠা অসম্ভব হয়ে পড়বে।

এনএইচ/এএএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।