টানা তিন সপ্তাহ পতনে শেয়ারবাজার

সবকটি মূল্যসূচকের পতন দিয়ে গেলো সপ্তাহ পার করেছে দেশের শেয়ারবাজার। এতে টানা তিন সপ্তাহ শেয়ারবাজারে মূল্যসূচকের পতন হলো। মূল্যসূচক কমলেও গত সপ্তাহে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। সেই সঙ্গে দাম কমার তালিকায় যে কয়টি প্রতিষ্ঠান স্থান করে নিয়েছে, তার দ্বিগুণ প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। ফলে বেড়েছে বাজার মূলধন।
প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) এক সপ্তাহে বাজার মূলধন প্রায় এক হাজার কোটি টাকা বেড়ে গেছে। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৬২ হাজার ৩৬৬ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৭ লাখ ৬১ হাজার ৪১০ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ৯৫৬ কোটি টাকা। বাজার মূলধন বাড়ার অর্থ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম সম্মিলিতভাবে ওই পরিমাণ বেড়ে গেছে।
আরও পড়ুন: স্বদেশ লাইফে সীমাহীন অনিয়ম
বাজার মূলধন বাড়ার সপ্তাহে ডিএসইতে প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৪০৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৩৫২ কোটি ৪০ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ৫৭ কোটি ৩৯ লাখ টাকা বা ১৬ দশমিক ২৮ শতাংশ।
আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৬৩৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ১ হাজার ৭৬২ কোটি ৩ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে ১২২ কোটি ৮৬ লাখ টাকা বা ৬ দশমিক ৯৭ শতাংশ। মোট লেনদেন কমার কারণ গত সপ্তাহে এক কার্যদিবস কম লেনদেন হয়েছে।
এদিকে সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৯১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪০টির। আর ২৩৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
আরও পড়ুন: কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে এগিয়ে চলছে শেয়ারবাজার: বিএসইসি চেয়ারম্যান
এরপরও ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৮ দশমিক ৫১ পয়েন্ট বা দশমিক ১৪ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৪ দশমিক ৯৪ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। তার আগের সপ্তাহে কমে ৩৯ দশমিক ৯৩ পয়েন্ট বা দশমিক ৬৪ শতাংশ।
প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি গত সপ্তাহে কমেছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক। সপ্তাহজুড়ে সূচকটি কমেছে ৮ দশমিক ৫৮ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৯ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে দশমিক ৭৪ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। তার আগের সপ্তাহে কমে ৮ দশমিক ২১ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৭ শতাংশ।
প্রধান মূল্যসূচক ও বাছাই করা সূচকের পাশাপাশি কমেছে ইসলামি শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক। গত সপ্তাহে এই সূচকটি কমেছে ৩ দশমিক ৯২ পয়েন্ট বা দশমিক ২৯ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৩ দশমিক ৬০ পয়েন্ট বা দশমিক ২৭ শতাংশ। তার আগের সপ্তাহে কমে ৫ দশমিক ৪৮ পয়েন্ট বা দশমিক ৪০ শতাংশ।
আরও পড়ুন: শেয়ারবাজারে মিউচুয়াল ফান্ডের বিনিয়োগ সক্ষমতা বাড়লো
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ইউনিক হোটেলের শেয়ার। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১২৪ কোটি ৮৯ লাখ ৭ হাজার টাকা, যা মোট লেনদেনের ৭ দশমিক ৬২ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইস্টার্ন হাউজিংয়ের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১০৯ কোটি ২৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা। ৭৪ কোটি ২৬ লাখ ৬৯ হাজার টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে জেনেক্স ইনফোসিস।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- জেমিনি সি ফুড, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, এডিএন টেলিকম, রূপালী লাইফ, আরডি ফুড এবং আমরা নেটওয়ার্ক।
এমএএস/জেডএইচ/এএসএম