প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান : মা-মেয়ে ও ভাইকে কুপিয়ে জখম
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে এক স্কুলছাত্রী ও তার মা এবং দুই ভাইকে কুপিয়ে জখম করেছে বখাটেরা। রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
সোমবার দুপুরে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরেজমিনে গিয়ে স্কুলছাত্রী ঝর্ণা ও তার মাকে হাসপাতালের বেডে শুয়ে থাকতে দেখা গেছে।
অসহায় পরিবারটির অভিযোগ করে বলেন, মিলন চন্দ্র মাঝি ও তার সহযোগিরা মিলে এ ঘটিয়েছে। স্কুলছাত্রীর ঝর্ণা ঘর ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়েছে।
ঝর্ণা রায় গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের জগদিশপুর গ্রামের ধলু চন্দ্র রায়ের মেয়ে। সে কোচাশহর দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। বখাটে মিলন চন্দ্র মাঝি (২৪) একই গ্রামের মোগলা চন্দ্রের ছেলে।
গুরুতর আহত স্কুলছাত্রী ঝর্ণা রায় (১৫) মা শশীবালা (৪০), ছোট ভাই গোপাল (১০) ও শংকরকে (১৮ মাস) এখন গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের জগদিশপুর গ্রামে সোমবার দুপুরে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা গেছে, শরীরে ক্ষত নিয়ে হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছে স্কুলছাত্রী ঝর্ণা রায় তার মা।
ঝর্ণার মা শশীবালা কান্না ভেজা কণ্ঠে জাগো নিউজকে জানান, দীর্ঘদিন ধরে ঝর্ণা রায়কে মিলন চন্দ্র প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে স্কুল যাওয়া আসার পথে উক্ত্যক্ত করে আসছিলো। কিন্তু বারবার ঝর্ণা তার প্রস্তাব প্রত্যাখান করে। রোববার দুপুরে ঝর্ণার মা বিষয়টি মিলন চন্দ্রের পরিবারকে জানিয়ে প্রতিবাদ করেন। এতে মিলন চন্দ্র ক্ষিপ্ত হয়ে তার সহযোগি নিমাই, চন্দ্র, লব চন্দ্র, পলানু, সুমন, শিপন, বিকাশ, ভেদা, বাচ্চুসহ ১০/১২ জনকে সঙ্গে নিয়ে তাদের বাড়িতে হামলা চালায়। পরে তাদের চিৎকারে প্রতিবেশিরা এগিয়ে এসে উদ্ধার করেন।
ঝর্ণার বাবা ধলু চন্দ্র জানান, ঘটনার সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না। খবর পেয়ে বাড়িতে এসে আহত স্ত্রী, মেয়ে ও ছেলেকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সিএনজি যোগে হাসপাতালে নিয়ে আসি। কিন্তু মিলন ও তার সহযোগিরা আবারো সিএনজির গতিরোধ করে মারপিট করে।
তিনি আরো জানান, হাসপাতালে থাকা অবস্থায় রোববার রাতেই থানা পুলিশ ঘটনাটি জেনে গেছে। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সজিব কুমার সরকার জানান, আহত ঝর্ণা ও তার মা শশীবালা এবং ছোট দুই ভাইয়ের শরীরের একাধিক জখম রয়েছে। তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে।
গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মাহাবুব জানান, খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে আহতদের সঙ্গে কথা বলেছেন। প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করার ফলে এ ঘটনা ঘটেছে বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাম্মেল হক জানান, খবর পেয়ে হাসপাতালে পুলিশ পাঠিয়ে তাদের খোঁজ-খবর নেয়া হয়েছে। অভিযোগ পেলে পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অন্যদিকে, মহিমাগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ জানান, বিষয়টি স্থানীয়ভাবে আপোষ মিমাংসার চেষ্টা চলছে। তবে অভিযুক্ত মিলন ও তার সহযোগিদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।
অমিত দাশ/এআরএ/এবিএস