অন্ধজন-ই আলো ছড়াচ্ছে বইমেলায়


প্রকাশিত: ০১:৫০ পিএম, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

দৃষ্টি প্রতিবন্ধী রেহানা আক্তার পড়ে শোনালেন, ‘নারী শিক্ষার অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন। ঊনবিংশ শতাব্দীর একজন খ্যাতিমান বাঙালি সাহিত্যিক ও সমাজ সংস্কারক। তাকে বাঙালির নারী জাগরণের অগ্রদূতও বলা হয়।’ ইডেন মহিলা কলেজর মাস্টার্স শেষ বর্ষের এই ছাত্রী এমন অনবদ্ধ কাজের মাধ্যমে প্রমাণ করেছেন, ‘‘মানুষ দৃষ্টিহীন বলেই অন্ধ নয়, মানুষ মূলত প্রজ্ঞাহীন বলেই অন্ধ।’’
 
অমর একুশে বইমেলায় যখন সব প্রকাশনার উদ্দেশ্য বেঁচা-কেনা। তখন এভাবে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের পড়া লেখায় আগ্রহী করে তুলতে এবং সমাজের সকল শ্রেণি পেশার মানুষকে এদের (দৃষ্টি প্রতিবন্ধী) পাশে দাঁড়ানোর দীক্ষা দিচ্ছে ‘স্পর্শ ব্রেইল প্রকাশনা’। ২০০৯ সাল থেকে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের নিয়ে এভাবে কাজ করে যাচ্ছে প্রকাশনাটি। সে সময় একটি ছড়া দিয়ে যাত্রা শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি।

এরপর ২০১০ সালে একটি গল্প ব্রেইল আকারে প্রকাশ করা হয়। পরবর্তীতে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের নজরুল, রবীন্দ্রনাথ, জসীম উদ্দিনসহ বাংলা সাহিত্যের কবি-সাহিত্যিকদের পরিচয় করে দেয়ার উদ্যোগ নেয় প্রকাশনাটি। পরবর্তীতে আরো প্রচার ও প্রকাশনার স্বার্থে ২০১১ সাল থেকে মেলায় স্টল নেয় ‘স্পর্শ ব্রেইল প্রকাশনা’। ২০১৬ সালে এসে মোট ৩৭টি বই স্পর্শ বইয়ের প্রকাশ করে তারা।
 
প্রকাশনাটির মনে করে ‘দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা পড়তে জানেন। আর সকল পড়ুয়া মানুষদের মত তারাও ভালোবাসেন জ্ঞান আহরণ করতে।’
 
blind

স্পর্শ ব্রেইল প্রকাশনার প্রধান উদ্দ্যোক্তা নাজিয়া জাবীন জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা বিক্রি করি না, এখানে আমরা শুধু প্রচারণা করে থাকি। আমরা চাচ্ছি শুধু আমরা নয়, এভাবে সবাই দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের পাশে এগিয়ে আসুক। বাংলা একাডেমির উচিত হবে, যারা পড়তে পারে তাদের জন্য যেন কিছু করেন। সব প্রকাশনা যদি এদিকে দৃষ্টি দেয় তাহলে এ কাজটি আরো সহজ হয়।’
 
তিনি বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে প্রত্যেক প্রকাশনাকে প্রতি বছর মেলায় কমপক্ষে একটি করে হলেও ব্রেইল বই প্রকাশে বাদ্ধ করে দেয়ার দাবি করেন। তার মতে এভাবে যদি সাবাই এগিয়ে আসে তাহলে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা পড়া-লেখায় আরো আগ্রহী হয়ে উঠবে। অবদান রাখতে পারবে সমাজের সকল ক্ষেত্রে।
 
তিনি জানান, ‘প্রতিদিন মেলার এই প্রকাশনাতে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা আসেন। বিভিন্ন বই পড়ে তারা মানুষকে দেখান। আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি প্রকাশনার পক্ষ থেকে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের বিনামূল্যে বই বিতরণ করা হবে। আজ পর্যন্ত মেলায় এসে ৫০ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বই নেয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছেন।
 
এএসএস/এমএইচ/এসকেডি/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।