ঈদুল-ফিতর

স্বপ্নসেবার আয়োজনে ব্যতিক্রমী ‘ঈদ আনন্দ’

ফিচার ডেস্ক
ফিচার ডেস্ক ফিচার ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:২৯ পিএম, ২৩ এপ্রিল ২০২৩
ছবি: আব্দুল হামিদ

আব্দুল হামিদ

ঈদ মানে খুশি। ঈদ মানে আনন্দ। ঈদ মানে আত্মীয় স্বজন বন্ধু বান্ধবদের মিলনমেলা। ঈদের দিন সবাই যখন আত্মীয় স্বজনদের আপ্যায়নের ব্যস্ত তখন একদল তরুণ এলাকাবাসীকে আনন্দ দিতে আয়োজন করেছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী সব খেলা। যেখানে ছিল শিশুদের আম কুড়ানো, বাচ্চাদের ঝুলন্ত আপেল খাওয়া, শিশুদের বেলুন ফাটানো, নারীদের সুইয়ে সুতা ঢুকানো ও আটা দিয়ে গোল সুন্দর রুটি বানানোসহ পুরুষদের তৈলাক্ত কলা গাছ বেয়ে উঠা ও কলা পাড়া, সাবান ঘষা, সাতপাকে ফুটবল খেলা, টায়ার খেলাসহ বিভিন্ন ধরনের দেশীয় খেলা। এই খেলা দেখতে আশপাশের এলাকা থেকে একত্রিত হয়েছে কয়েক হাজার নারী, পুরুষ, শিশুসহ বিভিন্ন বয়সি মানুষ।

বিজ্ঞাপন

ঈদের দিন এমন আয়োজন করা হয় বগুড়ার ধুনট উপজেলার ছোট এলাঙ্গীতে। যার আয়োজন করে ‘স্বপ্নসেবা’ সেচ্ছাসেবী সংগঠন। তরুণদের মাদক থেকে দূরে রাখতে ও বাংলার ঐতিহ্যপূর্ণ খেলা তুলে ধরতে এবং সবার মাঝে তা ছড়িয়ে দিতে এমন আয়োজন করেছে বলে জানান আয়োজক কমিটি।

স্বপ্নসেবার আয়োজনে ব্যতিক্রমী ‘ঈদ আনন্দ’

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

১২ বছর বয়সী শিশু জোনায়েদ হোসাইন আম কুড়ানো খেলায় অংশগ্রণ করেন। তার থেকে এ খেলার অভিজ্ঞতা নিয়ে জানতে চাইলে সে জানান কখনো এমন খেলায় অংশগ্রহণ করেনি। এবার প্রথম অংশগ্রহণ করতে পেরে সে আনন্দিত। জোনায়েদের মত আরও অনেক শিশু অংশগ্রহণ করে ঝুলন্ত আপেল খাওয়া, শিশুদের বেলুন ফাটানো খেলায়।

স্বপ্নসেবার আয়োজনে ব্যতিক্রমী ‘ঈদ আনন্দ’

আরও পড়ুন: শৈশবের ঈদ স্মৃতি জীবনের সঙ্গে গেঁথে আছে

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

বৃদ্ধা আমির হোসেন, আয়ান, মেজের তারা সাবান ঘষা খেলায় অংশগ্রহণ করেন। খেলার আগে একে অপরকে পানি ছিটিয়ে দিচ্ছিলেন। এই উচ্ছ্বাস দেখলেই বোঝা যায় কতটা আনন্দে আছে তারা। খেলায় অংশগ্রহণ করার অনুভূতি জানতে চাইলে বলেন, এর আগেও আমরা পানির মধ্যে কোলবালিশ খেলায় অংশগ্রহণ করেছিলাম। তখনো খুব মজা করেছি। এবার সাবান খেলায় অংশগ্রহণ করেছি খুব আনন্দ লাগছে।

স্বপ্নসেবার আয়োজনে ব্যতিক্রমী ‘ঈদ আনন্দ’

সাতপাকে ফুটবল খেলা খেলেছে রেগান। তার অভিজ্ঞতা জানাতে তিনি বলেন, প্রথমবার এমন খেলায় অংশগ্রহণ করেছি। সাতপাক দেওয়ার পর নিজেকে কন্ট্রোল করে ফুটবলে লাথি মারা খুব কষ্টের। কারণ সাতপাক দেওয়ার পর মাথা ঘুরতে থাকে। এই খেলায় অংশগ্রহণ করেছি। নির্দিষ্ট স্থানে ফুটবল পৌঁছাতে পেরেছি। বিজয়ী হয়েছি। খুব আনন্দ লাগছে।

বিজ্ঞাপন

স্বপ্নসেবার আয়োজনে ব্যতিক্রমী ‘ঈদ আনন্দ’

আরও পড়ুন: ঈদ কার্ড এখন সোনালি অতীতের সুখস্মৃতি

সুইয়ে সুতা ঢুকানো ও আটা দিয়ে গোল সুন্দর রুটি বানানো খেলায় প্রথম অংশগ্রহণ করেছেন শারমিন। ১০ মিনিটে সুইয়ে সুতা ঢুকিয়েছেন এরপর সেই সুই দিয়ে কাপড়ে একটি বোতাম সেট করেছেন। এরপর পানি আটা মিশিয়ে গোল ৩টি রুটি বানিয়েছেন। এ খেলায় তিনি প্রথম স্থান অর্জন করে বিজয়ী হয়েছেন। হাজার হাজার মানুষের মধ্যে এমন খেলা খেলতে প্রথমে ভয় লাগলেও পরে তা কাটিয়ে খেলা শেষ করতে পেরেছেন বলে জানালেন শারমিন।

বিজ্ঞাপন

স্বপ্নসেবার আয়োজনে ব্যতিক্রমী ‘ঈদ আনন্দ’

তৈলাক্ত কলা গাছ বেয়ে উঠে কলা পাড়া খেলায় এবার তৃতীয় বারের মত বিজয়ী হয়েছে রেদন। কলাগাছ বেয়ে উঠার পূর্ব অভিজ্ঞতা আছে। তেল দেওয়ায় কষ্ট হয়ে যায়। তবে কৌশলে রপ্ত করেছি।

খেলা দেখতে আশা ধুনট পৌর মেয়র এজিএম বাদশা বলেন, প্রতিবছর এই খেলা দেখতে আসি। খুব ভালো লাগে। তরুণ সমাজকে মাদক থেকে দূরে রাখতে সব জায়গায় এমন খেলার আয়োজন করা দরকার।

বিজ্ঞাপন

কেএসকে/এসইউ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।