এক দেশে থাকা, আরেক দেশে পড়া
একদেশের মানুষ আরেক দেশে গিয়ে পড়তেই পারে। কিন্তু যদি এক দেশে বাস করে আরেক দেশের স্কুলে গিয়ে পড়াশোনা করে কেউ, তাকে আপনি কী বলবেন! গল্প মনে হলেও ব্যাপারটি কিন্তু সত্যি। এমনই একজন মেয়ে হলো ফেবে আরা। ১৬-বছর বয়েসী স্কুল ছাত্রী ফেবে আরা বসবাস করে এক দেশে, স্কুলে যায় আরেক দেশে। সে থাকে উত্তর মেক্সিকোর শহর সিউদাদ হুয়ারেযে। প্রতিদিন আন্তর্জাতিক সীমান্ত পাড়ি দিয়ে সে ক্লাস করতে যায় যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের শহর এল পাসোতে।
ফেবে আরা জানায়, `আমি প্রতিদিন ভোর পাঁচটায় ঘুম থেকে উঠি, তারপর সাড়ে ছয়টার মধ্যে পুল পেরিয়ে ঢুকে যাই আমেরিকায়, এই সেতু অতিক্রম করা অনেকটা অভ্যাসে পরিনত হয়েছে। তবে শীতকালে অভিজ্ঞতাটা একেবারেই উপভোগ করার মতো নয়।`
যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকোর সীমান্ত পেরিয়ে ফেবে এবং তার ১০-১৫ জন বন্ধু যায় এল পাসোর স্কুল লিডিয়া প্যাটারসন ইনস্টিটিউটে, স্থানীয়ভাবে যাকে ডাকা হয় লা লিডিয়া নামে। লা লিডিয়ায় আসা অনেক শিক্ষার্থীর পাসপোর্টই মেক্সিকান। যুক্তরাষ্ট্রে যাতায়াতের জন্য তাদের রয়েছে স্টুডেন্ট ভিসা।
ফেবে আরার মতো হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন মেক্সিকোর সীমান্ত পেরিয়ে চলে যান এল পাসোতে। প্রতিবার সীমান্ত অতিক্রমের জন্য মাশুল হিসেবে তাদের দিতে হয় চার মেক্সিকান পেসো।
মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, ২০১১ সালে ৪২ লক্ষ মানুষ সীমান্তে পেরিয়ে মেক্সিকো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকেছে। এদের একট বড় অংশ প্রতিদিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে অফিস-আদালত, কিংবা ফসলের ক্ষেতে কাজ করেন। দিনের শেষে তারা মেক্সিকোতে ফেরত আসেন। কিন্তু সীমান্তের দুই পারের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। সিউদাদ হুয়ারেযকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিপদজনক শহর হিসেবে বর্ণনা করা হয়। অন্যদিকে এল পাসো হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে নিরাপদ শহরগুলোর মধ্যে দ্বিতীয়। ২০১০ সালে এল পাসোতে খুনের ঘটনা ছিল পাঁচটি। অন্যদিকে সিউদাদ হুয়ারেজে খুন হয়েছিল ৩০৭৫টি।
এই নিরাপত্তার অভাব নিয়ে ফেবে আরা এবং তার স্কুল বান্ধবীরা সত্যিই উদ্বিগ্ন। বিবিসি
এইচএন/পিআর