ট্যাটুতে সেমিকোলন বুঝিয়ে দেবে মানুষগুলো অন্যরকম

ফিচার ডেস্ক
ফিচার ডেস্ক ফিচার ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:৩৫ পিএম, ০৯ জুলাই ২০১৫

শরীরে ট্যাটু আঁকানোটা আদিবাসীদের উল্কি হয়ে পাশ্চাত্য ঘুরে হাল ফ্যাশানে জায়গা করে নিয়েছে। পপ কালচার, হিপি অথবা বিট জেনারেশনের হাত ধরে ট্যাটু এমনকি এখন ঢাকা শহরের তরুণ-তরুণীর মধ্যেও হয়ে উঠেছে জনপ্রিয়।

শরীরের বিভিন্ন জায়গায় বিচিত্রসব ট্যাটু আঁকতে দেখা যায় এসময়ের ছেলেমেয়েদের। তার মধ্যেই একটা বিশেষ ধরণের ট্যাটু কখনো চেখে পড়েছে কি? ফুল, লতাপাতা, ড্রাগন, ঈগল কিংবা জটিল কোনো নকশা নয়, স্রেফ একটা সেমিকোলন!

সাধারণত শরীরের এমন জায়গায় আঁকা থাকে এই সেমিকোলন, যা খুব খুঁটিয়ে না দেখলে চোখে পড়বে না। হাতেই আঁকা সেমিকোলন, কিন্তু দেখলেন হাতঘড়ির আড়ালে রাখা সযতনে। বা, ঘাড়ের ঠিক নীচে, চুলের গোছে আড়াল করা।

এই সেমিকোলন ট্যাটু ক্রমেই জনপ্রিয় হচ্ছে জেন-এক্সে। তবে, সবাই যে করাচ্ছেন, সবার গায়েই যে দেখবেন, তা কিন্তু নয়। কারণ, ট্যাটু হলেও নিছক ফ্যাশন করতেই নয় এই সেমিকোলন।

গভীর অর্থবহ এই সেমিকোলন। মানসিক লড়াইয়ের প্রতীক। যারা চেয়েছিলেন নিজের জীবনটাকে শেষ করে দিতে, আত্মহত্যার চেষ্টা পর্যন্ত করেছিলেন, কিন্তু, তার পর ফিরে এসেছেন জীবনের স্রোতে, তাদের মানসিক দৃঢ়তার প্রতীক হলো এই সেমিকোলন ট্যাটু।

দু`বছর আগে, ২০১৩-য় সোশ্যাল মিডিয়ার এক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আত্মপ্রকাশ এই সেমিকোলন ট্যাটুর। যাকে বলা হয়, প্রজেক্ট সেমিকোলন। যারা হতাশার অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছেন, বা আসক্ত হয়ে পড়েছেন নেশায়, বা যারা ঠকেছেন ভালোবাসার মানুষটির কাছে, `ভ্যানগগ সিনড্রোম`-এর শিকার হয়ে ক্ষতবিক্ষত করেছেন, করেন, নিজেকে, তাদের নিয়ে, তাদের জন্য এই প্রজেক্ট সেমিকোলন। “এসো, বাঁচো প্রাণ ভরে। কিছুই যায়নি ফুরিয়ে। শুরু করো নতুন করে”- এই সেমিকোলন তাই ভালোবাসার প্রতীক, প্রতীক প্রেরণার।

কিন্তু, সেমিকোলনই কেন?

সেমিকোলন লেখায় আমরা ব্যবহার করি, সাময়িক ছেদ বা বিরতি বোঝাতে, যা কখনোই পূর্ণচ্ছেদ বা দাঁড়ি নয়। ধরে নিন, লেখক হচ্ছেন আপনি, আর বাক্য হচ্ছে আপনার জীবন। আপনার সেই জীবনের, সেই সংকটম সময়, যখন আপনি চেয়েছিলেন নিজেকে শেষ করে ফেলতে, সেখানেই আপনার জীবনের সেমিকোলন। তার পর আবার চলছে জীবন। তাই সেমিকোলে বোঝা যায়, ছেদ নয়, সাময়িক বাধা পেরিয়ে এগিয়ে চলার নামই জীবন।

এসআরজে

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।