ডেঙ্গুতে অর্ধেকের বেশি মৃত্যু হাসপাতালে ভর্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৪১ পিএম, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলন/ছবি: জাগো নিউজ

চলতি বছর দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ১৭৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মারা গেছেন।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু জাফর। অধিদপ্তরের সভাকক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন হয়।

মৃত্যুর পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে মহাপরিচালক বলেন, ডেঙ্গুতে যারা মারা গেছেন, তাদের অনেকেই দেরিতে হাসপাতালে এসেছেন। এমন রোগীদের খারাপ অবস্থায় ভর্তি হওয়ার কারণে চিকিৎসার সুযোগ কমে যাচ্ছে।

আবু জাফর বলেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার পরপরই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। প্রয়োজনে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি হলে মৃত্যুহার কমানো সম্ভব। সময়মতো চিকিৎসা না পাওয়াই মৃত্যুঝুঁকি বাড়াচ্ছে।

সেপ্টেম্বরে সর্বোচ্চ আক্রান্ত ও মৃত্যু

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রতি বছরের মতো এবারও সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। গত বছর মারা গিয়েছিলেন জুনে আট, জুলাইয়ে ১৪, আগস্টে ৩০ ও সেপ্টেম্বরে ৮৭ জন। সে সময় ভর্তি রোগীর সংখ্যাও সেপ্টেম্বরে সর্বোচ্চ ছিল।

আবু জাফর বলেন, ‘জনগণকে সচেতন করা ছাড়া ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। আমরা ব্যবস্থাপনা নিচ্ছি, কিন্তু জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া সংক্রামক রোগ মোকাবিলা করা কঠিন।’

মৃত্যুর কারণ বিশ্লেষণ

চলতি বছর ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া রোগীদের মধ্যে ১১৩ জনের মৃত্যুর কারণ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে- ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে (ডিএসএস) ৫৬, জটিল উপসর্গে (ইডিএস) ৩৬, ডেঙ্গু হেমোরেজিক সিনড্রোমে (ডিএইচএস) এক, ডিএসএস ও ইডিএসের মিলিত জটিলতায় নয়, অঙ্গ বিকলজনিত জটিলতায় পাঁচ ও হৃদযন্ত্রের শকে আক্রান্ত হয়ে ছয়জন মারা গেছেন। অধিকাংশ রোগী ভর্তি হওয়ার পর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মৃত্যুবরণ করেছেন। যা স্পষ্ট করে যে দেরিতে চিকিৎসা নেওয়ার কারণে রোগ দ্রুত জটিল আকার ধারণ করছে।

মৃত্যুর তথ্য প্রকাশে বিভ্রান্তি

মহাপরিচালক বলেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের মধ্যে বিভ্রান্তি থাকে। যেমন: ২৪ ঘণ্টায় ১২ জনের মৃত্যুর খবর এসেছিল। প্রকৃতপক্ষে তাদের নয়জন মারা যান বৃহস্পতিবার, কিন্তু শুক্রবার ছুটির কারণে সেদিন সংখ্যা প্রকাশ হয়নি। এটি আমাদের ব্যর্থতাও বলা যায়।

আবু জাফর আশ্বাস দেন, ডেঙ্গু শনাক্তের জন্য পর্যাপ্ত এনএস১ কিট মজুদ আছে এবং হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা জোরদার করা হয়েছে। সাংবাদিকদের সহযোগিতায় জনগণকে ডেঙ্গু বিষয়ে সচেতন করতে তিনি আহ্বান জানান।

এসইউজে/একিউএফ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।