তামাক থেকে রাজস্ব আয়ের চেয়ে ব্যয় দ্বিগুণ: বিবৃতি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:৩২ পিএম, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রতীকী ছবি

বাংলাদেশে প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যুর সবচেয়ে বড় কারণ তামাক—এ বাস্তবতা তুলে ধরে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন দ্রুত সংশোধনের দাবি জানিয়েছে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ লাং ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটি।

সোমবার (৮ ডিসেম্বর) এক যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেন, বর্তমান আইনকে আরও শক্তিশালী করা ছাড়া অকালমৃত্যু কমানো, স্বাস্থ্যব্যবস্থার চাপ হ্রাস এবং জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার কোনো বিকল্প নেই।

তামাকের অর্থনৈতিক ক্ষতির দিক তুলে ধরে বিবৃতিতে বলা হয়, জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তামাক থেকে সরকারের আয় ছিল ৪০ হাজার কোটি টাকা; কিন্তু স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত ক্ষতির ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৮৪ হাজার কোটি টাকা—আয়ের দ্বিগুণেরও বেশি।

বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, দেশে প্রতিদিন ৩৫৭ জন এবং বছরে ১ লাখ ৩০ হাজারের বেশি মানুষ তামাকজনিত রোগে মারা যায়। বাংলাদেশে মোট মৃত্যুর ৭১ শতাংশই অসংক্রামক রোগের কারণে, যার অন্যতম প্রধান কারণ তামাক ব্যবহার।

বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটির গবেষণা অনুযায়ী, বছরে প্রায় ১৫ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাকজনিত রোগে আক্রান্ত হন। আর পরোক্ষ ধূমপানের ফলে মারা যান প্রায় ২৫ হাজার মানুষ। পাশাপাশি তামাকজনিত কারণে ৬১ হাজার শিশু বিভিন্ন রোগে ভোগে।

যৌথ বিবৃতিতে সংগঠনগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করে জানায়, অন্তবর্তীকালীন সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়ার পর থেকেই তামাকশিল্প বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে সংশোধন প্রক্রিয়া ব্যাহত করার চেষ্টা করছে।

সেখানে বলা হয়, জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার স্বার্থে আইনকে শক্তিশালী করার বিকল্প নেই। শক্তিশালী আইন অকালমৃত্যু কমাবে, স্বাস্থ্যব্যবস্থার চাপ কমাবে এবং জাতীয় অর্থনীতিকে সুরক্ষিত করবে।

তামাকজনিত ফুসফুস ক্ষতি, ক্যানসার ও যক্ষ্মার ঝুঁকি বাড়ার পাশাপাশি তরুণ প্রজন্মকে লক্ষ্য করে তামাক কোম্পানির আগ্রাসী বিপণনকেও উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করা হয়। ধূমপানমুক্ত জনপরিবেশ এবং ভেপ/ই–সিগারেটে কঠোর নিয়ন্ত্রণ ছাড়া ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করা সম্ভব হবে না বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

এফসিটিসির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আইন সংশোধনে ৬টি সুপারিশ তুলে ধরে সংগঠনগুলো। সেগুলো হলো—
• সব পাবলিক স্থান ও গণপরিবহনে ধূমপানের নির্ধারিত স্থান বাতিল
• বিক্রয়কেন্দ্রে তামাকপণ্যের প্রদর্শন নিষিদ্ধ
• তামাক কোম্পানির সিএসআর কার্যক্রম নিষিদ্ধ
• ই-সিগারেট থেকে শিশু-কিশোরদের সুরক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ
• তামাকপণ্যের খুচরা ও খোলা বিক্রি বন্ধ
• সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তা ৫০% থেকে বাড়িয়ে ৯০% করা

বিবৃতিতে সই করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক ডা. খন্দকার আব্দুল আউয়াল রিজভী, বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক এবং বাংলাদেশ লাং ফাউন্ডেশনের মহাসচিব ডা. আসিফ মুজতবা মাহমুদ।

এসইউজে/এমকেআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।