যখন দেখবো আমি পারছি না তখন নিজেই মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেবো

আবদুল্লাহ আল মিরাজ
আবদুল্লাহ আল মিরাজ আবদুল্লাহ আল মিরাজ , নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:৫১ পিএম, ১৫ জানুয়ারি ২০২৪

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়ে রোববার (১৪ জানুয়ারি) প্রথম অফিস করেছেন ডা. সামন্ত লাল সেন। সারাদিন মন্ত্রণালয়ে ব্যস্ত সময় কাটিয়ে ছুটে গেছেন তার পুরোনো কর্মস্থল শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে।

মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব ও ভবিষ্যৎ ভাবনাসহ নানান বিষয়ে কথা বলেছেন জাগো নিউজের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন নিজস্ব প্রতিবেদক আবদুল্লাহ আল মিরাজ। তিনি বলেন, আমি আগেও যেমন ছিলাম ঠিক তেমনই থাকবো। আমার প্রতি সবার অনেক আশা-ভরসা। সেই জায়গা থেকে কাজ করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।

জাগো নিউজ: আজ থেকেই দায়িত্ব পালন শুরু হলো, আপনি স্বাস্থ্যখাতের কোন বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে কাজ শুরু করবেন?

সামন্ত লাল সেন: আজ যোগদান করেছি। আমাদের অনেক কাজ আছে। এটি অনেক বড় একটি মন্ত্রণালয়। তবে প্রাথমিক যে চিন্তা তা হচ্ছে প্রান্তিক পর্যায়ে চিকিৎসাসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া। কীভাবে চিকিৎসা সহজলভ্য ও সহজ করা যায় সেটা নিয়ে চিন্তা করছি। আমরা যদি চিকিৎসাক্ষেত্র ডিসেন্ট্রালাইজড (বিকেন্দ্রীকরণ) না করি তাহলে বিভাগীয় শহরগুলোতে চাপ কমবে না। এ কাজ যদি করা যায় সাধারণ মানুষের উপকার হবে। আমি সে লক্ষ্যেই কাজ করবো।

আরও পড়ুন>> আমি নার্ভাস: সামন্ত লাল সেন

জাগো নিউজ: এখন তো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আছেন, শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটের দায়িত্ব কীভাবে সামলাবেন?

সামন্ত লাল সেন: বার্ন আমি ছাড়বো না। আজও বার্নে গিয়েছিলাম। আমি প্রধানমন্ত্রীকেও বলেছিলাম বার্ন আমি ছাড়বো না। আমার এখনো পাঁচটি মেডিকেল কলেজে বার্ন ইউনিট করার কথা ১০০ বেডের। এটি একনেকে যাবে শিগগির। চট্টগ্রামেও একটি হবে। সুতরাং, কাজের ফাঁকেই আমি বার্ন দেখবো। শুধু বার্ন দেখলে তো হবে না। আমি সারাদেশের মন্ত্রী, শুধু বার্নের জন্য তো নয়। তবে বার্ন আমার প্রিফারেন্সে থাকবে।

এটা আমার মাথায় কোনোদিনই ছিল না, জীবনেও চিন্তা করিনি। প্রধানমন্ত্রী আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি ওনাকে বলেছি আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন, যখন দেখবো আমি পারছি না তখন নিজেই মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেবো।

জাগো নিউজ: স্বাস্থ্যের বড় সমস্যা দুর্নীতি এবং সিন্ডিকেট- এ নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কী?

সামন্ত লাল সেন: দুর্নীতি সেটা অবশ্যই বড় সমস্যা। আমি এটুকু বলতে পারি আমি সারাজীবন এক ইঞ্চিও দুর্নীতি করিনি। তাই দুর্নীতির বিষয়ে আমার জিরো টলারেন্স। এটিকে আমি কোনোভাবেই সুযোগ দেবো না। তবে এটি আমার একার পক্ষে সম্ভব নয়। সবার সহযোগিতা পেলে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো দুর্নীতি ও সিন্ডিকেট রুখে দিতে।

আরও পড়ুন>> চিকিৎসাসেবায় নিবেদিতপ্রাণ ডা. সামন্ত লাল সেন

জাগো নিউজ: আগে একটি প্রতিষ্ঠানের স্বাস্থ্যসেবার দায়িত্বে ছিলেন। এখন পুরো বাংলাদেশের দায়িত্বে, কতটুকু সফল হতে পারবেন বলে আশা করছেন?

সামন্ত লাল সেন: এটা আমার মাথায় কোনোদিনই ছিল না, জীবনেও চিন্তা করিনি। প্রধানমন্ত্রী আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি ওনাকে বলেছি আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন, যখন দেখবো আমি পারছি না তখন নিজেই মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেবো।

জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়া এবং দুর্নীতি বন্ধ করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। দুর্নীতি কোথায় হয়, কীভাবে হয়, সেটা ভালোভাবে খতিয়ে দেখতে হবে। আমি চাই না কোথাও দুর্নীতি হোক। প্রধানমন্ত্রী একটা বিরাট আস্থা নিয়ে আমাকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বানিয়েছেন।

জাগো নিউজ: স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে আপনার কোনো নিজস্ব পরিকল্পনা আছে কি না? থাকলে সেটা কী?

সামন্ত লাল সেন: আমাদের স্বাস্থ্যখাতটা ঠিক করতে হলে প্রথমে আমাদের চিকিৎসক সমাজকে ভালোভাবে রাখতে হবে। আমি যদি ভালো না থাকি, ভালো সেবা দিতে পারবো না। চিকিৎসক সমাজের অনেক কষ্টের কথা আমি শুনি। বিশেষ করে তরুণ চিকিৎসকদের। আমি যাকে দিয়ে কাজ করাবো, তাকে যদি শান্তিতে না রাখি, তাহলে কাজ আদায় করবো কীভাবে?

আরও পড়ুন>> ফের টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী হচ্ছেন ইয়াফেস, সঙ্গে সামন্ত লাল সেন

জাগো নিউজ: স্বাস্থ্যখাতে বর্তমানে কী ধরনের চ্যালেঞ্জ আছে বলে মনে করেন? চ্যালেঞ্জগুলো কীভাবে মোকাবিলা করতে চান?

ডা. সামন্ত লাল সেন: জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়া এবং দুর্নীতি বন্ধ করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। দুর্নীতি কোথায় হয়, কীভাবে হয়, সেটা ভালোভাবে খতিয়ে দেখতে হবে। আমি চাই না কোথাও দুর্নীতি হোক। প্রধানমন্ত্রী একটা বিরাট আস্থা নিয়ে আমাকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বানিয়েছেন। এত লোকের মধ্যে আমাকে বেছে নিয়েছেন। সুতরাং, ওনার একটা প্রত্যাশা আছে। আমি চেষ্টা করবো যেন ওনার প্রত্যাশাটা যেভাবেই হোক পূরণ করতে পারি।

এএএম/এএসএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।