‘ফিরে যাও, আমরা তোমাকে চাই না’, কানাডায় ভারতীয় নারীকে কটাক্ষ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭:১৮ পিএম, ০৬ আগস্ট ২০২৫
কানাডায় বর্ণবাদী ও অবমাননাকর মন্তব্যের শিকার হয়েছেন শিখা নামের এই নারী/ তার ইনস্টাগ্রাম পোস্ট থেকে নেওয়া স্ক্রিনশট

কানাডায় শ্বেতাঙ্গদের কাছে থেকে বর্ণবাদী অবমাননাকর মন্তব্যের শিকার হয়েছেন ভারতীয় অভিবাসী এক নারী এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে তৈরি করা তার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে ভিডিওতে তিনি অবমাননাকর মন্তব্যগুলোর একটি তালিকা তুলে ধরেন।

শিখা নামের ওই নারী ভিডিওর ক্যাপশনে লেখেন, আমার অবাক লাগে- যারা অনলাইনে এত কটু মন্তব্য করে, সামনাসামনি দেখা হলে তারা কত মিষ্টি ব্যবহার করে! এরপর তিনি নিজের বিরুদ্ধে আসা ১০টি মন্তব্য তালিকাভুক্ত করেন, যা সামাজিক মাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে।

শিখার তালিকাভুক্ত ১০টি বর্ণবাদী মন্তব্য:

আগে ডিওডোরেন্ট লাগাও

ফিরে যাও, আমরা তোমাকে চাই না

টিম হর্টনসে যাও, সেখানে নিজেকে মনে হবে বাড়িতে আছো

কোনো ফুড ব্যাংক থেকে খেয়ে নাও

তোমার শরীর দিয়ে গন্ধ আসে

পাজিতস’ (ভারতীয়দের অপমানজনক ডাকনাম)

তোমার দেশে ফিরে যাও, কেনো এমন জায়গায় থাকো, যেখানে সবাই তোমাদের ঘৃণা করে?

তেলাপোকা মারার মেমে

সবচেয়ে জরুরি হলো, বাড়ি ফিরে যাও

এসব ফ্রি খাওয়া প্রাণীদের ফেরত পাঠাও

 

এগুলো প্রকাশ করার সময় শিখা আত্মবিশ্বাসী ভঙ্গিতে নাচতে নাচতে বলেনআমি নাচছি, হাসছি, নিজের মতো করে জীবন কাটাচ্ছি। এসব মন্তব্য আমাকে দমাতে পারবে না।

এদিকে, ভিডিওটি অনলাইনে ভাইরাল হওয়ার পর থেকেই কমেন্টবক্সে মিশ্য প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায় কেউ শিখার অভিজ্ঞতার প্রতি সহানুভূতি জানায়, আবার কেউ বলেন- এটি কানাডার বাস্তবতা নয়।

একজন কানাডিয়ান মন্তব্য করেন, এসব হয়তো অনলাইনে সীমাবদ্ধ, বাস্তব জীবনে অভিজ্ঞতাগুলো বরং বেশ সুন্দর।

অন্য একজন লিখেছেন, আমার অভিজ্ঞতা পুরোপুরি আলাদা। যদি কেউ সত্যিই এমন অভিজ্ঞতা পান, আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। তবে বাস্তবে কানাডা অত্যন্ত বহুজাতিক ও সহনশীল সমাজ, এখানে প্রকাশ্য বৈষম্য খুবই বিরল।

তৃতীয় একজন লেখেন, ভালো লাগছে যে এই বাজে মন্তব্যগুলো তোমাকে দমাতে পারেনি। তুমি যেভাবে আছো, সেভাবেই থাকো। এই দেশ আসলে তাদেরই (শেতাঙ্গ) নয়- তাই মজা করে জীবন কাটাও।

এর আগে আরেক প্রবাসী ভারতীয় নারী টরন্টোর আশপাশে বসবাসের অভিজ্ঞতা রেডিটয়ে শেয়ার করেন। সেখানে তিনি জানান, কনসার্টগুলোতে তার আইডি বারবার চেক করা হয়, নেইল স্যালনে তাকে খরচের বিষয়ে সতর্ক করা হয় এবং দামি রেস্তোরাঁগুলোতে তাকে অস্বস্তিকর দৃষ্টিতে দেখা হয়। সব মিলিয়ে মনে হয়, তিনি যেন কোথাও মানানসই নন।

বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনাগুলো দেখায় যে- সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রেসিজম বা জাতিগত বিদ্বেষের মুখোমুখি হওয়ার হার বেড়েই চলেছে যদিও বাস্তব জীবনে তা অনেকসময় ধামাচাপা দেওয়া হয়। শিখার মতো নারীরা যখন এগুলো প্রকাশ্যে আনছেন, তখন বিষয়টি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হচ্ছে।

সূত্র: এনডিটিভি

এসএএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।