শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠলো আফগানিস্তান
শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠলো আফগানিস্তান। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, স্থানীয় সময় রোববার মধ্যরাতে উত্তর আফগানিস্তানে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। কয়েক মাস আগে আঘাত হানা আরেকটি শক্তিশালী ভূমিকম্পের ক্ষত কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আবারও তীব্র কম্পনে কেঁপে উঠলো দেশটির উত্তরাঞ্চল। খবর এএফপির।
ইউএসজিএস-এর তথ্য অনুসারে, স্থানীয় সময় রোববার মধ্যরাতের দিকে ২৮ কিলোমিটার (১৭ মাইল) গভীরতার ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। এর কেন্দ্রস্থল ছিল মাজার-ই-শরিফ শহরের কাছে। ভূমিকম্পের পরের কয়েক ঘন্টায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহত বা বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
অতীতে দুর্বল যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং অবকাঠামো দেশটিতে দুর্যোগ মোকাবিলায় বাধাগ্রস্ত করেছে। কর্তৃপক্ষ ঘন্টার পর ঘন্টা এমনকি কয়েক দিন ধরেও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করতে দূরবর্তী গ্রামে পৌঁছাতে পারেনি।
ভূমিকম্পের সময় দেশটির বৃহত্তম উত্তরাঞ্চলীয় শহর মাজার-ই-শরিফের বাসিন্দারা তাদের বাড়িঘর ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় রাস্তায় ছুটে আসেন। এএফপির এক সংবাদদাতা জানিয়েছেন, রাজধানী কাবুলের প্রায় ৪২০ কিলোমিটার (২৬০ মাইল) দক্ষিণে তীব্র কম্পন অনুভূত হয়েছে।
২০২১ সালে তালেবান সরকার দেশটির ক্ষমতা গ্রহণের পর তিনটি বড় ধরনের ভূমিকম্প দেশটিতে আঘাত হেনেছে। এমনকি দেশটির অর্থনীতির মেরুদণ্ড হিসেবে বিবেচিত বিদেশি সহায়তাও নাটকীয়ভাবে হ্রাস পেয়েছে।
গত আগস্টে দেশটির পূর্বাঞ্চলে ৬ মাত্রার একটি ভূমিকম্প পাহাড়ি গ্রামগুলোকে নিশ্চিহ্ন করে দেয় এবং দুই হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারায়।
২০২৩ সালে ইরান সীমান্তের কাছে পশ্চিম হেরাত শহরে এবং ২০২২ সালে পূর্ব নাঙ্গারহার প্রদেশে শক্তিশালী ভূমিকম্পে শত শত মানুষ নিহত এবং হাজার হাজার ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে যায়।
জাতিসংঘ এবং সাহায্য সংস্থাগুলো সতর্ক করে দিয়েছে যে, আফগানিস্তানে খাদ্য সংকট বাড়ছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন দেশটি খরা, ব্যাংকিং খাতে অর্থনৈতিক বিধিনিষেধ এবং প্রতিবেশী ইরান ও পাকিস্তান থেকে লাখ লাখ আফগান নাগরিকের প্রত্যাবাসনের ফলে ভয়াবহ মানবিক সংকটে ভুগছে।
আফগানিস্তানে ভূমিকম্প বেশ সাধারণ ঘটনা। বিশেষ করে হিন্দুকুশ পর্বতমালা বরাবর যেখানে ইউরেশিয়ান এবং ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটগুলি মিলিত হয়েছে সেখানে প্রায়ই ভূমিকম্প আঘাত হানে।
টিটিএন