ইউক্রেনে শান্তি চুক্তি প্রায় চূড়ান্ত: মার্কিন দূত
ইউক্রেনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিদায়ী দূত কিথ কেলগ বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধের শান্তি চুক্তি এখন খুবই কাছাকাছি এবং তা মূলত দুইটি বড় বিষয় সমাধানের ওপর নির্ভর করছে। যার একটি হলো দোনবাস অঞ্চলের ভবিষ্যৎ এবং অন্যটি হলো জাপোরিঝঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ।
রাশিয়া ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার হামলা শুরু করে। এর আগে দোনবাস অঞ্চলে রুশপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদী ও ইউক্রেনীয় বাহিনীর মধ্যে আট বছরের লড়াই চলছিল। দোনবাস ডোনেৎস্ক ও লুহানস্ক—এই দুই অঞ্চল নিয়ে গঠিত।
ইউক্রেন যুদ্ধ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে প্রাণঘাতী সংঘাত এবং রাশিয়া ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে।
কেলগ রিগ্যান ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোরামে বলেন, আলোচনার অগ্রগতি এখন শেষ ১০ মিটারে, যা তিনি সবচেয়ে কঠিন ধাপ হিসেবে বর্ণনা করেন।
কেলগ বলেন, এই দুইটি বিষয় সমাধান করতে পারলেই বাকি বিষয়গুলো সহজেই এগোবে। আমরা প্রায় পৌঁছে গেছি… সত্যিই খুব কাছাকাছি।
ভিয়েতনাম, পানামা ও ইরাকে যুদ্ধ করা এই সাবেক লেফটেন্যান্ট জেনারেল বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধে হতাহত মানুষের সংখ্যা ভয়াবহ এবং আঞ্চলিক যুদ্ধে এমন মাত্রার ক্ষয়ক্ষতি নজিরবিহীন।
তিনি দাবি করেন, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে দুই পক্ষ মিলিয়ে নিহত ও আহত মিলিয়ে ২০ লাখেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে রাশিয়া ও ইউক্রেন কেউই তাদের প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির নির্ভরযোগ্য সংখ্যা প্রকাশ করে না।
রাশিয়া বলে, পশ্চিমা দেশগুলোর দেওয়া ক্ষতির হিসাব অতিরঞ্জিত। অন্যদিকে ইউক্রেন দাবি করে, রাশিয়া ইউক্রেনের ক্ষয়ক্ষতির সংখ্যা বাড়িয়ে বলে।
বর্তমানে রাশিয়া ইউক্রেনের প্রায় ১৯.২ শতাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণে রেখেছে, যার মধ্যে রয়েছে ২০১৪ সালে দখল করা ক্রিমিয়া, পুরো লুহানস্ক, ডোনেৎস্কের ৮০ শতাংশ–এর বেশি, খেরসন ও জাপোরিঝঝিয়ার বড় অংশ এবং আরও কয়েকটি অঞ্চলের ছোট ছোট এলাকা।
গত মাসে ফাঁস হওয়া যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি প্রস্তাবের ২৮টি খসড়া ইউক্রেন ও ইউরোপীয় নেতাদের উদ্বিগ্ন করে। তারা বলেন, এসব প্রস্তাবে ন্যাটো, ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর সীমাবদ্ধতা এবং রাশিয়ার দখলকৃত অঞ্চলকে স্বীকৃতি দেওয়ার ইঙ্গিত রয়েছে।
রাশিয়া এখন বলছে, প্রস্তাবগুলো ২৭টি পয়েন্টে সাজানো হয়েছে, যা চারটি আলাদা অংশে ভাগ করা হয়েছে। তবে তাদের বিস্তারিত এখনও প্রকাশ করা হয়নি।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি শনিবার জানান, তিনি মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফ এবং ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনারের সঙ্গে দীর্ঘ ও গুরুত্বপূর্ণ ফোনালাপ করেছেন।
ক্রেমলিন শুক্রবার জানায়, সম্ভাব্য শান্তি চুক্তির খসড়া তৈরির মূল দায়িত্ব কুশনারই পালন করবেন বলে তারা আশা করছে।
সূত্র: রয়টার্স
এমএসএম