ভেনেজুয়েলার উপকূল থেকে আরও ট্যাঙ্কার আটক করবে যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্র এই সপ্তাহে একটি ট্যাঙ্কার জব্দ করার পর ভেনেজুয়েলার তেল পরিবহনকারী আরও জাহাজ আটকানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর ওপর চাপ বাড়ানোর অংশ হিসেবেই এই পদক্ষেপ নিচ্ছে দেশটি। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) বিষয়টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছয়টি সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
ভেনেজুয়েলা ২০১৯ সাল থেকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকলেও, এবারই প্রথম দেশটির তেলবাহী কোনো কার্গো বা ট্যাঙ্কার আটকানো হলো। এটি এমন সময়ে ঘটল যখন যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ ক্যারিবীয় অঞ্চলে ব্যাপক সামরিক শক্তি জড়ো করছে এবং প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা বাড়াচ্ছেন।
সর্বশেষ এই পদক্ষেপে ভেনেজুয়েলান তেল পরিবহনকারী জাহাজের মালিক, অপারেটর এবং সামুদ্রিক সংস্থাগুলো সতর্ক হয়ে উঠেছে। অনেকেই পরিকল্পনা অনুযায়ী ভেনেজুয়েলার জলসীমা থেকে আগামী কয়েক দিনে যাত্রা করবে কি না, তা পুনর্বিবেচনা করছে বলে শিপিং খাতের সূত্রগুলো জানায়।
সূত্রগুলোর দাবি অনুযায়ী, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আরও সরাসরি মার্কিন হস্তক্ষেপ দেখা যেতে পারে—বিশেষ করে সেইসব ট্যাঙ্কারকে লক্ষ্য করে, যেগুলো ভেনেজুয়েলার তেল পরিবহনের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় থাকা অন্যান্য দেশ, যেমন ইরান, থেকেও তেল পরিবহনের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে। সংবেদনশীলতার কারণে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রগুলো এমন তথ্য দিয়েছে।
ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি পিডিভিএসএ মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি। দেশটির সরকার এই সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের জাহাজ জব্দের ঘটনাকে চুরি বলে আখ্যা দিয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসন আরও জাহাজ আটকানোর পরিকল্পনা করছে কি না—এ প্রশ্নে হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র ক্যারোলাইন লেভিট সাংবাদিকদের বলেন, তিনি ভবিষ্যৎ কর্মকাণ্ড নিয়ে কথা বলবেন না, তবে যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্টের নিষেধাজ্ঞা নীতি বাস্তবায়ন অব্যাহত রাখবে।
তিনি বলেন, আমরা নিষেধাজ্ঞার অধীনে থাকা জাহাজগুলোকে কালোবাজারি তেল নিয়ে সমুদ্রে চলতে দেবো না—যার অর্থায়ন সারা বিশ্বের দুষ্কৃতিকারী ও অবৈধ শাসনব্যবস্থার মাদক-সন্ত্রাসবাদের জ্বালানি হয়ে ওঠে।
বিষয়টি সম্পর্কে জ্ঞাত একজন ব্যক্তির মতে, যুক্তরাষ্ট্র আরও কয়েকটি নিষিদ্ধ ট্যাঙ্কারের একটি তালিকা প্রস্তুত করেছে, যেগুলো সম্ভাব্য জব্দের লক্ষ্য হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ এবং হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ কয়েক মাস ধরেই এই জব্দ অভিযান পরিকল্পনা করছিল বলে দুজন সূত্র জানায়।
ভেনেজুয়েলার প্রধান রাজস্ব উৎস তেল রপ্তানি কমে গেলে বা বন্ধ হলে মাদুরো সরকারের অর্থনৈতিক চাপ আরও বাড়বে।
সূত্র: রয়টার্স
এমএসএম