বাণিজ্য স্থগিতে ভারতের ক্ষতি কোহলির এক পোস্টের সমান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:৫৫ পিএম, ০৯ আগস্ট ২০১৯

কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের প্রেক্ষিতে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য স্থগিত করেছে পাকিস্তান। আর এ নিয়ে কাশ্মীরকাণ্ডের মূলহোতা ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল বাণিজ্য স্থগিতে ভারতের ক্ষতি দেশটির ক্রিকেট অধিনায়ক বিরাট কোহলির এক পোস্টের সমান বলে মন্তব্য করেছেন।

অজিত দোভাল বৃহস্পতিবার এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘পাকিস্তান আমাদের সঙ্গে সব রকম বাণিজ্য স্থগিত করেছে। এটা ভারতের অর্থনীতির জন্য বিরাট রড় ক্ষতি, যার মূল্য বিরাট কোহলির প্রচারমূলক একটি ইনস্টাগ্রাম পোস্ট থেকে প্রাপ্ত অর্থের সমান। খুবই দুঃখের কথা, এত বড় ক্ষতি এখন আমরা কীভাবে সামাল দেব!’

কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক অবনমন ও দ্বিপক্ষীয় সব ধরনের বাণিজ্য স্থগিতের ব্যাপারে গত বুধবার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ বা এনএসসি। ইসলামাবাদে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার অজয় বিসারিয়াকে সেদিনই বহিষ্কার করে পাকিস্তান। দিল্লি থেকে নিজেদের রাষ্ট্রদূতকেও ফিরিয়ে আনে তারা।

গত ৫ আগস্ট সংবিধানে পাওয়া কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ নামে আলাদা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করে মোদি সরকার। আর মোদি সরকারের এই ‘সাফল্যের’ পথে বড় হাতিয়ার ছিলেন অজিত দোভাল।

কাশ্মীরের যে বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেয়া হচ্ছে এটা জল্পনা শুরু হয় সেদিন থেকে যেদিন অজিত দোভাল কাশ্মীর সফরে যান। গত ৫ আগস্টের কয়েকদিন আগে তিনি কাশ্মীর সফরে গিয়েছিলেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, কাশ্মীর থেকে ফিরে মোদি প্রশাসনকে বিশেষ মর্যাদা বাতিলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে আশ্বস্ত করেন তিনি।

এ ছাড়া চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানে ঢুকে ভারতের বিমান হামলার মূল প্ররোচক হিসেবে অজিত দোভালের নাম আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও আসে। বলা হয়, মোদি তার কাছ থেকে পরামর্শ নেয়ার পরপরই পাকিস্তানের বালাকোটে হামলার নির্দেশ দেন ভারতীয় বিমানবাহিনীকে।

ইনস্টাগ্রামে একেকটি প্রচারণমূলক পোস্ট থেকে ১ কোটি ৬৫ লাখ রুপি আয় করেন ভারতের ক্রিকেট অধিনায়ক বিরাট কোহলি। অজিত দোভালের দাবি, পাকিস্তানের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য করে সমপরিমাণ অর্থই আয় করে ভারত, যা দেশটির অর্থনীতিতে অতি নগণ্য।

আর কাশ্মীরিরা যাতে এর কোনো প্রতিবাদ করতে না পারে তাই সেখানে নেয়া হয়েছে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সেখানকার মানুষ এখন সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ। আজ শুক্রবারের নামাজ স্বতস্ফূর্তভাবে আদায় করতে পারেনি সেখানকার মানুষ। সেনা প্রহরায় তাদের মসজিদে নামাজ পড়তে হয়েছে।

মোদি সরকারের মাস্টারে প্ল্যানের কাছে হেরে নিজেদের স্বায়ত্তশাসন খুঁইয়ে কাশ্মীরের মানুষ এখন বিক্ষুব্ধ। কিন্তু কারফিউ জারি থাকার কারণে তারা সংঘবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদ করতে পারছে না। এ ছাড়া সেখানকার সাবেক দুই মুখ্যমন্ত্রী এবং পাঁচ শতাধিক প্রভাবশালী স্থানীয় নেতাসহ সাধারণ মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বিশ্বের অন্যতম সামরিকায়িত এলাকার একটি হলো কাশ্মীর। ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এতদিন কাশ্মীর প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা ছাড়া কোনো কিছুতেই ভারতীয় আইন মানতে বাধ্য ছিল না। কিন্তু মোদির কট্টর হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার তা বাতিল করেছে। এ ছাড়া রাজ্যের মর্যাদাও হারিয়েছে কাশ্মীর।

এসএ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।