ইসরায়েলের অবরোধে ইতিহাসের ভয়াবহতম স্বাস্থ্য সংকটে গাজা
অডিও শুনুন
গাজায় করোনাভাইরাস পরীক্ষা আর হচ্ছে না, নতুন রোগীদের নিবিড় পরিচর্যা ও অক্সিজেন প্রদানও বন্ধ হওয়ার পথে। ইসরায়েলের অবরোধের কারণে ফিলিস্তিনের এই উপত্যকায় স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বর্তমানের চরম সংকটের মুখে। ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট এ খবর জানিয়েছে।
সোমবার গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তের জন্য পিসিআর পরীক্ষার উপকরণ শেষ হয়ে গেছে। ফলে সেখানে ইতোমধ্যেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া করোনা পরিস্থিতি নির্ধারণ করা আর সম্ভব হচ্ছে না।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গাজায় ২০০ টেস্টিং কিট পাঠানোর ব্যবস্থা করছে। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, এগুলো দিয়ে মাত্র এক সপ্তাহ পরীক্ষা চালানো সম্ভব হবে।
এদিকে, গাজার ৮০ শতাংশ আইসিইউতে ইতোমধ্যেই রোগী ভর্তি রয়েছে। ফলে নতুন রোগী ভর্তি হলে তাদের আর অক্সিজেন প্রদান সম্ভব হবে না বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
১৩ বছর ধরে চলা ইসরায়েলি অবরোধের কারণে গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সবসময়ই সংকটে ছিল। তবে অবরোধের পাশাপাশি মহামারির কারণে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার অবস্থা তৈরি হয়েছে।
করোনায় আক্রান্ত হওয়া সেখানকার জ্যেষ্ঠ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আবদুল্লাহ হাজ বলেন, ‘গাজায় এখন পর্যন্ত আমরা যত স্বাস্থ্য সংকট মোকাবিলা করেছি, এর মধ্যে এখনকার পরিস্থিতিই সবচেয়ে ভয়াবহ।’
তিনি জানান, ২০১৪ সালের ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধের চেয়েও এই পরিস্থিতি বেশি সংকটময়। সেসময় এক হাজার ফিলিস্থিনি নিহত ও আরও ১১ হাজার আহত হয়েছিলেন।
‘আমাদের চোখের সামনেই স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক সহায়তা যদি আমরা না পাই তাহলে মৃত্যুই হবে শেষ পরিণতি’, যোগ করেন হাজ।
বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চল গাজায় করোনা সংক্রমণ রোধে সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস সেখানে নতুন করে কড়া লকডাউন জারি করেছে। তবে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, ২৫ মাইল দীর্ঘ ও ২০ লাখ লোকের এই আবাসস্থলে লকডাউন পুরোপুরি কার্যকর প্রায় অসম্ভব।
ডব্লিউএইচও’র নিয়মিত পরীক্ষা এবং মিসর ও ইসরায়েল থেকে আসা প্রত্যেকের আইসোলেশন কার্যকর করার ফলে গাজা করোনাভাইরাসের প্রথম ঢেউ উতরে যেতে সক্ষম হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে সংক্রমণ অনেক ছড়িয়ে পড়ায় ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সংকটে পরিস্থিতি ক্রমেই বিপজ্জনক হয়ে উঠছে।
এমকে/জেআইএম