করোনার ধাক্কা: এ বছর বালিতে বিদেশি পর্যটক গেছেন ৪৫ জন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:৪০ পিএম, ২১ ডিসেম্বর ২০২১

করোনা মহামারির কারণে বিশ্বব্যাপী বড় ধাক্কা খেয়েছে পর্যটনখাত। দেশে দেশে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, লকডাউন, সামাজিক দূরত্বের মতো বিধিনিষেধ প্রাণহানি ঠেকাতে ভূমিকা রাখলেও মহামারির বড় প্রভাব পড়েছে আর্থিক খাতে। সবচেয়ে বেশি শোচনীয় অবস্থার মধ্যে পড়েছে পর্যটননির্ভর দেশগুলো। বিশ্বের ভ্রমণ পিপাসুদের তীর্থস্থান ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপের মতো বড় ধাক্কা হয়তো অন্য কোনো দেশের কোনো পর্যটন স্পট পায়নি।

২০২১ সাল শুরুর পর মিলিয়নেরও বেশি বিদেশি পর্যটককে সাদরে গ্রহণ করার জন্য প্রস্তুত চলছিল বালিতে। কিন্তু দেশটির পরিসংখ্যান বলছে, ২০২১ সালে মাত্র ৪৫ জন বিদেশি পর্যটককে স্বাগত জানাতে পেরেছে অপার সৌন্দর্যের এ লীলাভূমি। অথচ ২০১৯ সালে দেশটিতে বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা ছিল ৬২ লাখ এবং যে বছর করোনা প্রথম আঘাত হানে, অর্থাৎ ২০২০ সালে ছিল ১০ লাখ।

বালি প্রদেশের পর্যটন বিভাগের প্রধান নিওমান গেদে গুনাদিকা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, এটি আমাদের এ পর্যন্ত রেকর্ড করা বিদেশি পর্যটকদের সর্বনিম্ন সংখ্যা।

jagonews24

বালিতে এই দুই ডিজিটের পর্যটক সংখ্যা ছিল ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত। বিষয়টি বালির সেন্ট্রাল পরিসংখ্যান ব্যুারোও নিশ্চিত করে। ডানপাসার থেকে ১৩ কিলোমিটার দক্ষিণে বালির মূল বিমানবন্দর নাগুরাহ রাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (ডিপিএস) দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় তারা ব্যক্তিগত পরিবহনে বালি ঘুরতে যান। গত ১৪ অক্টোবর চালু করা হয় এই বিমানবন্দর। তবে শুধু অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তা থেকে প্রাথমিকভাবে যেতে পেরেছে বালিতে।

বালি ভ্রমণে যেতে হলে বিদেশি পর্যটকদের অবশ্যই করোনার বিধিনিষেধের শর্ত মানতে হয়। তাদের অবশ্যই বিজনেস ভিসা নিতে হয় যার মূল্য ৩০০ ডলার এবং সেখানে বর্তমানেও কোনো ট্যুরিস্ট ভিসা চালু নেই। তাদের অবশ্যই পিসিআর টেস্ট করাতে হয় এবং বিশেষ স্বাস্থ্য বিমা কিনতে হয়। এছাড়া অন্যান্য সময়ের চেয়ে যাওয়ার খরচও বেড়ে গেছে যেখানে সরাসরি ভ্রমণে খরচ কম পড়তো।

jagonews24

ব্রিটেনের জাস্টিনা রুচা তার স্বামীর সঙ্গে বালি ভ্রমণে যেতে চান। ওই দ্বীপে এটি তাদের প্রথম ভ্রমণ হবে, যেখানে অনেক দিন ধরেই যাওয়ার জন্য পরিকল্পনা করছিলেন তিনি। ওই নারী বলেন, ইন্দোনেশিয়ার সরকার পুরোপুরি টিকা নেওয়াদের ক্ষেত্রেও ১০ দিনের কোয়ারেন্টাইন ব্যবস্থা চালু রেখেছে। এটি আসলে কঠিন ব্যাপার।

বিদেশি পর্যটকদের জন্য বালির করোনা সম্পর্কিত যে কোনো পলিসি জাকার্তার কেন্দ্রীয় সরকার ঠিক করে দেয়। মূলত কোয়ারেন্টাইনের সময় সংক্ষিপ্ত হলেও সম্প্রতি ওমিক্রন আতঙ্কে তা আবার বাড়ানো হয়েছে।

jagonews24

আগামী ২৬ ডিসেম্বর রুচা ও তার স্বামী জাকার্তা পৌঁছাবেন এবং সেখানে ১০ দিনের কোয়ারেন্টাইন শেষে বালির উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন। তবে তিনি খোঁজ খবরও রাখছেন নতুন কোনো বিধিনিষেধ আসছে কি না। তিনি বলেন, করোনার আগে ইউরোপ থেকে বালি ভ্রমণে যেতে পছন্দ করতো অনেকেই।

বালির বাদুং জেলার ইন্দোনেশিয়ান হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান রে সূর্যাবিজয়া রুচার সঙ্গে একমত পোষণ করে বলেন, এসব বাধা পেরিয়ে বিদেশি পর্যটকদের বালিতে আসা বেশ কঠিন। তবে স্থানীয় পর্যটকদের কারণে আশার আলো দেখা যাচ্ছে।

jagonews24

রে জানান, বালির হোটেলগুলোতে এখন পর্যটক সংখ্যার হার ৩৫ শতাংশ। এ সপ্তাহে প্রায় ১৩ হাজার স্থানীয় পর্যটক পেয়েছে বালি।

সূত্র: সিএনএন

এসএনআর/এইচএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।