বাঁধ ভাঙবে ভ্রমণে, পর্যটন শিল্পে সুদিনের হাতছানি
অর্থনীতিবিদরা যাকে বলেন ‘পেন্ট-আপ ডিমান্ড’, বাংলায় তার অর্থ হতে পারে অস্বাভাবিক চাহিদা বৃদ্ধি। কিন্তু ২০২৩ সালে পর্যটনে সুদিন ফেরার বিষয়টিকে আরও একটি নাম দিয়েছেন করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে ঘরবন্দি হয়ে পড়া মানুষেরা: রিভেঞ্জ ট্যুরিজম (প্রতিশোধমূলক পর্যটন)। মহামারিকে তারা দেখিয়ে দিতে চান, আসল ‘বস’ কে!
মহামারির প্রাথমিক ধাক্কা সামলে ২০২২ সালে আন্তর্জাতিক পর্যটক আগমন বেড়েছে একলাফে ৬০ শতাংশ। ২০২৩ সালে তা আরও ৩০ শতাংশ বেড়ে ১৬০ কোটিতে পৌঁছাতে পারে। এরপরও ২০১৯ সালের তুলনায় সেটি যথেষ্ট কম। ওই বছর আন্তর্জাতিক পর্যটক আগমনের সংখ্যা ছিল প্রায় ১৮০ কোটি।
তবে পর্যটকদের খরচাপাতির দিক থেকে ২০১৯ সালকে প্রায় ছুঁয়ে ফেলবে ২০২৩। মহামারির আগের বছরটিতে এর পরিমাণ ছিল ১ দশমিক ৪ লাখ কোটি মার্কিন ডলার। মূল্যস্ফীতির কারণে সব কিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় নতুন বছরেও পর্যটকদের পকেট থেকে প্রায় একই পরিমাণ অর্থ বেরোতে পারে।
২০২২ সালে আন্তর্জাতিক পর্যটনে যথেষ্ট ক্ষতি করেছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে চীনের জিরো-কোভিড নীতিও। প্রাক-মহামারি আমলে বিশ্বব্যাপী প্রতি ১০ জন আন্তর্জাতিক পর্যটকের মধ্যে একজন ছিলেন চীনা নাগরিক।
২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে চীনা পর্যটকের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ৫ কোটি ৯০ লাখে পৌঁছাতে পারে। তবে ২০১৯ সালের সাড়ে ১৫ কোটির তুলনায় এটি নিতান্তই কম।
পর্যটনের সুদিন ফেরায় উড়োজাহাজগুলোকে আর অলস বসে থাকতে হবে না। তাতে লাভজনক হয়ে উঠতে পারে বিমান শিল্প। তবে করোনার কারণে ২০২৩ সালেও কর্মী সংকট থাকতে পারে, বিশেষ করে আমেরিকা ও ইউরোপ অঞ্চলে।
অনলাইন বৈঠক জনপ্রিয় হয়ে ওঠায় কমতে পারে ব্যবসায়িক ভ্রমণ। তবে ক্রীড়া ও অন্যান্য অনুষ্ঠানগুলোর কারণে আন্তর্জাতিক ভ্রমণ ফের চাঙ্গা হবে।
চীন আগামী জুনে এএফসি এশিয়ান কাপ ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন থেকে পিছু হটলেও সেপ্টেম্বরে বিলম্বিত এশিয়ান গেমস আয়োজন করবে। আর চীনা সীমান্ত ধীরে ধীরে উন্মুক্ত হওয়ায় নতুন বছরে এশিয়াজুড়ে আন্তর্জাতিক পর্যটক আগমনও দ্বিগুণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
হজের ক্ষেত্রে বহু পুরোনো লটারি ব্যবস্থা থেকে কোটা ব্যবস্থায় যাচ্ছে সৌদি আরব। এর ফলে আরও বেশি বিদেশি মুসলিম হজ করতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে যাওয়ার সুযোগ পাবেন।
২০২৩ সালেই ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত হবে রাগবি বিশ্বকাপ। এটিকে পর্যটনের খনিতে রূপান্তরিত করতে পারে ইউরোপীয় দেশটি।
করোনার বাড়বাড়ন্ত না থাকলে নতুন বছরে ক্রুজ-শিপ বুকিংও প্রাক-মহামারি পর্যায়ে ফিরতে পারে। সেদিকে নজর রেখে নতুন একটি ক্রুজ লাইনই চালু করতে যাচ্ছে ফ্রান্স।
সূত্র: দ্য ইকোনমিস্ট
কেএএ/