মেক্সিকোয় ‘এল চাপো’র ছেলেকে গ্রেফতারের জেরে সংঘর্ষ, নিহত ২৯

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭:২১ পিএম, ০৭ জানুয়ারি ২০২৩
গুজম্যান লোপেজকে গ্রেফতারের পর সংবাদ সম্মেলন করেন মেক্সিকোর প্রতিরক্ষামন্ত্রী লুয়িস ক্রেসেনসিও সান্দোভাল /ছবি: সংগৃহীত

ম্যাক্সিকান ড্রাগ লর্ড হিসেবে খ্যাত ও আন্তর্জাতিক অপরাধচক্র সিনালোয়া কার্তেলের সাবেক নেতা ‘এল চাপো’র ছেলে গুজম্যান লোপেজ গ্রেফতার হওয়া কেন্দ্র করে ঘটা সহিংসতায় অন্তত ২৯ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ১৯ জন লোপেজের সমর্থক ও ১০ জন সামরিক বাহিনীর সদস্য।

শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে মেক্সিকোর প্রতিরক্ষামন্ত্রী লুয়িস ক্রেসেনসিও সান্দোভাল এসব তথ্য জানান।

চলতি সপ্তাহে মেক্সিকোয় হতে যাওয়া একটি শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে উত্তর আমেরিকান নেতাদের। সেখানে থাকবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও। এর আগেই লোপেজকে গ্রেফতার করা হলো।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় ভোরে লোপেজকে (৩২) গ্রেফতার করে মেক্সিকোর নিরাপত্তা বাহিনী। যে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়, সেখান থেকে তাকে হেলিকপ্টারে করে রাজধানী মেক্সিকো সিটিতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিয়ে ঘেরা কারাগারে রাখা হয়।

এর জেরে লোপেজের সমর্থক ও নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে কয়েক ঘণ্টা ধরে ব্যাপক বন্দুকযুদ্ধ চলে। তাকে গ্রেফতারের জেরে অত্যন্ত প্রভাবশালী অপরাধচক্র সিনালোয়া কার্তেলের সদস্যরা ব্যাপক তাণ্ডব শুরু করেন।

চক্রটির সদস্যরা যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দেন, সড়ক অবরোধ করেন ও সিনালোয়ার প্রধান শহর কুলিয়াকানসহ এর আশেপাশে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে লড়াই শুরু করেন।

সান্দোভাল আরও জানান, দুই পক্ষের লড়াইয়ে মোট ২৯ জন নিহত হন। তবে এতে কোনো বেসামরিকের মৃত্যু হয়নি। বৃহস্পতিবারের ওই অভিযানে লোপেজের পাশাপাশি আরও ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়। 

তিনি আরও জানান, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সিনালোয়ায় বর্ধিত নিরাপত্তা পরিস্থিতি বজায় রাখা হবে। সেখানে অতিরিক্ত আরও এক হাজার সামরিক সদস্য পাঠানো হবে। 

কুলিয়াকানে দাঙ্গা চলাকালে একটি বিমানবন্দরেও হামলা চালান লোপেজের সমর্থকরা। এ সময় সেখানে থাকা দুটি উড়োজাহাজে গুলি লাগে, যার মধ্যে একটি উড়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এ ঘটনার পর সিনালোয়ার তিনটি বিমানবন্দরের শতাধিক ফ্লাইট বাতিল করা হয়।

এদিকে, মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাদর বলেন, গুজম্যানকে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা আপাতত নেই। কারণ, তাকে গ্রেফতারের সময় যুক্তরাষ্ট্রের কোনো বাহিনীর সহায়তা নেওয়া হয়নি।

লোপেজের বাবা এল চাপো গুজম্যানকে ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। সেখানে বিচারের পর এখন তিনি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করছেন।

কয়েক বছর ধরে লোপেজকেও তাদের হাতে তুলে দেওয়া জন্য অনুরোধ করে আসছিল যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২০২১ সালে লোপেজকে গ্রেফতারে সহায়তা করার বিনিময়ে ৫০ লাখ ডলার পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দেয়।

এর আগে ২০১৯ সালেও মেক্সিকোর নিরাপত্তা বাহিনী লোপেজকে গ্রেফতার করেছিল, কিন্তু তার সমর্থকদের সহিংস হুমকি এড়াতে কিছুক্ষণের মধ্যেই তাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় তারা।

সূত্র: রয়টার্স

এসএএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।