শুভ জন্মদিন স্বাধীনতার বন্ধু!
সারা বিশ্বের কাছে তার পরিচয় বিখ্যাত রক ব্যান্ড বিটলসের লিড গিটারিস্ট হিসেবে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের কাছে তিনি কেবল সেখানেই সীমাবদ্ধ নন, সমাদৃত দুঃসময়ের এক অকৃত্রিম বন্ধু বলেও।
তিনি এ দেশের মুক্তিযুদ্ধের বন্ধু, মানুষের বন্ধু জর্জ হ্যারিসন। একাত্তরে তার কণ্ঠে গাওয়া ‘বাংলাদেশ’ গানটি আলোড়ন তুলেছিলো সারা বিশ্বে। সেই গান দারুণ ভূমিকা রেখেছিলো বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে জনমত তৈরিতে।
আজ এই কিংবদন্তির জন্মদিন। সারা দেশবাসীর মতো জাগো নিউজ পরিবারের পক্ষ থেকেও রইল এই বিশেষ দিনের শ্রদ্ধাঞ্জলি।
৬০ এর দশকে তরুণদের মাঝে দুনিয়াজোড়া যে বিদ্রোহ ও নানান অস্থিরতার বিরুদ্ধে যে প্রতিবাদী বহ্ণিশিখা জ্বলে উঠেছিলো গানের ব্যান্ড হিসেবে বিটলস ছিল তারই প্রতিচ্ছবি। সংগীত দিয়ে পুরো একটা প্রজন্মকে আচ্ছন্ন করে রেখেছিল তারা। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে বাংলাদেশের সাধারণ জনগণের উপর পাকিস্তানের নির্মম অত্যাচার বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরার জন্য ও শরনার্থিদের জন্য অর্থ যোগান দেয়ার লক্ষ্যে ১৯৭১ সালের ১ আগস্ট মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেন অনুষ্ঠিত হয় ‘দ্য কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’।
বাংলার আরেক বন্ধুবর রবি শঙ্করের সাথে একাত্ম হয়ে সেই কনসার্টের অন্যতম আয়োজক হিসেবে এগিয়ে এসেছিলেন জর্জ হ্যারিসন। কনসার্টের শেষ দিকে হ্যারিসন ‘বাংলাদেশ’ নাম সেই বিখ্যাত গানটি গেয়েছিলেন। করুণ আর্তনাদের সুরে তিনি বিশ্ব দরবারে পৌঁছে দিয়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধকালীন মানুষের দুঃখ দুর্দশার কথা।
গানটি আজও সব প্রজন্মের বাঙালির কাছে আবেগের, শ্রদ্ধা আর গর্বের। তারই প্রমাণ মিলছে বাংলাদেশিদের ফেসবুক অ্যাকাউন্টের দেয়ালে দেয়ালে। নানা বয়সের মানুষেরা জর্জ হ্যারিসনকে বন্ধু বলে সম্বোধন করে তার স্মৃতি ও বাংলাদেশের জন্য তার ভূমিকার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন।
তারই ভিড়ে আছে কিছু আক্ষেপও। সিনথিয়া যুঁথি নামের ইডেন কলেজের এক ছাত্রী লিখেছেন, ‘খুব ভালো লাগতো যদি আজ আমাদের গণমাধ্যমে পরমপ্রিয় বন্ধু হ্যারিসনকে নিয়ে কোনো আয়োজন দেখতে পেতাম। খুব আনন্দ ভরে অংশ নিতাম যদি কোনো অনুষ্ঠান হতো হ্যারিসনকে নিয়ে সরকারিভাবে, বেসরকারিভাবে নানা সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর আয়োজনে।’
কেউ কেউ জর্জ হ্যারিসন ও রবি শংকরের অবদানকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে স্কুল-কলেজ পর্যায়ে ‘বাংলাদেশ’ গানের ইতিহাসকে পাঠ্য করার দাবিও তুলেছেন।
আরএএইচ/এলএ/আরআইপি