দ্য ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন

চীনের অর্থনৈতিক সংকটে যেসব প্রভাব পড়বে বিশ্বে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৪৬ পিএম, ২৩ আগস্ট ২০২৩

চীনের অর্থনীতি ফের পুনরুজ্জীবিত হবে বলে মাত্র কয়েক মাস আগেও আশা করা হচ্ছিল। বাতিল করা হয় শূন্য করোনা নীতি। সবাইকে উন্মুক্তভাবে চলাফেরার স্বাধীনতা দেওয়া হয়। তবে সেই প্রত্যাশিত প্রত্যাবর্তন হতাশায় রূপ নিচ্ছে। অর্থনীতিবিদরা ধারণা করেছিল চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে বার্ষিক জিডিপি হার ১০ শতাংশে পৌঁছাতে পারে। কিন্তু সেটা ৩ শতাংশের বেশি অর্জন করাটাই কষ্টসাধ্য হয়।

দেশটির অর্থনীতি এখন ডিফ্লেশনের মধ্যে পড়ে গেছে। অর্থাৎ পণ্য ও সেবার মানের দরপতন হয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। এক্ষেত্রে দেশটির কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া সন্তোষজনক নয়। তাছাড়া প্রপার্টি সংকট আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। ফলে চীনের অর্থনীতি দীর্ঘমেয়াদি সংকটের দিকে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তবে চিন্তার বিষয় হলো বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে কোনো সমস্যা দেখা দিলে তা পুরো বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলে। চীনের অর্থনীতি অনেক বড়। তাই তাদের অর্থনৈতিক পরিবর্তনের প্রভাব বিশ্ব প্রবৃ্দ্ধিতে পড়ে। একইভাবে চীনের অর্থনীতি যদি ধীর হয় তাহলে অন্যান্য দেশের প্রবৃদ্ধিতে নেতিবাচক পূর্বাভাস আসে। চীনের হাউজহোল্ড কোম্পানিগুলো যদি পণ্য ও সার্ভিস কেনা কমিয়ে দেয় তার প্রভাব পড়বে উৎপাদক ও ভোক্তাদের ওপর। কিছু কিছু ক্ষেত্রে চীনের জন্য যা কঠিন তা অন্যদের জন্য মাথা ব্যথার কারণ। তবে কিছু কিছু কোম্পানির জন্য আবার স্বস্তিদায়ক।

চীনের অর্থনৈতিক মন্দায় বেশি প্রভাব পড়ে পণ্য রপ্তানিকারকদের ওপর। বিশ্ব জ্বালানি তেলের এক-পঞ্চমাংশ, পরিশোধিত তামা, নিকেল ও দস্তার অর্ধেক এবং লোহার তিন-পঞ্চমাংশেরও বেশি যায় চীনের পেটে। চীনের প্রপার্টি সংকটের মানে হলো এসব পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়া, যা কিছু কিছু দেশের জন্য ধাক্কা। যেমন জাম্বিয়া তামাসহ বেশ কিছু ধাতু চীনে রপ্তানি করে, যা দেশটির জিডিপির ২০ শতাংশ। একইভাবে চীনে কয়লা ও আয়রণ সরবরাহ করে অস্ট্রেলিয়া। তাই সেখানেও প্রভাব পড়ছে।

আরও পড়ুন>যুক্তরাষ্ট্রে দেউলিয়াত্ব সুরক্ষার জন্য চীনা সংস্থার আবেদন

অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জার্মানিসহ পশ্চিমাদেশগুলো। এর অন্যতম কারণ হলো চীন থেকে চাহিদার ঘাটতি। পশ্চিমাদেশের অনেক কোম্পানিরই আয় নির্ভর করে চীনের ওপর। ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও জাপানের অন্তত ২০০ মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি চীনে ২০ শতাংশ পণ্য বিক্রি করে, যা দিয়ে তাদের আয় ৭০০ বিলিয়ন ডলার। টেসলা তাদের এক-পঞ্চমাংশ গাড়ি চীনে বিক্রি করে থাকে।

চীনে যদিও সংকট গভীর হয় অথবা অব্যাহত থাকে তাহলে তা বৈশ্বিক আর্থিক বাজারেও প্রভাব ফেলবে। ২০১৮ সালে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, চীনে একটি ‘হার্ড ল্যান্ডিং’ এর ফলে বিশ্বব্যাপী সম্পদের দাম কমে যায় ও ধনী-বিশ্বের মুদ্রা বৃদ্ধি পায়।

আরও পড়ুন>মস্কোর ভবনে ড্রোন হামলা

দীর্ঘস্থায়ী মন্দা চীনকে অভ্যন্তরীণ মুখী করতে পারে। পাশাপাশি বিনিয়োগ ও ঋণও কমিয়ে দিতে পারে দেশটি।

এমএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।