ট্রাম্পের বাণিজ্যযুদ্ধ মোকাবিলায় প্রস্তুত চীন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:০২ পিএম, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
চীনের বন্দরে একটি বাণিজ্যিক জাহাজ। ফাইল ছবি: এএফপি

ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের শুল্ক নীতিতে চীনকে বড় ধরনের অর্থনৈতিক চাপে পড়তে হয়েছিল। এবার তিনি যখন আবার হোয়াইট হাউজে ফিরেছেন, তখন চীন আগের মতো আর অসহায় নয়, বরং লড়াইয়ের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত।

চীনের পূর্ব উপকূলে এক কারখানায় তৈরি হচ্ছে আমেরিকান কাউবয় বুট। নিখুঁতভাবে চামড়া কাটা, সেলাই ও সংযোজনের শব্দে মুখরিত কারখানাটি একসময় বছরে প্রায় ১০ লাখ বুট বিক্রি করতো। কিন্তু ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতির কারণে এখন তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত।

আরও পড়ুন>>

প্রথম মেয়াদে ট্রাম্পের শুল্ক নীতির ফলে যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হয়। এখন দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর তিনি চীনা পণ্যে নতুন করে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। যদিও বর্তমানে তার মনোযোগ মেক্সিকো ও কানাডার মতো মিত্র দেশগুলোর ওপরই বেশি। তবে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, চীনের বিরুদ্ধে বড় ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া কেবল সময়ের ব্যাপার।

চীনা ব্যবসায়ীদের প্রস্তুতি

চীনের জিয়াংসু প্রদেশের এক কারখানার ব্যবস্থাপক পেং জানান, ট্রাম্পের আগের শুল্কনীতির কারণে তাদের অর্ডার অনেক কমে গেছে। একসময় যেখানে ৫০০ কর্মী কাজ করতেন, সেখানে এখন মাত্র ২০০ জন টিকে রয়েছেন।

শুল্কের চাপ এড়াতে অনেক চীনা কোম্পানি উৎপাদন কারখানা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সরিয়ে নিচ্ছে। ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া ও অন্যান্য দেশে কারখানা স্থানান্তরের প্রবণতা বাড়ছে, যেখানে শ্রম খরচ তুলনামূলক কম।

কম্বোডিয়ার রাজধানী নমপেনের কাছে চীনা ব্যবসায়ী হুয়াং ঝাওডং তার দ্বিতীয় কারখানা স্থাপন করেছেন। তার মতে, মার্কিন ক্রেতারা এখন পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিচ্ছেন—যদি উৎপাদন অন্য দেশে স্থানান্তর না করা হয়, তাহলে তারা অর্ডার বাতিল করবেন।

চীনের কৌশল

বাণিজ্যযুদ্ধের জন্য চীন নিজেকে বিভিন্নভাবে প্রস্তুত করছে। বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগের মাধ্যমে চীন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ব্যাপক বিনিয়োগ করেছে। বর্তমানে চীনের মোট আমদানি-রপ্তানির অর্ধেকের বেশি অংশীদার এই অঞ্চলের দেশগুলো।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদেও শুল্ক আরোপ করলে চীন তার বাণিজ্য সম্পর্ক আরও বিস্তৃত করতে বাধ্য হবে। আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকাতেও বিনিয়োগ বাড়ানোর কথা ভাবছে দেশটি।

ট্রাম্প চীনের ওপর আরও কঠোর শুল্ক আরোপ করলে বৈশ্বিক বাণিজ্যে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে। তবে চীন এবার প্রস্তুত এবং বিকল্প পথ খুঁজতে শুরু করেছে। এখন দেখার বিষয়, দুই দেশের কৌশলগত সিদ্ধান্ত বিশ্ববাণিজ্যকে কতটা প্রভাবিত করে।

সূত্র: বিবিসি
কেএএ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।