চিফ প্রসিকিউটর
কলেজছাত্র হৃদয়ের লাশ রাতের আঁধারে নদীতে ফেলে দেয় পুলিশ
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকায় গুলিতে নিহত কলেজছাত্র হৃদয় হোসেনের লাশ পুলিশ রাতের আঁধারে নদীতে ফেলে দেয় বলে জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
হৃদয়কে গুলি করার ভিডিওটি সোমবার (১৩ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনাল–১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক প্যানেলে দ্বিতীয় দিনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সময় প্রদর্শন করা হয়। এ সময় চিফ প্রসিকিউটর ট্রাইব্যুনালকে এ তথ্য জানান।
ভিডিওটিতে দেখা যায়, গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনার পতনের পর গাজীপুরের কোনাবাড়ী থানা এলাকায় বিজয় মিছিল বের করে ছাত্র-জনতা। আর এ মিছিলে অংশ নেন হৃদয়। মুহূর্তেই ছাত্র-জনতার ওপর গুলি ছুড়তে থাকে পুলিশ। জীবন বাঁচাতে সবাই আশ্রয় নেয় নিরাপদ স্থানে। কিন্তু হৃদয়কে ধরে আনেন কয়েকজন পুলিশ সদস্য। ঘিরে রাখা হয় তাকে। একপর্যায়ে বড় লাঠি নিয়ে একজন আঘাত করতে এগিয়ে আসতেই আরেকজন এই তাকে চড় মারেন।
আরও পড়ুন
৪৮ জেলায় ৪৩৫ স্পটে পুলিশ-যুবলীগ হত্যাকাণ্ড ঘটায়: তাজুল ইসলাম
আস্থা না পাওয়ায় অনেক গুমের ভুক্তভোগী মামলার সাহস পাচ্ছেন না
সাক্ষী না আসায় প্রসিকিউশনের প্রতি ট্রাইব্যুনালের অসন্তোষ প্রকাশ
হঠাৎ কিছু বুঝে না উঠতেই হৃদয়কে পেছন থেকে গুলি করেন কনস্টেবল আকরাম। আর এতেই প্রাণ হারান তিনি।
হৃদয়ের বিষয়ে ট্রাইব্যুনালকে তাজুল ইসলাম বলেন, কলেজছাত্র হৃদয়ের লাশটি রাতের আঁধারে গাজীপুরের কড্ডা নদীতে ফেলে দেয় পুলিশ। শহীদ হৃদয়কে কাছ থেকে গুলি করেন কোনাবাড়ী থানার কনস্টেবল আকরাম। এ ব্যপারে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন ওই কনস্টেবল।
পরে তদন্ত সংস্থা শহীদ হৃদয়ের লাশের সন্ধানে কড্ডা নদীতে ডুবুরি নামিয়ে খোঁজ করে। কিন্তু নদীটি প্রচণ্ড খরস্রোতা হওয়ায় লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তবে লাশ না পেলেও হৃদয়কে গুলি করা পুলিশ কনস্টেবল আকরাম স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
হৃদয়ের বাড়ি টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার আলমনগর গ্রামে। তার বাবার নাম লাল মিয়া। হৃদয় হেমনগর ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। পড়ালেখার পাশাপাশি কোনাবাড়ীতে অটোরিকশা চালাতেন তিনি।
এফএইচ/ইএ/জিকেএস