শিক্ষককে হেনস্তা: বিচারবিভাগীয় তদন্ত চেয়ে করা রিট শুনানি মুলতবি
নড়াইলে কলেজশিক্ষক স্বপন কুমার বিশ্বাসকে গলায় জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তার ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে দায়ের করা রিটের ওপর শুনানি মুলতবি (স্ট্যান্ডওভার) করেছেন হাইকোর্ট।
মুলতবি (স্ট্যান্ডওভার) করার বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন রিটকারী অ্যাডভোকেট পূর্ণিমা জাহান।
এ বিষয়ে শুনানির জন্যে উপস্থাপন করার পরে বুধবার (৬ জুলাই) হাইকোর্টের বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তী ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে আজ রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার অনিক আর হক ও অ্যাডভোকেট পূর্ণিমা জাহান।
শুনানির শুরু করার সময়ে আদালতে রিটকারী আইনজীবী পূর্ণিমা জাহান বিরূপ মন্তব্য করেন। এজন্য আদালত ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ সময় ক্ষমা চান রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট পূর্ণিমা জাহান। পরে রিটটি শুনানির জন্যে (স্ট্যান্ডওভার) মুলতবি করা হয়।
গত ৪ জুলাই নড়াইলে কলেজশিক্ষক স্বপন কুমার বিশ্বাসকে গলায় জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তার ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে দায়ের করা রিটের ওপর শুনানি করবেন মর্মে গ্রহণ করেছিলেন হাইকোর্ট।
এর আগে রিটটি আদালতে উপস্থাপন করেন আইনজীবী পূর্ণিমা জাহান। তিনি জানান, আদালতে রিট আবেদনটি শুনানির জন্য উপস্থাপন করার পরে প্রথমে অন্য কোনো বেঞ্চে যেতে বলেন। পরে আবার আদালত অনুমতি দেন। তারই ধারাবাহিকতায় আজ সেটি শুনানির তালিকায় উঠে।
এর আগে গত ৩০ জুন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতে সহায়তার অভিযোগ তুলে নড়াইলের কলেজ শিক্ষক স্বপন কুমার বিশ্বাসের গলায় জুতার মালা পরানোর ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্ত চেয়ে রিট দায়ের করতে গেলে অনুমতি দেন না আদালত।
মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পক্ষে অ্যাডভোকেট পূর্ণিমা জাহান রিটটি ফাইল করেন। রিটের পক্ষে শুনানি করবেন অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম (জেড আই) খান পান্না।
এর আগে গত ২৮ জুন শিক্ষকের গলায় জুতার মালা পরানোর ঘটনায় প্রয়োজনীয় আদেশ চেয়ে বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন এ আইনজীবী। পরে এ বিষয়ে রিট করার পরামর্শ দেন বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
ওইদিন আদালতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে আনেন আইনজীবী পূর্ণিমা জাহান। তখন হাইকোর্ট বলেন, আপনারা রিট আবেদন নিয়ে আসুন। আমরা শুনবো।
জানা গেছে, ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সাময়িক বহিষ্কৃত মুখপাত্র নূপুর শর্মার ছবি দিয়ে এক কলেজছাত্রের ফেসবুকে পোস্ট ঘিরে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। গত ১৮ জুন দিনভর নড়াইল সদর উপজেলার মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ ও সহিংসতা চলে।
ওইদিন বিকেলে পুলিশের পাহারায় ক্যাম্পাস ছাড়ছিলেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস। ওইসময় কতিপয় ব্যক্তি এসে অধ্যক্ষের গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেন। শিক্ষক স্বপন কুমার হাত উঁচিয়ে ক্ষমা চাইতে থাকেন। পরে তাকে তুলে নেয়া হয় পুলিশের গাড়িতে। গুজব ছড়ায়, নূপুর শর্মার ছবি পোস্ট করা শিক্ষার্থীর পক্ষ নিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ।
তবে পুলিশের উপস্থিতিতে কলেজশিক্ষকের গলায় জুতার মালা পরানোর ঘটনায় সারাদেশে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
এফএইচ/জেএস/জেআইএম