সুপ্রিম কোর্ট বার নির্বাচন

পুলিশের হামলার তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে রিটের শুনানি ২৭ মার্চ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:১৭ পিএম, ২১ মার্চ ২০২৩
ফাইল ছবি

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আইনজীবী ও সাংবাদিকদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জের ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠনের নির্দেশনা চেয়ে করা রিট শুনানির জন্য ২৭ মার্চ দিন রেখেছেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার (২১ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. মাহমুদ হাসান তালুকদারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আদালতে আজ রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী মাহবুব উদ্দিন খোকন ও সম্পাদক প্রার্থী মো. রুহুল কুদ্দুস উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়। তার সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আব্বাছ উদ্দিন।

আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্টে পুলিশের বেপরোয়া হামলার শিকার সাংবাদিকরা

এর আগে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে আজ রিটটি শুনানির জন্যে উপস্থাপন করা হয়। এরপর শুনানি নিয়ে আদালত ২৭ মার্চ শুনানির জন্য দিন নির্ধারণ করেন। গত ১৯ মার্চ ওই রিট করেন বিএনপি-সমর্থিত প্যানেলের সভাপতি-সম্পাদকসহ ১৪ প্রার্থী। এতে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের প্রতি ওই নির্দেশনা দেওয়ার আরজি রয়েছে।

রিটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের (জন নিরাপত্তা বিভাগের) সচিব, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার, পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) উপ-কমিশনার ও শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বিবাদী করা হয়।

আবেদনে ১৫ মার্চ আবেদনকারীদের, আইনজীবী ও সাংবাদিকদদের পেটানোর ঘটনা কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত হবে না- সেই মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে।

দুই দিনব্যাপী নির্বাচনের শেষ দিন বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) দিনগত রাতে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এতে ১৪টি পদের সব কয়টিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেল জয়ী হয়েছে।

আরও পড়ুন: ভোটের আগের রাতে ব্যালট ছেঁড়ার অভিযোগ বিএনপিপন্থিদের বিরুদ্ধে

এর আগে ১৫ ও ১৬ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন (২০২৩-২৪) হয়। এর মধ্যে ১৩ মার্চ নির্বাচন পরিচালনা সংক্রান্ত উপকমিটির আহ্বায়ক সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. মনসুরুল হক চৌধুরী ‘ব্যক্তিগত’ কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন। এ অবস্থায় নির্বাচন পরিচালনার উপ-কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে মো. মনিরুজ্জামানকে মনোনীত করেন সমিতির সভাপতি, সম্পাদকসহ নেতৃত্বে থাকা আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবীরা। পাল্টা হিসেবে বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীরা এ এস এম মোকতার কবির খানকে আহ্বায়ক মনোনীত করেন।

পাল্টাপাল্টি এই অবস্থানের মধ্যে আওয়ামী লীগপন্থিদের মনোনীত আহ্বায়ক ভোটের কার্যক্রম শুরু করতে গেলে বাধা দেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। বিএনপিপন্থি কিছু আইনজীবী ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নেন। এ নিয়ে ১৪ মার্চ রাতে সমিতি ভবনে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এর রেশ ভোটের প্রথম দিনে অর্থাৎ ১৫ মার্চ সকাল থেকেই দেখা যায়।

নির্বাচন পরিচালনা সংক্রান্ত কোন উপ-কমিটির মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হবে, এমন প্রশ্নে তর্কে জড়ায় দুই পক্ষ। এর কিছুক্ষণ পর পুলিশ গিয়ে আইনজীবী ও সাংবাদিকদের পিটিয়ে সমিতির মিলনায়তন (ভোটকেন্দ্র) থেকে বের করে দেয়। পুলিশের হামলায় আইনজীবী, সাংবাদিকসহ অন্তত ২৫ থেকে ৩০ জন আহত হন। উপ-কমিটির আহ্বায়ক নিয়ে বিএনপি–সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীদের আপত্তি এবং এর জেরে ভাঙচুর, পুলিশের পিটুনি, হট্টগোল ও ধাক্কাধাক্কির মধ্যে ১৫ ও ১৬ মার্চ ভোট হয়।

গত ১৬ মার্চ রাতে ভোটের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। ফলাফলে সভাপতি-সম্পাদকসহ ১৪টি পদের সব কয়টিতেই জয় পান আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্যানেলের আইনজীবীরা। তবে আনুষ্ঠানিক নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা না দিলেও নতুন করে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবি করেছেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা।

এফএইচ/কেএসআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।