মানবতাবিরোধী অপরাধে পিরোজপুরের ৪ আসামির মৃত্যুদণ্ড

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১১:৪২ এএম, ২০ জুলাই ২০২৩

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ার আব্দুল মান্নানসহ চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণ হওয়াই তাদের সবাইকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করা হয়।

২২৮ পৃষ্ঠার রায়ের সার সংক্ষেপ পাঠ করেছেন তিন বিচারক। প্রথম অংশ পাঠ করেন বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম, দ্বিতীয় অংশ পাঠ করেন বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার, আর সর্বশেষ দণ্ড ঘোষণা করে রায় শেষ করেন বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম।

চার আসামি হলেন-ভান্ডারিয়া উপজেলার হেতালিয়া এলাকার আব্দুল মান্নান হাওলাদার ওরফে আ.মান্নান ডিলার ওরফে মান্নাফ, একই এলাকার আশ্রাব আলী ওরফে আশরাফ আলী হাওলাদার, চরখালী এলাকার মো. মহারাজ হাওলাদার ওরফে হাতকাটা মহারাজ (জামিনে) এবং নুরুল আমিন হাওলাদার (পলাতক)।

বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ রায় দেন। অন্য দুই সদস্য হলেন-বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন প্রসিকিউটর সাহিদুর রহমান। তার সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন। আর আসামিপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট গাজী এমএইচ তামিম। এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী, প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সিমন, প্রসিকিউটর মো. মোখলেসুর রহমান বাদল, প্রসিকিউটর সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নি ও ব্যারিস্টার তাপস কন্তি বল।

অন্যদিকে তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক এম সানাউল হক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। এছাড়াও ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার ব্যারিস্টার বেজবাহ আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

ট্রাইব্যুনালে আসামিদের রায়ে দণ্ডের বিষয়ে প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন জাগো নিউজকে বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে আনা চার অভিযোগের মধ্যে দুটি প্রথম ও চতুর্থটিতে চারজনকে (সবাইকে) মৃত্যুদণ্ডের সাজার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। আর দ্বিতীয় অভিযোগে আব্দুল মান্নান হাওলাদার ওরফে আ.মান্নান ডিলার ওরফে মান্নাফ, একই এলাকার আশ্রাব আলী ওরফে আশরাফ আলী হাওলাদার, চরখালী এলাকার মো. মহারাজ হাওলাদার ওরফে হাতকাটা মহারাজ (জামিনে) আমৃত্যুকারাদণ্ড এবং তৃতীয় অভিযোগে এ তিনজনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

এর আগে মামলায় ২০১৬ সালের ১২ এপ্রিল তদন্ত শুরু হয়ে ২০১৮ সালের ৬ নভেম্বর তদন্ত শেষ করে ওই দিন প্রতিবেদন প্রসিকিউশনের কাছে জমা দেয় তদন্ত সংস্থার পক্ষ থেকে। এর মধ্যে ২০১৮ সালের ১৯ এপ্রিল আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। এর পর আসামিদের গ্রেফতার করে আদালতে তোলা হয়। গ্রেফতার হওয়া আসামিদের ওই বছরের ১০ জুলাই কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাাইব্যুনাল।

২০১৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিল করেন প্রসিকিউশন। তার পরে একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন আদালত। বিচার শুরুর মধ্যে দিয়ে ২০১৯ সালের ১৭ অক্টোবর মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। এর মধ্যে তদন্ত কর্মকর্তাসহ (আইও) ১৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। তবে আসামিপক্ষের কোনো সাফাই সাক্ষী ছিল না। এর পরে ২০২২ সালের ১ নভেম্বর মামলায় যুক্তি তর্ক শুরু করে গত ১৮ মে শেষ করা হয়। তার পরে ১৮ মে রায় ঘোষণার জন্যে অপেক্ষমান রাখেন। আজ রায় ঘোষণা করা হয়। মামলায় মোট আসামি ছিল ৬ জন। এর মধ্যে ২০২১ সালের ২৮ এপ্রিল মো. নুরুল আমিন হাওলাদার মারা যান এবং একই বছরের ৭ অক্টোবর মো. আমীর হোসেন ওরফে হাফিজ মারা গেছেন।

এফএইচ/এমআইএইচএস/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।