গণহত্যার বিচারে ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার চ্যালেঞ্জ করা আবেদন খারিজ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:৩৬ পিএম, ২২ জানুয়ারি ২০২৫
ফাইল ছবি

জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নিয়ে গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারের এখতিয়ার চ্যালেঞ্জ করে আবেদন করেছিলেন ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান। তার সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

এর আগে এ সংক্রান্ত বিষয়ে শুনানি নিয়ে গত সোমবার (২০ জানুয়ারি) তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আদেশের জন্য আজকের দিন ঠিক করেন।

আরও পড়ুন:

সেদিন আদালতে জিয়াউল আহসানের আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম আই ফারুকী ও অ্যাডভোকেট নাজনীন নাহার। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। এসময় প্রসিকিউটর আব্দুস সোবহান তরফদার, গাজী এমএইচ তামিমসহ অন্যান্য প্রসিকিউটররা উপস্থিত ছিলেন।

আদেশের পর অ্যাডভোকেট নাজনীন নাহার সাংবাদিকদের বলেন, ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার ও ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করে জারি করা অধ্যাদেশ চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল। কারণ ১৯৭১ সালে যারা অপরাধ করেছিল, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য আইনটি করা হয়েছে, তাদের বিচার করার জন্যে আদালত করা হয়েছে। কিন্তু জুলাই-আগস্ট মাসে কোনো যুদ্ধ হয়নি। যেহেতু বর্তমানে কোনো সংসদ নেই, সুতরাং আইনের এ সংশোধনী বৈধ নয়। সেই সঙ্গে আমাদেরর দাবি ছিল ২০২৪ সালে করা সংশোধনীতে গুমের সংজ্ঞা অন্তর্ভুক্ত করার কারণে এর ভূতাপেক্ষ কার্যকারিতা দেওয়া যৌক্তিক নয়।

এ আদেশের বিষয়ে আপিল করা হবে কি না জানতে চাইলে নাজনীনন নাহার জানান, আদালতে জিয়াউল আহসানের আবেদনের পক্ষে শুনানি করেছেন সিনিয়র আইনজীবী এম আই ফারুকী। উনার সঙ্গে পরামর্শ করে আমরা সিদ্ধান্ত নেবো। আমরা আপিলে যাবো।

অন্যদিকে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, এখতিয়ার চ্যালেঞ্জের বিষয়টি ট্রাইব্যুনালে শুনানির সুযোগ নেই। এটি সাংবিধানিক আদালতের বিষয় উল্লেখ করে আবেদনটি খারিজ করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এছাড়া যে আদালতের এখতিযার নেই বিচার করার সেই আদালতে অব্যাহতি চেয়ে জিয়াউল আহসানের করা আবেদনকে (প্রি-ম্যাচিউর) অপরিপক্ক বলেছেন। আবেদনটিও খারিজ করে দেওয়া হয়।

সাংবাদিকদের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম আরও বলেন, কোনো আইনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করতে হলে সাংবিধানিক আদালতে যেতে হবে, সেটা করা হয়নি। সেই সঙ্গে এখতিয়ার নেই দাবি করে একই আদালতে তারা খালাসের আবেদন করেছেন।

তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধ বা মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ যার বিরুদ্ধে থাকবে তার কোনো মৌলিক অধিকার থাকবে না এবং তার বিচারের জন্য করা কোনো আইন যদি সংবিধানের কোনো অনুচ্ছেদের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণও হয় সেটা চ্যালেঞ্জ করা যাবে না। সাংবিধানিকভাবে এক্ষেত্রে সুরক্ষা দেওয়া আছে।

‘এটা আসলে তারাও জানেন যে, এ আবেদনের কোনো আইনগত ভিত্তি নেই। মিডিয়াতে একটি হাইপ তৈরি করার জন্য তারা এই আবেদনটি করেছেন। যেহেতু আবেদনটি আজ খারিজ হয়েছে, এর ফলে বিচারটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় চলবে’ জানান মো. তাজুল ইসলাম।

এফএইচ/এমএইচআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।