গর্ভাবস্থায় রোজা পালনে করণীয়

জান্নাত শ্রাবণী
জান্নাত শ্রাবণী জান্নাত শ্রাবণী , সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ০১:৪৭ পিএম, ০২ মার্চ ২০২৫

গর্ভাবস্থায় মায়েদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক থাকা অনেক গুরুত্ব বহন করে। রোজা মুসলমানদের ফরজ ইবাদত হলেও এসময় গর্ভবতী মহিলাদের জন্য কিছু বিশেষ সতর্কতা প্রয়োজন। গর্ভাবস্থায় রোজা পালনের ক্ষেত্রে সঠিক যত্ন ও পরামর্শ মেনে চলা উচিত। তাই গর্ভবতী মা হিসেবে রোজা রাখার পূর্বে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানা ও মানা জরুরি।

চিকিৎসকের পরামর্শ নিন

গর্ভাবস্থায় রোজা রাখার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। বিশেষ করে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, বা অন্য কোনো শারীরিক সমস্যা নিয়ে যারা গর্ভবতী, তাদের জন্য রোজা রাখার আগে চিকিৎসকের অনুমতি নেওয়া অব্যশক। চিকিৎসক তাদের শারীরিক অবস্থার উপর ভিত্তি করে রোজা রাখার বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

মানসিক প্রস্তুতি

রোজা রাখা শুধু শারীরিক নয়, মানসিকও এক ধরনের প্রস্তুতি। গর্ভাবস্থায় মা সাধারণত হরমোনাল পরিবর্তন, মানসিক চাপ এবং শারীরিক অস্বস্তি অনুভব করতে পারেন। তাই রোজার আগে নিজেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এসময় পজিটিভ মনোভাব এবং ধৈর্য ধারণ করার চেষ্টা করুন।

গর্ভাবস্থায় রোজা পালনে করণীয়

আরও পড়ুন:

শরীরের সংকেত বোঝা

গর্ভবতীদের শরীরের পরিবর্তন দ্রুত ঘটে। তাই রোজা রেখে শারীরিক অবস্থার প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখা উচিত। যদি কোনো অস্বস্তি বা অসুস্থতা অনুভূত হয় (যেমন-মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা, দুর্বলতা, বা পেটের সমস্যা) তাহলে রোজা ভেঙে ফেলা উচিত। এ ধরনের পরিস্থিতিতে পানি ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা এবং বিশ্রাম নেওয়া প্রয়োজন।

উপযুক্ত পুষ্টি গ্রহণ

গর্ভাবস্থায় পুষ্টির চাহিদা বেড়ে যায়। সেহেতু রোজা ভাঙার পর পরিপূর্ণ এবং পুষ্টিকর খাবার খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডাল, শাকসবজি, ফলমূল, এবং প্রোটিনের উৎস (যেমন-মাংস, মাছ, ডিম) খাওয়ার চেষ্টা করুন। এতে শরীর প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাবে এবং রোজার সময় শক্তি বজায় থাকবে।

পর্যাপ্ত পানি পান

গর্ভবতী মহিলাদের জন্য পর্যাপ্ত পানি পান করা অব্যশক। সেহরি ও ইফতারে প্রচুর পানি খাওয়ার চেষ্টা করুন। এর ফলে দেহে পানিশূন্যতা (ডিহাইড্রেশন) রোধ হবে এবং শরীর ভালো থাকবে।

গর্ভাবস্থায় রোজা পালনে করণীয়

বিশ্রাম নেওয়া

গর্ভাবস্থায় শরীরের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়তে পারে, তাই রোজা রাখার পাশাপাশি পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। দিনের মধ্যে কিছু সময় বিশ্রাম নিলে আপনার শক্তি বজায় থাকবে এবং রোজা রাখাও সহজ হবে।

রোজা না রাখার ক্ষেত্রে বিকল্প

গর্ভবতী মায়ের জন্য রোজা রাখা কখনো কখনো বিপজ্জনক হতে পারে। যদি চিকিৎসক মনে করেন যে রোজা রাখা মা বা শিশুর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে, তবে রোজা না রাখার পরামর্শ দিতে পারেন। ইসলাম ধর্মে গর্ভবতী মায়ের জন্য ছাড় রয়েছে। এই অবস্থায় রোজা না রাখলে কাফফারা বা ফিদিয়া দিয়ে রোজা পূর্ণ করার সুযোগ রয়েছে।

সর্বোপরি, গর্ভাবস্থায় রোজা পালনের ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করলেই সুস্থ থাকবে মা ও শিশু। তবে প্রতিটি গর্ভবতী মায়ের শারীরিক অবস্থা আলাদা হতে পারে, তাই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা উচিত। রোজা পালনের জন্য যদি কোনো শারীরিক অসুবিধা দেখা দেয়, তাহলে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলুন।

জেএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।