কর্টিসল শুধুই স্ট্রেস হরমোন নয়, জানুন আপনার শরীরের রক্ষাকবচকে

লাইফস্টাইল ডেস্ক
লাইফস্টাইল ডেস্ক লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:২২ পিএম, ০৬ নভেম্বর ২০২৫

কর্টিসল নামের হরমোনটিকে আমরা বরাবরই শুধু স্ট্রেস হরমোন নামে ডাকি। কিন্তু কর্টিসল আসলে কী? এটা আমাদের শরীরে কীভাবে কাজ করে?

এই হরমোনটি নিয়ে অনেক ভুল ধারণা আছে। কর্টিসল সত্যিই শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ ‘স্ট্রেস হরমোন’, তবে সেটাই তার একমাত্র পরিচয় নয়। এটি আমাদের শরীরের রক্তচাপ, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা, ঘুম, এমনকি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণেও বড় ভূমিকা রাখে।

কর্টিসল কীভাবে কাজ করে

আমাদের মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস এবং পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে সংকেত পেয়ে অ্যাড্রিনাল গ্ল্যান্ড কর্টিসল হরমোন উৎপাদন করে। সকালে ঘুম থেকে ওঠার সময় কর্টিসলের মাত্রা সবচেয়ে বেশি থাকে — একে বলা হয় কর্টিসল অ্যাওয়েকনিং রেসপন্স। এটি শরীরকে সক্রিয় হতে সাহায্য করে, মানসিক সতর্কতা বাড়ায় এবং শক্তি জোগায়। কিন্তু সারাদিন মানসিক চাপ, ঘুমের অভাব বা অতিরিক্ত কাজের চাপ থাকলে কর্টিসলের মাত্রা দীর্ঘ সময় উচ্চ থাকে — এটিই বিপদের কারণ।

কর্টিসল বেশি হলে কী হয়
যখন শরীরে কর্টিসল দীর্ঘ সময় ধরে বেশি থাকে, তখন তা নানা সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। যেমন–
১. পেটের মেদ ও ওজন বেড়ে যাওয়া
২. উচ্চ রক্তচাপ ও ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স
৩. ঘুমের ব্যাঘাত ও উদ্বেগ
৪. স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া
৫. রোগ প্রতিরোধক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়া

অন্যদিকে আবার কর্টিসল কম হলেও সমস্যা হয়। কর্টিসলের মাত্রা খুব কম হলে ক্লান্তি, নিম্ন রক্তচাপ, মনমরা ভাব ও ক্ষুধামন্দা দেখা দিতে পারে। এ অবস্থাকে অ্যাড্রিনাল ইনসাফিসিয়েন্সি বলা হয়, যার চিকিৎসার দরকার পড়ে।

স্ট্রেস ও কর্টিসলের সম্পর্ক

আমেরিকার হার্ভার্ড হেল্থ পাবলিশিং জানিয়েছে, কর্টিসল হলো শরীরের ‘অ্যালার্ম সিস্টেম’। বিপদের সময় এটি রক্তে গ্লুকোজ বাড়িয়ে দেয়, যাতে শরীর দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে। কিন্তু আধুনিক জীবনের মানসিক চাপ যখন দীর্ঘস্থায়ী হয়, তখন এই প্রতিরক্ষামূলক হরমোনই শরীরের ক্ষতি ডেকে আনে।

কর্টিসল নিয়ন্ত্রণে কী করবেন
গুরুত্বপূর্ণ এই হরমোন কম হলেও বিপদ, বেশি হলেও বিপদ! তাই ভারসাম্য বজায় রাখা খুব জরুরি। সুষম ঘুম, নিয়মিত ব্যায়াম, মেডিটেটশন, ক্যাফেইন নিয়ন্ত্রণ এবং সময়মতো বিশ্রাম — এই অভ্যাসগুলো কর্টিসলের ভারসাম্য রাখতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন মাত্র ২০ মিনিট প্রকৃতির মাঝে হাঁটলেও কর্টিসলের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে।

সূত্র: হার্ভার্ড হেল্থ পাবলিশিং, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেল্থ, আমেরিকান সাইকোলজিকাল অ্যাসোসিয়েশন

এএমপি/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।