ভেবে যাই সমান্তরালে এবং অন্য কবিতা

সাহিত্য ডেস্ক
সাহিত্য ডেস্ক সাহিত্য ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:১৪ এএম, ২৬ নভেম্বর ২০২৩

মাসুদ চয়ন

ভেবে যাই সমান্তরালে
(উৎসর্গ: ফারিহা তাবাসসুম অর্চি)

অসুস্থতার মুহূর্তগুলোতে কেউ পাশে থাকে না,
নির্বিচারে জেল-জুলুম হয় দেহ ও মনের সাথে,
এ জন্য অসুস্থতা ভালো লাগে।
কষ্টকে লাঘব করলে কবিতা চলে যায়,
নির্জন গন্ধের চেয়ে শুদ্ধতম মোহ আর কী হতে পারে!
অবশ্য একটি বিষয় খুব অবাক করে দেয়,
অসুস্থ কারো মৃত্যু হলে সবাই পাগলের মতো ছুটে আসে,
এসব পাগলের মহাসমাবেশ দেখে তার চেয়েও বেশি ভালো,
অন্তত এই ভেবে উচ্ছ্বসিত হই যে,
পৃথিবীটা পাগল ছাগল ঈগল সজারুর বিচরণস্থল,
মানুষ মূলত নির্ভেজাল দাম্ভিকতা।

মৃত্যুর পর যখন কেউ কাঁদে,
কেউ কেউ আর্তচিৎকারে মাতে,
ভালোবাসি, ভালোবাসি বলে তুমুল সংবেদন ঝড় তোলে,
সত্যি বলছি, তখন আমার আরও বেশি ভালো লাগে,
অথচ সেইসব ভালোবাসার প্রতি উত্তরে সাড়া দেওয়া হবে না,
এ জন্য ভালোবাসার পাওয়ার জন্য ভালোবাসিনি কখনো কাউকে,
ভালোবেসে মৃত নৃত্যে রঞ্জিত হতে ক’জনে পারে!

****

তোমার বিকল্প যে বা যারা

তোমাকে হারানোর পর জীবন হয়ে উঠেছে কচি লাউয়ের মাচা
প্রকৃত অর্থে জীবন বলতে ধোয়াশাকে বুঝেছি
ধোয়ার মতো রহস্যময় পরিভ্রমণ
মিথ্যের বেসামাল উদ্যমতা
প্রেমহীন মায়াহীন অনুপ্রেরণাহীন পথ-প্রান্তর
পথের ধূলির মতো মূল্য স্মারক

এখানে ধানের ছড়াই ভালো মানুষের চেয়ে
তার মতো উৎকৃষ্ট আঁচ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর
যতবার ধানের ছড়ার পাশ দিয়ে হেঁটেছি;
ততবার মনে পড়েছে ডালিয়া কলোনিকে
গোধূলি আলোয় হেসে ফুলকপি হওয়া তুমিকে
ধানের ছড়ার গন্ধে উপমিত হয় সেইসব স্নিগ্ধতা
ধানের ছড়া গেঁথে রেখেছি হৃদয়ে নির্জনে

হাসছি ফানুস নাট্যগোষ্ঠীর সদ্যজাত সদস্য
এসব অর্থবোধক হাসির ভাষা কুয়াশার মতো
কেটে গিয়েও রেশ রেখে যায়
কান্নার মতো সুরেলা কণ্ঠ ছিল তোমার
তাই যে কোন অর্থবোধক কান্নার স্বর ব্রতচারী করে তোলে
অরণ্যের মতো গনগনে আভা হয়ে ওঠে
আমারে ডাকে
খুব করে ডাকে
ঢেউ ওঠে হৃদয় সোপানে
চিকচিক করে জ্বলে অন্তহীন
ফের নিভে যায়
কেটে যায় ঘোর

বাঁশঝাড়গুলো ব্যথাবান্ধব আনন্দ রোদ
ছুটে যাই মাথা এলিয়ে শ্রান্ত হতে
বাঁশপাতার শিরশির মৃদু ধ্বনি ক্ষুধার সুধা হয়ে ওঠে
জন অরণ্যের বিষবাষ্প টানে না
মৃত্যুর বুকে জেগে ভালোবাসি
এই মৃত্যু উপত্যকায় কবিতাই ছায়া আশ্রয়
কে আছে আর!
কী আছে ঘাস লতা পাতার মতো মসৃণ প্রাণরস!

মাঝে মাঝে কাঁঠালতলার রসালো বাতাসে রোদ কুড়োতে যাই
ছায়ার মতো নিগূঢ় আশ্রিতা কে হতে পারে বলো!
তুমি আমার
আমপাতা জামপাতা কাঁঠালপাতা
তুমি আমার বটমূল মেহগনির ছায়াঘন পত্রপল্লব
ধানের ছড়ার নির্জন গন্ধের হইচই
নাব্যহারা নদীর বেদনাব্যঞ্জক স্মৃতি রোমন্থন।

এসইউ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।