‘মৈমনসিংহ গীতিকা’র শতবর্ষে জবিতে আন্তর্জাতিক সেমিনার

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:০৫ পিএম, ২৭ নভেম্বর ২০২৩

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) ‘মৈমনসিংহ গীতিকা’র শতবর্ষ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের আয়োজনে সোমবার (২৭ নভেম্বর) মৈমনসিংহ গীতিকা’র ষষ্ঠ পর্বের সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে আরও পাঁচ পর্বের সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক সেমিনারটিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, বাংলা লোকসাহিত্যগুলো সংগ্রহ করে না রাখলে আমরা এ সম্পর্কে জানতে পারতাম না৷ দীনেশচন্দ্র সেন যদি ‘মৈমনসিংহ গীতিকা’ না লিখতেন, আমাদের মধ্যে তুলে না ধরতেন, সারা বিশ্বে ছড়িয়ে না পড়তো তাহলে সাহিত্যের মধ্যে লোকসাহিত্যের কী ভূমিকা তা আমরা বুঝতে পারতাম না৷

তিনি আরও বলেন, লোকসাহিত্য এবং লোক মানুষের সৃষ্টি যা স্বতঃস্ফূর্তভাবে সৃষ্টি হয়, যেটা প্রকৃতিতে সৃষ্টি হয়, নদী-গঙ্গা বেয়ে যাচ্ছে তার ভেতরে কুলকুল শব্দ হয় সেটা কবিরা বুঝেছিলেন।

নূরুল হুদা বলেন, এই যে গাঙের ঢেউ, গাঙের ঢেউয়ের যে ছন্দ তা আমাদের বুঝতে সাহায্য করেছে। প্রকৃতি থেকে আসা সৃষ্টিশীলতার কথা বলছি, এগুলোই বাংলার সৃষ্টিশীলতা। আমরা যদি ইংরেজি সাহিত্যের কথা বলি, ইটালিয়ানো সাহিত্যের কথা বলি, তখন আমরা যাই কিচ্ছা-কাহিনির দিকে। যেই কিচ্ছা কাহিনি মিলে বড় ধরনের কাব্য তৈরি হয়। আর তাই বাংলা লোকসাহিত্যে বিদ্যমান।

বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক আলোচক হিসেবে ছিলেন ভারতের আচার্য দীনেশচন্দ্র সেন রিসার্চ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক দেবকন্যা সেন এবং ঢাকার ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টারের পরিচালক মৃন্ময় চক্রবর্তী।

দেবকন্যা সেন বলেন, সাহিত্য আমাদের প্রাণ। আঞ্চলিক যে লোকসাহিত্যগুলো আছে সেগুলো আমাদের সাহিত্যিক সংস্কৃতিকে ধরে রেখেছে। ময়মনসিংহ গীতিকা আমাদের বাঙালির কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়। এগুলাকে আমাদের রক্ষা এবং চর্চা করতে হবে।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সহযোগী অধ্যাপক ড. সাবিনা ইয়াসমিন এবং স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন সেমিনার কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. চঞ্চল কুমার বোস। এছাড়া আলোচক হিসেবে ছিলেন বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. রাজিব মণ্ডলসহ অন্য শিক্ষক-শিক্ষিকা। এসময় বিভাগীয় শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

মৈমনসিংহ গীতিকায় বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলে প্রচলিত পালাগানগুলো লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। এই গানগুলো প্রাচীন কাল থেকে মানুষের মুখে মুখে প্রচারিত হয়ে আসছে। তবে ১৯২৩ থেকে ১৯৩২ সালে ড. দীনেশচন্দ্র সেন এই গানগুলো অন্যদের সহায়তায় সংগ্রহ করেন এবং স্বীয় সম্পাদনায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশ করেন।

অনুষ্ঠানে ড. মিল্টন বিশ্বাসকে দীনেশ-রবীন্দ্র পত্র সম্মাননা প্রদান করা হয়। তার হাতে সম্মাননা তুলে দেন দীনেশচন্দ্র সেনের চতুর্থ প্রজন্ম দেবকন্যা সেন। 

আরএএস/এমকেআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।