আজহারুলের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ
জামায়াতে ইসলামীর সহকা্রী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে একাত্তরে স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, অপহরণসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ছয়টি অভিযোগ আনা হয়েছে।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ মঙ্গলবার এ সব অভিযোগের রায় ঘোষণা করবেন।
এটি হচ্ছে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার ১৫তম রায়। একাত্তরে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এবং ২ বেঞ্চে এর আগে ১৪টি মামলার রায় দিয়েছেন। এ টি এম আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৬টি অভিযোগ এনেছেন প্রসিকিউশন।
রংপুর অঞ্চলে গণহত্যা চালিয়ে ১ হাজার ২২৫ ব্যক্তিকে হত্যা, চারজনকে খুন, ১৭ জনকে অপহরণ, একজনকে ধর্ষণ, ১৩ জনকে আটক ও নির্যাতন এবং শত শত বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুণ্ঠনের অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।
১৯৭১ সালের ২৪ মার্চ থেকে ২৭ মার্চের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, ভাসানী (ন্যাপ) নেতা ও রংপুর শহরের বিশিষ্ট আয়কর আইনজীবী এওয়াই মাহফুজ আলীসহ ১১ জনকে অপহরণ, আটক, শারীরিক নির্যাতন করা হয়। এরপর তাদের ৩ এপ্রিল রংপুর শহরের দখিগঞ্জ শ্মশানে নিয়ে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় প্রধান কারিগর হিসেবে অভিযোগ করা হয়েছে আজহারুল ইসলামকে।
১৯৭১ সালের ১৬ এপ্রিল আজহারুল ইসলাম তার নিজ এলাকা রংপুরের বদরগঞ্জ থানার ধাপপাড়ায় ১৫ জন নিরীহ, নিরস্ত্র বাঙালিকে গুলি করে হত্যা, গণহত্যা, বাড়িঘরে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগ করেন।
১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল রংপুরের বদরগঞ্জের ঝাড়–য়ারবিল এলাকায় লুণ্ঠন ও বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ এবং গণহত্যা চালিয়ে ১ হাজার ২শ’রও বেশি নিরীহ মানুষকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।
আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল কারমাইকেল কলেজের চারজন অধ্যাপক ও এক অধ্যাপকের স্ত্রীকে অপহরণ করে দমদম ব্রিজের কাছে নিয়ে গুলি করে হত্যার অভিযোগ আনা হয়।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে রংপুর শহর ও বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিভিন্ন বয়সের নারীদের ধরে এনে টাউন হলে আটক রেখে ধর্ষণ ও শারীরিক নির্যাতন করেন। একই সঙ্গে নিরীহ, নিরস্ত্র বাঙালিদের অপহরণ, আটক, নির্যাতন, হত্যার উদ্দেশ্যে গুরুতর জখম, হত্যা ও গণহত্যা চালানো হয়।
১৯৭১ সালের নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে রংপুর শহরের গুপ্তপাড়ায় এক ব্যক্তিকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়। ১ ডিসেম্বর রংপুর শহরের বেতপট্টি থেকে একজনকে অপহরণ করে রংপুর কলেজের মুসলিম ছাত্রাবাসে নিয়ে আটক রেখে নির্যাতন ও হত্যার উদ্দেশ্যে গুরুতর জখম করেন।