পরিবেশ সংরক্ষণে বন ও বন্যপ্রাণী রক্ষা অপরিহার্য
বন ধ্বংস, অবৈধ বন্যপ্রাণী শিকার, দারিদ্র্য, অপরিকল্পিত নগরায়ন, শিল্প কারখানার দূষণ, পানি ও বায়ু দূষণ, নদী দখল ও ভরাট, মাত্রাতিরিক্ত ও ক্ষতিকর কীটনাশকের ব্যবহার, ভূগর্ভস্থ পানির অত্যাধিক উত্তোলনে আজ বাংলাদেশের পরিবেশ বিপর্যস্ত। পরিবেশ সংরক্ষণে বন ও বন্যপ্রাণী রক্ষায় কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
রোববার বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন- পবার উদ্যোগে পবা কার্যালয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এমন অভিমত ব্যক্ত করেন।
বক্তারা বলেন, বিশ্ব পরিবেশ দিবসের এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘বন্যপ্রাণী ও পরিবেশ, বাঁচায় প্রকৃতি বাঁচায় দেশ’। যার মূল লক্ষ্য পরিবেশ সংরক্ষণে বন্যপ্রাণীর গুরুত্ব এবং এদের নিরাপদ আবাসস্থল ও খাদ্যের যোগান নিশ্চিতকরণের প্রয়োজনীয়তা জনসমক্ষে তুলে ধরা। এছাড়াও যে বন্যপ্রাণী টিকে আছে তা রক্ষার লক্ষ্যে জনগণকে সচেতন করা এবং উন্নত, উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশসমূহকে একযোগে কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করা।
বাংলাদেশের প্রকৃতির অন্যতম উপাদান বন ও বন্যপ্রাণী। বিভিন্ন অঞ্চলের বন ও বন্যপ্রাণী মিলে গড়ে উঠেছে নানা ধরনের প্রতিবেশ ব্যবস্থা। গড়ে উঠেছে প্রাণ-প্রাচুর্যে ভরপুর সবুজ-শ্যামল বাংলাদেশ। বন ও বন্যপ্রাণী ক্ষতিগ্রস্ত হলে পরিবেশ-প্রতিবেশ ব্যবস্থার ওপর নেমে আসে বিপর্যয়। প্রকৃতিতে এদের ভূমিকা সম্পর্কে সঠিক জ্ঞানের অভাবে আমরা প্রতিনিয়ত বন ও বন্যপ্রাণী ধ্বংস করে চলেছি।
সভায় বক্তারা আরো বলেন, বন্যপ্রাণীর জীবনযাপন যেমন বনের উপর নির্ভরশীল তেমনি বনের স্বাভাবিক ভারসাম্যও বন্যপ্রাণীর উপর নির্ভরশীল। বন ও বন্যপ্রাণী একে অপরের পরিপূরক। বনের ভিন্নতায় বন্যপ্রাণীর মধ্যেও অনেকটা ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়। সুন্দরবনে যে প্রজাতির বন্যপ্রাণী দেখা যায় মধুপুর জাতীয় উদ্যানে সে প্রজাতির প্রাণী দেখা যায় না। কারণ সুন্দরবনের যে বৈশিষ্ট্য তা মধুপুর জাতীয় উদ্যানে নেই।
খাদ্যগ্রহণ থেকে শুরু করে প্রজনন পর্যন্ত সকল ধরনের কার্যাবলি এরা বনেই সম্পন্ন করে। বন ছাড়াও বন্যপ্রাণীর নিরাপদ আবাসস্থল অভ্যন্তরীণ জলাশয় বিশেষ করে নদী-নালা, খাল-বিল, লেক, বিল, হাওর-বাঁওড়। বঙ্গোপসাগর বন্যপ্রাণীর বিশেষ করে জলজ বন্যপ্রাণীর নিরাপদ আবাসস্থল। নির্বিচারে বনভূমি উজাড় রোধ করা, সংরক্ষিত বনাঞ্চল যথাযথ ব্যবস্থাপনা করাসহ বিভিন্ন সুপারিশতুলে ধরা হয় আলোচনা সভা থেকে।
পবার সাধারণ সম্পাদক এবং পরিবেশ অধিদফতরের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহানের সভাপতিত্বে ও মূল প্রতিবেদন উপস্থাপনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন পবার নির্বাহী সদস্য তোফায়েল আহমেদ প্রমুখ।
এএস/বিএ/এবিএস