নির্বাচনী সংলাপে চবির ভিসি

নির্বাচনে ডিসি নয়, ইসি কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তা করুন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৪৭ পিএম, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) পরিবর্তে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার জন্য সংস্থাটির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য মুহাম্মদ ইয়াহিয়া আখতার।

রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে শিক্ষাবিদ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে ইসি আয়োজিত নির্বাচনী সংলাপে চবি উপাচার্য এ আহ্বান জানান।

উপাচার্য ইয়াহিয়া বলেন, ‘সরকার পরিবর্তন হলেও আমলাতন্ত্র পরিবর্তন হয়নি। ইসির যথেষ্ট লোকবল আছে। আপনাদের প্রশিক্ষিত লোকবল থাকলেও (নির্বাচনে) আমলাদের নিয়োগ করা হয়। কাজেই আপনাদের দক্ষ লোকদের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করুন। এখন ডিসিদের দেওয়া হয়। তারা সারা বছর এ নিয়ে কাজ করেন না। আর ইসির কর্মকর্তাদের সেই অভিজ্ঞতা আছে। ডিসি নয়, ইসি কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তা করুন।’

নির্বাচন পরিচালনায় সাধারণত ডিসিদের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়ে থাকে ইসি। এ ধারা থেকে বের হয়ে ইসি কর্মকর্তাদের এসব পদে নিয়োগের এ আহ্বান জানান উপাচার্য ইয়াহিয়া।

ইসির প্রতি অভিযোগ করে এ শিক্ষাবিদ বলেন, ‘আগেও ইসির সংলাপে ভালো বক্তব্য দিয়েছিলাম, কিন্তু আমলে নেওয়া হয়নি। কাজেই আমি কীভাবে বিশ্বাস করবো- ভালো আলোচনা করবো কিন্তু আপনারা আমলে নেবেন? আমলে নিলে ভালো। এমন একটা পরিস্থিতিতে নির্বাচন করতে চাইছেন, সেটা ভয়াবহ পরিস্থিতি। গত ২০ বছরে সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়ে গেছে। সেই দিকটা লক্ষ্য রেখে যদি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে পারেন, ইতিহাসের পাতায় আপনাদের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।’

আরও পড়ুন
নির্বাচনে ইসির মেরুদণ্ড শক্ত না হলে সব কিছুই কঠিন হবে
আমরা সবাই চাই ভালো একটি নির্বাচন, ইসির সংলাপে ঢাবি ভিসি
নির্বাচনের আগে এআই নির্ভর ভুয়া কনটেন্টের প্রভাব বাড়বে

বাংলাদেশে ভোট হলে সারা পৃথিবী নতুন নতুন জিনিস পায় উল্লেখ করে চবি উপাচার্য বলেন, ‘এজন্য তারা আগ্রহভরে পর্যবেক্ষণ করে। একবার বলা হলো রাতের ভোট হয়েছে, তারা নতুন কিছু পেলেন। আরেকবার বললেন ১৫১টি আসন হলে সরকার গঠন করা যায়, সেখানে ১৫৩টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন হয়ে গেল। তাই ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে যারা কাজ করেন, তারা বাংলাদেশ থেকে নতুন কিছু পান। তবে আমি বলব, এমন কিছু করুন যাতে তারা ইতিবাচক কিছু পান।’

ইয়াহিয়া জানান, আগের কমিশনগুলোর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলগুলো অভিযোগ করে বলতো যে নির্বাচনে অংশ নেবে না। কিন্তু বর্তমান কমিশনকে এমন কিছু কেউ বলছেন না। ইসি আমলাদের দিয়ে আগে অনেক কিছু বাস্তবায়ন করেছে, অতীতে তা দেখা গেছে। বর্তমান সরকার তেমন নয়। পোস্টাল ব্যালটে ভোট নিয়ে সতর্ক হতে হবে। আচরণবিধি প্রতিপালনে যদি শক্ত অবস্থান নেওয়া যায় তাহলে নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হতে পারে।

কোনো নতুন ব্যবস্থা চালু করতে হলে তা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা উচিত জানিয়ে চবি উপাচার্য বলেন, ‘পিআর (আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) নতুন জিনিস। চালু করতে চাইলে অনেক ভেবেচিন্তে এটা করতে হবে। কৃষক, শ্রমিক, মেহনতি মানুষ তো এটা জানেন না। এজন্য যে জ্ঞান-গরিমা দরকার, সেটা তো নেই। কাজেই এ সিস্টেম চালুর আগে অনেক চিন্তাভাবনা করে এগোবেন।’

জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) ইঙ্গিত করে ইয়াহিয়া বলেন, ‘মার্কা না দিলে মানি না- এটা ঠিক না। ইসি স্বাধীন। এ বিষয়ে চাপ দেওয়া উচিত না। যে মার্কা দেবে তা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকুন। মার্কা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করা উচিত না।’ তিনি আরও পরামর্শ দেন, রাষ্ট্র মেরামতের যে অপূর্ব সুযোগ ছাত্ররা এনেছেন, এ পরিস্থিতিতে যদি স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে করা হয় তাহলে একটি বিতর্ক সৃষ্টি হতে পারে। তাই সংসদ নির্বাচনটিই অবিতর্কিতভাবে সম্পন্ন করা উচিত।

এমওএস/একিউএফ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।