কক্সবাজারের যুবক হারুনুরের ‘মস্তিষ্ক হ্যাক’, সুষ্ঠু তদন্তের দাবি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৫৮ পিএম, ০৫ অক্টোবর ২০২৫
ঢাকা রিপোর্টর্স ইউনিটি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন হারুনুর রশিদ/ছবি: জাগো নিউজ

কক্সবাজারের যুবক হারুনুর রশিদের (৩৪) দাবি, তার মস্তিষ্কে ক্ষুদ্র ইলেকট্রনিক ডিভাইস বসিয়ে ‘হ্যাক’ করা হয়েছে। এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি এবং সরকারসহ গণমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তিনি।

হারুনুর কুতুবদিয়া উপজেলার আলী আকবার ডেইল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য ও সিকদারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি রোববার (৫ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টর্স ইউনিটি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেন।

হারুনুর বলেন, কয়েক বছর আগে শ্বশুরবাড়িতে থাকার সময় বিদেশি এক ‘ব্রেন হ্যাকার’ চক্র দেশীয় সহযোগীদের সহায়তায় তাকে অজান্তে ইনজেকশন পুশ করে মাথায় ক্ষুদ্র ইলেকট্রনিক ডিভাইস বা নিউরো-চিপ বসিয়ে দেয়। পরে অচেতন অবস্থা থেকে জেগে ওঠার পর তিনি মাথায় ব্যথা ও হালকা রক্তপিণ্ডের মতো কিছু লক্ষ্য করেন।

এ যুবকের দাবি, এরপর থেকেই তিনি অচেনা কণ্ঠের ‘গায়েবি আওয়াজ’ শুনতে পান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করতে গেলে এলোমেলো হয়ে যায় এবং ব্যবহৃত স্মার্টফোনে অজানা অ্যাপস স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডাউনলোড হতে থাকে। কয়েক দফায় তার ব্যাংক হিসাব থেকে অর্থও গায়েব হয়ে গেছে।

হারুনুর বলেন, ‘কোনো অ্যান্ড্রয়েড ফোন হাতে নিলেই আমার শরীর হালকা কেঁপে ওঠে। আমার স্পর্শ করা ফোন মুহূর্তেই অন্য কারও নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। এতে হ্যাকাররা আমার সব তথ্য ও অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে।’

আরও পড়ুন
ফোন হ্যাক হলে বুঝবেন যেভাবে
ফের হ্যাকারদের দখলে ইসলামী ব্যাংকের ফেসবুক পেজ
এনবিআর চেয়ারম্যানের হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাক করে অর্থ দাবি
‘মস্তিষ্ক হ্যাকের’ অভিযোগ কক্সবাজারের হারুনের, আসলে কি সম্ভব?

তিনি জানান, ঘটনাটির পর তিনি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) ও সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। তার মাথার ‘অক্সিপেটাল’ হাড়ের কাছ থেকে একটি ক্ষুদ্র ‘ফরেইন বডি’ পাওয়া গেছে বলে দাবি করেন তিনি। এর আকৃতি কয়েকটি চালের দানার মতো, ওপরের অংশ স্টেইনলেস স্টিলের মতো চকচকে এবং তাতে চৌম্বকীয় শক্তি রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলেন হারুনুরের আইনজীবী শাহরিয়ার তুহিন জানান, দুটি পৃথক অস্ত্রোপচারের সময় তিনি উপস্থিত ছিলেন এবং দ্বিতীয় অস্ত্রোপচারে ক্ষুদ্র ওই ডিভাইসটি উদ্ধার করা হয়। এর ভিডিও ফুটেজ সংরক্ষিত রয়েছে।

আইনজীবী বলেন, উন্নত দেশগুলোতে গোপনচরবৃত্তি পর্যায়ে এ ধরনের প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা চলছে। শুরুতে বিশ্বাস করা কঠিন হলেও ইন্টারনেটে খুঁজে এ বিষয়ে অনেক তথ্য পাওয়া গেছে।

বর্তমানে হারুনুরের মামলাটি চট্টগ্রামের বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন এবং তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি)।

সংবাদ সম্মেলনে হারুনুর বলেন, ‘আমি শুধু নিজের জন্য নয়, এই অদৃশ্য সাইবার অপরাধচক্রের হাত থেকে অসংখ্য মানুষকে রক্ষা করার জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। সাংবাদিকরা চাইলে গভীরভাবে তদন্ত করে সত্য উদ্‌ঘাটন করতে পারেন।’

ইএআর/একিউএফ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।