জুলাই স্মৃতিস্তম্ভে স্থান পাচ্ছে ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:২৩ পিএম, ১২ অক্টোবর ২০২৫
ওসমানী উদ্যানে ‘জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ’ নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণে ও জুলাইয়ের চেতনা সমুজ্জ্বল রাখতে ঢাকার ওসমানী উদ্যানে ‘জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ’ নির্মাণকাজ শুরু করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ৪৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা অর্থায়ন করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।

রোববার (১২ অক্টোবর) এই স্মৃতিস্তম্ভের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও কাজের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর এ স্মৃতিস্তম্ভের বর্ণনা তুলে ধরে ডিএসসিসি।

জুলাই স্মৃতিস্তম্ভের প্রবেশদ্বার: ওসমানী উদ্যানে নির্মিতব্য জুলাই স্মৃতিস্তম্ভে প্রবেশের জন্য দুটি প্রবেশদ্বার নির্মাণ করা হবে। একটি সচিবালয়ের দিক থেকে উদ্যানের প্রবেশপথে, অন্যটি দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগর ভবনের দিক থেকে উদ্যানের প্রবেশ পথে। গেটটি অ্যাম্বিগ্রাম আদলে ইংরেজি ২৪ ও ৫ সংখ্যাটির সমন্বয়ে নির্মাণ করা হবে। যা ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের চূড়ান্ত বিজয়ের দিন ৫ আগস্টকে তুলে ধরে।

জুলাই স্মৃতিস্তম্ভে স্থান পাচ্ছে ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ

মূল স্তম্ভ: মূল স্মৃতিস্তম্ভটি একটি বৃত্তাকার বেদির উপর নির্মিত হবে। স্তম্ভটি দ্বিপার্শ্বীয় প্রতিসমের দুই পাশে থাকবে চারটি করে আটটি আয়তাকার পারসিভড কলাম। মাঝখানে থাকবে একটি বৃত্তাকার কলাম। দুই পাশে আটটি কলাম মূলত একটি ধারাবাহিক আবদ্ধ রেখা (কন্টিনিউয়াস ক্লোজ লাইন), যা মাঝখানের বৃত্তাকার কলামের ভিতর দিয়ে প্রবেশ করবে। এই ধারাবাহিক আবদ্ধ রেখা এদেশের মানুষের আত্মমর্যাদা ও গণতন্ত্রের আপসহীন নিরবিচ্ছিন্ন সংগ্রামকে মনে করিয়ে দেয়।

আরও পড়ুন
শহীদদের নামের ওপর হাঁটছে মানুষ, জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ নিয়ে অসন্তোষ
আ’লীগ কার্যালয়ের ওপর নির্মাণ হচ্ছে জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ

আপাতদৃষ্টিতে প্রতীয়মান প্রত্যেক স্তম্ভ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মতাদর্শিক ভিন্নতা ও বৈচিত্র্যতা সত্ত্বেও জুলুম ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যে জাতীয় ঐক্য তৈরি হয়েছে সেটি প্রতিফলন করে। মাঝখানের বৃত্তাকার স্বতন্ত্র কলামটি ঐতিহাসিক এক দফাকে প্রতিফলিত করে। এই কলামের উপরের অংশে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত সব শহীদের নাম খোদাই করা থাকবে।

রিলিফ ভাস্কর্য: স্মৃতিস্তম্ভের বৃত্তাকার বেদীর পাশে একটি অর্ধবৃত্তাকার দেওয়ালের উত্তল ও অবতল দুই পাশে বর্ণনামূলক রিলিফ ভাস্কর্য নির্মাণ করা হবে। উত্তল পাশে চারটি প্যানেল থাকবে, যেখানে ৫২-এর মহান ভাষা আন্দোলন, ৬৯- এর গণঅভ্যুত্থান, ৭১- এর মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং ৯০- এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের ঘটনাবলী তুলে ধরা হবে। অবতল অংশের একটি প্যানেলে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শুরু থেকে চূড়ান্ত বিজয় পর্যন্ত ঘটনাবলী ধারাবাহিকভাবে ফুটিয়ে তোলা হবে। এই ভাস্কর্যের মধ্য দিয়ে ২৪- কে বাংলাদেশের মানুষের জাতীয় মুক্তি ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের ঐতিহাসিক লড়াইয়ের ধারাবাহিকতা হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

ল্যান্ডস্কেপ: স্মৃতিস্তম্ভের প্রবেশ পথের দুই পাশে ১০টি করে ২০টি ঘনক আকৃতির এপিটাফ নির্মাণ করা হবে। সেখানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অজ্ঞাতপরিচয় শহীদদের পাশাপাশি গেজেটভুক্ত শহীদদের নাম লেখা থাকবে। শহীদ পরিবারগুলো এখানে তাদের হারানো প্রিয়জনের নামগুলো খুঁজে পাবে এবং জনগণ তাতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে। ল্যান্ডস্কেপ পরিকল্পনায় উদ্যানে সব শহীদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে একটি করে বৃক্ষ রোপণ করা হবে। ফলকগুলোর পাশে এমনভাবে কৃষ্ণচূড়া বা বৃহদাকার ফুল গাছ রোপণের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে প্রাকৃতিকভাবে ফলগুলোতে প্রতিটি ঋতুতে ফুল বিছিয়ে থাকে।

এমএমএ/কেএসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।